বুধবার, ০৭ মে ২০২৫ ।। ২৪ বৈশাখ ১৪৩২ ।। ৯ জিলকদ ১৪৪৬

শিরোনাম :
সামরিক হামলার নিন্দা জানিয়ে শান্তিপূর্ণ সমাধানের আহ্বান তারেক রহমানের ভারতকে যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা বন্ধ করতে হবে: ইসলামী মুক্তিযোদ্ধা পরিষদ হজযাত্রীদের সবধরনের সুবিধা দেওয়ার নির্দেশ সৌদি যুবরাজের নারী কমিশন ইসলামিক চিন্তাবিদদের সমন্বয়ে পুনর্গঠন করতে হবে ইসলামী ঐক্যজোটের সঙ্গে সংলাপে বসছে ইসলামী আন্দোলন আইসক্রিম খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য কতটা ভালো? অধিকাংশ সংস্কার প্রস্তাবে ইসলামী আন্দোলনের ঐকমত্য, কয়েকটিতে দ্বিমত কোনো সন্ত্রাসী যেন দেশে প্রবেশ করতে না পারে: আইজিপি পল্টনে কুরআন শিক্ষা বোর্ডের কার্যকরী সদর দফতর উদ্বোধন পরিবারের ১০ সদস্য হারিয়ে বললেন- ‘আমিও যদি সুখী কাফেলায় শরিক হতাম!’

নেই চিরচেনা যানজট, ফাঁকা হয়ে গেলো ঢাকা

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: ২ বছর পর পুরনো রূপে ফিরলো ঈদ। গত ৪ ঈদের মতো এবার নেই লকডাউন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কঠোর নির্দেশ। এমনকি মৃত্যুর মিছিলও নেই। গত দুই বছর যারা পরিবারের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে পারেননি, তারাও এবার ছুটেছেন নাড়ির টানে বাড়ির পানে। সাপ্তাহিক ছুটি, মে দিবস ও ঈদ মিলিয়ে বিশাল ছুটিতে ঢাকা ছেড়েছেন কয়েক লাখ মানুষ। এই কারণে ঈদের ঠিক আগমুহূর্তে ফাঁকা হয়ে গেলো রাজধানী ঢাকা।

ঈদের আগে বৃহস্পতিবার (২৮ এপ্রিল) ছিল সরকারি চাকরিজীবীদের শেষ কর্মদিবস। এদিন থেকেই মূলত ফাঁকা হতে শুরু করে রাজধানী। গত চার দিনে বিপুলসংখ্যক মানুষ গ্রামের বাড়িতে ঈদ করতে ঢাকা ছেড়েছেন। ঈদের ছুটি, তীব্র গরম সব মিলিয়ে রোববার (১ মে) রাজধানীর প্রধান সড়কগুলো ছিল একেবারে ফাঁকা। করোনার কঠোর বিধি-নিষেধের সময় সবশেষ এমন ফাঁকা রাস্তা দেখেছে নগরবাসী।

রোববার রাজধানীর প্রতিটি রাস্তাই ছিল ফাঁকা। এদিন কল্যাণপুর থেকে কাওরানবাজার আসতে সময় লেগেছে ৭ থেকে ৮ মিনিট। সাধারণত এই দূরত্ব পাড়ি দিতে সকালে সময় লাগে ২ থেকে আড়াই ঘণ্টা। আর দিনের অন্যান্য সময় লাগে প্রায় ১ ঘণ্টা। আবার কাওরানবাজার থেকে একই দিন মতিঝিল যেতে যময় লেগেছে ৮ থেকে ৯ মিনিট। সাধারণত এই দূরত্ব পাড়ি দিতে সময় লাগে প্রায় দেড় থেকে দুই ঘণ্টার মতো।

রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে কমেছে যানবাহনের চাপ। মিরপুর, কাজীপাড়া, বিজয় স্মরণী, ফার্মগেট, কাওরানবাজার, শ্যামলী, আসাদগেট, ধানমন্ডি, এমনকি অফিসপাড়া মতিঝিল আজ ছিল ফাঁকা। প্রাইভেটকার আর মোটরসাইকেল রাজত্ব করছে পুরো রাস্তায়। এর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে আছে লোকাল বাস। সিএনজিচালিত অটোরিকশা আর রিকশার সংখ্যা কমে গেছে রাজধানীজুড়ে।

কল্যাণপুর থেকে কাওরানবাজারে যাওয়া শ্যামল জানান, সাধারণত কল্যাণপুর থেকে কাওরানবাজার যেতে ১ ঘণ্টার মতো লেগে যায়। আজ রাইড শেয়ারিং সার্ভিসের মাধ্যমে মোটরসাইকেলে এই পথ এসেছি মাত্র ১০ মিনিটে।

রাইড শেয়ারিং সার্ভিসের অন্তর্ভুক্ত মোটরসাইকেলচালক ইমন জানান, গত কয়েকদিন ধরেই ধীরে ধীরে যানবাহনের সংখ্যা কমছে। আজ একেবারে ফাঁকা হয়ে গেছে পুরো ঢাকা। সবগুলো রাস্তাই এখন খালি। রাস্তায় মানুষও কম।

ধারণা করা হচ্ছিল, এবার ঈদের ছুটিতে ব্যাপকসংখ্যক মানুষ বাড়িমুখো হবে। আর সে জন্য সড়ক-মহাসড়কে যানজটে পড়তে হবে তাদের। হ্যাঁ, নগর খালি করে বাড়ি অভিমুখে ছুটছে মানুষ। তবে তাদের বড় ধরনের যানজটের ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে না। কারণ হিসেবে পরিবহন-সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এবার ২৬ রমজানেই শুরু হয়ে গেছে ঈদযাত্রা। শুক্রবার ছিল দ্বিতীয় দিন। ঈদের বাকি এখনও দুই থেকে তিন দিন। দীর্ঘ ছুটির কারণে মানুষ আগেভাগেই গ্রামমুখী হওয়ার সুযোগ পেয়েছে। আবার অতীতে ঈদযাত্রায় যানজটের তিক্ত অভিজ্ঞতা থেকে অনেকেই পরিবারের সদস্যদের আগেভাগে গ্রামের বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছেন। ফলে রাজধানীর বাস টার্মিনালগুলোয় যাত্রীর উপচেপড়া ভিড় নেই। ফলে সড়ক পরিবহনের সঙ্গে যাত্রীর চাপ পড়েনি।

তবে ঈদের ঠিক আগের এই মুহূর্তে ভিড় বেড়েছে রাজধানীর মার্কেট ও বিপনী-বিতানগুলোতে। ঈদে যারা ঢাকাতেই রয়েছেন, তারা সেরে ফেলছেন শেষ সময়ের কেনাকাটা। রাজধানীর নিউমার্কেট, পান্থপথ, মিরপুর ১, মিরপুর ১১-এ তাই কিছুটা ভিড় লক্ষ করা গেছে।

ঈদে যারা গ্রামের বাড়ি যাবেন বা গেছেন, তারা কেনাকাটা সেরেছেন সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবার ও শনিবার। এই সময়টাতে দুপুর গড়িয়ে শেষ বিকেলে মানুষের ঢল নেমেছে ঈদ মার্কেটে। শিশু থেকে শুরু করে তরুণ-তরুণী, যুবক-যুবতী ও বয়স্ক; সবাই এসেছেন শপিং করতে। বেচাকেনা চলেছে গভীর রাত পর্যন্ত। আর এখন চলছে শেষ মুহূর্তে কেনাকাটা। আতর, টুপি ও জায়নামাজের দোকানে ভিড় করছেন ক্রেতারা।

নতুন পাঞ্জাবির সঙ্গে মিল রেখে কেউ খুঁজছেন জরির কাজ করা টুপি। ঝিকিমিকি পাথরখচিত টুপির খোঁজ করছেন অনেকেই। কেউবা চান বাহারি রঙের সুতা দিয়ে হাতে বোনা টুপি। বায়তুল মোকাররম এলাকায় ফুটপাথ ও মার্কেট ঘুরে দেখা গেছে, দেশি টুপি ছাড়াও বিক্রি হচ্ছে তুর্কি, পাকিস্তানি, চীনা ও ভারতের গুজরাটি টুপি।আবার ঘ্রাণ শুঁকে অনেকেই খুঁজে নিচ্ছেন পছন্দের আতর। বিক্রেতারাও ঈদের আগমুহূর্তে ক্রেতাদের হাতে পছন্দের টুপি, আতর, জায়নামাজ কিংবা তসবিহ তুলে দিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। বেচাবিক্রি ভাল হওয়ায় খুশি ব্যবসায়ীরা।

-কেএল


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ