বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫ ।। ১৬ বৈশাখ ১৪৩২ ।। ২ জিলকদ ১৪৪৬

শিরোনাম :
দেশে ফিরছেন খালেদা জিয়া, প্রস্তুত করা হচ্ছে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স শিক্ষার্থীদের সভা-সমাবেশ ও মিছিলে অংশগ্রহণ বন্ধের নির্দেশ নারী নীতিমালা নিয়ে জাতীয় সেমিনারে শীর্ষ আলেম-রাজনীতিকরা ‘মানবিক করিডোর’ প্রতিষ্ঠার আগে জাতীয় ঐকমত্য তৈরি করতে হবে সুখী ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ দেখতে চায় বিএনপি : মির্জা ফখরুল ইসলামিক ফাউন্ডেশনের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি স্থগিত প্রতিহিংসা-প্রতিশোধ শান্তি বয়ে আনতে পারে না: আমীরে জামায়াত শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানে শাসন সংকট, মনোভাবের বিপর্যয় এবং সতর্কতার আহ্বান নিবরাস ইসলামিক রিসার্চ ফাউন্ডেশনে শিক্ষক নিয়োগ মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনতে পুলিশের প্রতি প্রধান উপদেষ্টার আহ্বান

সুস্বাদু ফল আখরোট

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

*
akhrotএকটি বাণী চিরন্তন ও আখরোট
‘অন্যের ক্ষতিসাধনের ইচ্ছে করলে নিজের ক্ষতিই হয় বটে৷ যেমন আখরোট দেয়ালে মারলে দেয়ালের গায়ে নয়, নিজের গায়েই লাগে৷' কথাটি ফার্সি কবি আল্লামা শেখ সাদি রহ. রচিত ‘গুলিস্তা'র একটি কবিতাংশ৷
কবিতায় ‘আখরোট'-এর উপমা দিয়েছেন কবি৷ কিন্তু সেই ‘আখরোট'টা কী? খায় না মাথায় দেয়? জানতাম না কোনোদিন৷ শৈশব-কৌশোরে আরও বেশ কয়েকটি কিতাবে শব্দটির উদাহরণ পড়েছি৷ অজানা, অজ্ঞতায়ই রয়ে গেছে শব্দটির বিশ্লেষণভূমি৷
‘হুজুর, আখরোট কি?'
   ‘একটি ফল৷'
‘দেখতে কেমন?'
‘নিমের মতোন৷'
‘আর খেতে?'
‘ওরকমটাই হবে হয়তো৷'
শব্দটি নিয়ে কৌশোরে আমার এক প্রিয় উস্তাদের সঙ্গে এই ছিলো আমার বাচ্চাসূলভ প্রশ্নঝুরি৷
ছোটবেলা থেকেই নিমফলকে খুব ভয় পাই আমি৷ আমার স্কুলবেলার এক পড়শিবোন নিমফল দিয়ে ভাত মেখে খেতো৷ ওকে বলতাম, ‘নিমের মতোন তুইও তিতো হয়ে যাচ্ছিস দিনদিন৷ তোর সঙ্গে আর মিশবো না৷' দশহাত দূরে থাকতাম তাই ওর থেকে৷
‘আখরোট' যদি নিমের মতো হয় দেখতে, আর নিমের মতোই হয় খেতে, তাহলে এই অপছন্দের ফলটি নিয়ে আমার আর মাথাব্যথার দরকার নেই৷ ওই পড়শিবোনের মতোন দশহাত দূরে দূরেই থাকতাম অজ্ঞভুমিতে৷
.
দেওবন্দি দাওয়াত ও আখরোট
‘তোমহারে সাথ মোলাকাত কারনে কা বড়া শৌক হে৷' গতকাল এক আফগানি বন্ধু ফোন করে দাওয়াত দিলো ওর কামরায়৷ ‘পাঁচ মিনিটকে আন্দার আঁ রাহা হুঁঁ ইয়ার!' গ্রহণ করলাম নেমন্তন্ন৷
দুদিন হলো ঘর থেকে এসেছে আফগানি৷ সঙ্গে নিয়ে এসেছে অামার অচেনা শহর কাবুলের বাহারি খাবার৷ একেক করে পেশ করলো আমার সামনে৷ আমিও ‘না' করলাম না৷ কৌতূহলবশত প্রতিটার নাম জানতে চাইলাম৷ বেচারাও সব বলতে লাগলো৷ বাদামেরই আট কিসিমের নাম বাতলালো৷ বলতে বলতে হঠাৎ যখন ‘আখরোট'-এর নাম নিলো, তখন মনে মনে সেই শৈশবের ঘৃণা মাথা চারা দিয়ে ওঠলো৷ সেই পড়শিবোনটির তিতো চেহারাটি চোখের তারায় হাজির হলো৷
‘নেহি, এ অলা নেহি খা সাকতা ম্যায়৷' আখরোট খেতে সোজা অস্বীকৃতি জানালাম আমি৷ ও অনেক জোরাজুরি করলো তবু৷ শেষমেষ হাতে নিলাম ঘৃণাভরে৷ কিন্তু একী, ‘আখরোট'তো নিমের মতো দেখতে নয়! বিস্ময়ে চোখ আমার ছানাবড়া৷ হাতের তারায় রেখে ভাঙলাম৷ ভেতরের শাশটি মুখে দিয়ে চিবোতে লাগলাম৷ বাহ, দারুণ তো! দেখতেও মনকাড়া, এর স্বাদও ভিন্ন৷ তাহলে এতোদিন যাবত এর প্রতিই কী আমার ঘৃণা ছিলো!?
.
আখরোটের আকৃতি ও গুণাগুণ
‘আখরোট' ফলটি বাদাম জাতীয়৷ কিন্তু সাইজটা বাদামের আট ডবল৷ দেখতে নারকেলের ছোটভাই৷ শুকনো ঝুনঝুনে৷ কিন্তু হাতে নিয়ে বাজাতে চাইলে বাজে না৷ ওজনে অনেক হালকা৷ দেয়ালে মারলে উল্টো নিজের প্রতি এন্ট্রি মারে৷ দুহাতের তারায় রেখে চাপ দিতে হয়৷ অমনিই খুলে যায়৷ ভেতরের শাশটি কামরাঙার মতো দেখতে৷ কিন্তু রঙটা একদম দুধেল সাদা৷ ওপরে গায়ের রঙ শুকনো, ঝুনঝুনে নারকেলের মতোন৷ স্বাদে তিলের মতো৷ ঘ্রাণে সর্ষের মতো৷
মস্তিস্ক ঠাণ্ডা রাখতে ও সতেজ করতে ভারী উস্তাদ আজকের এই প্রিয় ফলটি৷ ভারত, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, বাহরাইন, সৌদি আরব, সাউথ আফ্রিকাসহ বেশ কয়েকটি দেশে উৎপন্ন হয় এটি৷ ভারতে প্রতি কেজির দাম দেড়শো রুপি৷
 .
লেখক : শিক্ষার্থী, দারুল উলুম দেওবন্দ, ভারত


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ