বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫ ।। ১৬ বৈশাখ ১৪৩২ ।। ২ জিলকদ ১৪৪৬

শিরোনাম :
দেশে ফিরছেন খালেদা জিয়া, প্রস্তুত করা হচ্ছে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স শিক্ষার্থীদের সভা-সমাবেশ ও মিছিলে অংশগ্রহণ বন্ধের নির্দেশ নারী নীতিমালা নিয়ে জাতীয় সেমিনারে শীর্ষ আলেম-রাজনীতিকরা ‘মানবিক করিডোর’ প্রতিষ্ঠার আগে জাতীয় ঐকমত্য তৈরি করতে হবে সুখী ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ দেখতে চায় বিএনপি : মির্জা ফখরুল ইসলামিক ফাউন্ডেশনের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি স্থগিত প্রতিহিংসা-প্রতিশোধ শান্তি বয়ে আনতে পারে না: আমীরে জামায়াত শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানে শাসন সংকট, মনোভাবের বিপর্যয় এবং সতর্কতার আহ্বান নিবরাস ইসলামিক রিসার্চ ফাউন্ডেশনে শিক্ষক নিয়োগ মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনতে পুলিশের প্রতি প্রধান উপদেষ্টার আহ্বান

নারী শিক্ষাদানে আফগান সাহসিনী

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: গত বছরের আগস্টে নতুন করে আফগানিস্তান দখলে নিয়েছে তালেবান। আতঙ্কের ছায়ায় যখন পুরো দেশ ঢাকা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর কথা ভুলতে চলেছে মানুষ, নারীদের উপর জারি করা হচ্ছে বিভিন্ন বাধা নিষেধ, তখন এই দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় গত ১০ বছর ধরে চলছে একটি স্কুল।

সেখানকার পড়ুয়াদের অধিকাংশই মেয়ে। আল জাজিরার (২০ ফেব্রুয়ারি) করা একটি প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য উঠে আসে।

এই স্কুল চালান ফ্রেশতা নামের বাইশ বছর বয়সী এক তরুণী। মাত্র ১২ বছর বয়সেই ফ্রেশতা এই স্কুল খুলে ফেলেছিলেন তিনি। ফ্রেশতাই এই এলাকার একমাত্র স্নাতক।

কয়েক মাস আগেই বামিয়ান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করে বেরিয়েছিলেন। আফগানিস্তানের অন্যান্য প্রদেশের মেয়েদের মতোই পাহাড় ঘেরা এই প্রদেশেও মেয়েদের শিক্ষার হার ২৫ শতাংশের মতো।

যেটুকু শিক্ষার আলো পৌঁছেছে, তার কৃতিত্ব বেশীর ভাগই যায় ফ্রেশতার ঝুলিতে। কোন বেতন ছাড়াই ২ ঘণ্টা ধরে প্রায় ৫০টি পরিবারের সন্তানকে পরম যত্নে পড়ান ফ্রেশতা। ৪ থেকে ১৭ নানা বয়সের পড়ুয়ারা আসে পড়তে।

গত আগস্টে সেই দেশের সাধারণ মানুষদের উপরে চলছে তালেবানি শাসন। তালেবানি রক্তচক্ষু এড়িয়ে এই অবস্থাতেও স্কুল চালিয়ে যাচ্ছেন ফ্রেশতা।

ফ্রেশতা জানান, আমার স্কুল ছিল অত্যন্ত চিত্তাকর্ষক ও রঙিন। কিন্তু তালেবান যখন বামিয়ানে ঢুকে পড়ল আমার বন্ধুরা আমাকে সাবধান করে দিয়েছিল।

আমি সব পোস্টার ও আঁকা ছবি যা টাঙানো ছিল সব খুলে ফেলি। আসলে সবাই ভয় পাচ্ছিল। একে তো আমি স্কুল চালাই। তার উপর মেয়েদের পড়াই। আমি সব কলম আর রং একটা ব্যাগে ভরে সামনের নদীতে ফেলে দিই।

সব মিলিয়ে তিনবার ফ্রেশতাকে তালেবানের মুখোমুখি হতে হয়েছে। আসলে তারা এসেছিলো তাদের এক প্রতিবেশীর খোঁজে, যে স্থানীয় পুলিশে কাজ করত। সেই পলাতক ব্যক্তির খোঁজে বারবার এখানে এলেও তালেবানকে ফ্রেশতা ঘুর্ণাক্ষরেও টের পেতে দেননি এখানে কোনও স্কুল রয়েছে।

স্কুল থেকে কোনও রোজগার নেই ফ্রেশতার। যেটুকু সামান্য অনুদান আসে, তা স্কুলের রক্ষণাবেক্ষণের কাজে লাগান তিনি। নিজের স্বপ্নের স্কুলকে আগামী দিনেও একই ভাবে চালিয়ে যেতে চান এই আফগান তরুণী।

এই মুহূর্তে খাদ্য সংকটে বিপন্ন আফগানিস্তান। পেটে খিদে নিয়েও ফ্রেশতার পড়ুয়ারা আসে রোজ, পাঠ নেয় জীবনের। আঁধারে ঢাকা আফগানিস্তানে আলো আনার স্বপ্ন এভাবেই বয়ে চলেছেন ফ্রেশতারা। আর প্রমাণ করে দিচ্ছেন, প্রতিকূলতা যতই থাক, শিরদাঁড়া সোজা করে স্বপ্নপূরণের লড়াই চালানো কখনওই অসম্ভব নয়।

-এটি


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ