আবদুল্লাহ ফিরোজী
মোজাহেদে আজম আল্লামা শামছুল হক ফরিদপুরী, ছদর সাহেব হুজুর রহ. ছিলেন একজন সত্যিকারের মুজাদ্দিদ ও আদর্শ সমাজ ও জাতি গঠনের নেপথ্য কারিগর। ঔপনিবেশিক বাংলার বিপর্যস্ত আত্মবিস্মৃত ও অসচেতন মুসলিম উম্মাহকে তিনি জাগরণী বাণী শুনিয়েছিলেন। একদিকে তিনি ইসলামী শিক্ষার ব্যাপক প্রসারের মধ্য দিয়ে এই অঞ্চলের মুসলমানের ঘুমন্ত চেতনাকে জাগিয়ে তুলেছেন অন্যদিকে ধর্মতাত্ত্বিক ও সাংস্কৃতিক সংস্কারের মাধ্যমে সজীব করে তুলেছিলেন মুসলমানের ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক চেতনাকে। সত্যিকারর্থেই তিনি ছিলেন ইসলামী রেনেসাঁর অগ্রদূত।
রাজধানীর তেজগাঁও আল ফালাহ জামে মসজিদ কমপ্লেক্স মিলনায়তনে আজ ১লা মে বাদ যোহর "দেশ ও জাতির বর্তমান পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে খাদেমুল ইসলাম জামায়াত বাংলাদেশ-এর করণীয়" শীর্ষক আলোচনা সভায় দেশের শীর্ষ আলেমগণ এসব কথা বলেন।
জামিয়া নূরিয়া কামরাঙ্গীরচরের শায়খুল হাদীস প্রবীণ আলেমেদ্বীন মাওলানা আজিমুদ্দিনের সভাপতিত্বে ও ছদর সাহেবের নাতী বনানী চেয়ারম্যানবাড়ী মসজিদের খতীব মুফতি মাসুম আহমাদের সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন খাদেমুল ইসলাম ছাত্র ও যুব পরিষদের সাবেক সভাপতি মাওলানা মো. নাজমুল হক।
আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন জামিয়াতুল উলূমিল ইসলামিয়া মোহাম্মদপুরের মুহতামিম মুফতি মাহমুদুল হাসান, জামিয়া শরইয়্যাহ মালিবাগের প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা ইয়াহইয়া জাহাঙ্গীর, আল ফালাহ জামে মসজিদ কমপ্লেক্সের খতীব মাওলানা মানসুরুল হক, আব্দুল মোনেম গ্রুপের ধর্ম উপদেষ্টা মুফতি মোতাহর উদ্দিন, ছদর সাহেবের দৌহিত্র মুফতি মোরতাজা হাসান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদের ইমাম মাওলানা আব্দুল কাদের নূরী, জামিয়া রাহমানিয়ার সিনিয়র মুহাদ্দিস মাওলানা মাসউদুর রহমান, মসজিদ আল মাগফিরাহ উত্তরার খতীব মুফতি ওয়াহিদুল আলম, জামিয়া নূরিয়া টঙ্গীর মুহাদ্দিস মাওলানা রিয়াদুল ইসলাম মুনীর, জামিয়া মদীনাতুল উলূম আমীনবাজারের নাজেমে তা'লীমাত মুফতি আব্দুর রহীম কাসেমী, পশ্চিম রাজাবাজার জামে মসজিদের খতীব মাওলানা গোলাম মোস্তফা, জামিয়া রাহমানিয়া আজিজিয়ার মুহাদ্দিস মুফতি নুরুজ্জামান, মুফতি সাঈদ কাদির, মুফতি আল মামুন নূর, মুফতি সফিউল্লাহ বেলালী, মুফতি আবদুল্লাহ ফিরোজী, মাওলানা শফিকুল ইসলাম, মাওলানা ওবায়দুর রহমান, মাওলানা আবদুল্লাহ ইদ্রিস, মুফতি মাসউদুর রহমান, মাওলানা ফোরকানুল ইসলাম, মাওলানা অহিদুজ্জামান, মাওলানা হাফিজুর রহমান, মাওলানা মাহমুদুল হাসান শামীম, মাওলানা মাসীহুল্লাহ, মাওলানা সাখাওয়াতুল্লাহ প্রমুখ।
আলোচনা সভায় বক্তারা আরও বলেন, খাদেমুল ইসলাম জামায়াত ছদর সাহেবের হাতেগড়া প্রাচীন অরাজনৈতিক দ্বীনি সংগঠন। এই সংগঠন বাঙালি মুসলমানের শিক্ষা সংস্কৃতি পুনর্বিন্যাসের সূতিকাগার। স্রষ্টার ইবাদাত সৃষ্টির খেদমত শ্লোগানকে ধারণ করে, অনৈসলামিক সমাজ ব্যবস্থা বিলুপ্ত করে ইসলামী সমাজ ও জাতি গঠনের অভিযানকে এগিয়ে নিতে এই সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন ছদর সাহেব।
বক্তারা বলেন, দুঃখজনক হলেও সত্য, ২০১৩ পরবর্তী সময়ে দায়িত্বশীল ব্যক্তিবিশেষের রাজনৈতিক অভিলাষে খাদেমুল ইসলাম জামায়াত ছদর সাহেবের দেখানো পথ থেকে বিচ্যুত ও নির্জীব হয়ে পড়ে। ছদর সাহেবের রেখে যাওয়া নাম পরিবর্তনের মাধ্যমে তারা এই সংগঠন থেকে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। জুলাই বিপ্লবের পর নতুন এই বাংলাদেশে খাদেমুল ইসলামের কার্যক্রম নব উদ্যমে শুরু করা সময়ের দাবি।
বর্ণাঢ্য এই আলোচনা সভায় ছদর সাহেবের দেখানো পথে খাদেমুল ইসলাম জামায়াতের কার্যক্রম পরিচালিত করতে প্রবীণ ত্যাগী দায়িত্বশীলদের পরামর্শ সাপেক্ষে তিন সদস্য বিশিষ্ট উপদেষ্টা পরিষদ ও সাত সদস্য বিশিষ্ট শুরা পরিষদ গঠন করা হয়। উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যরা হলেন শায়খুল হাদীস মাওলানা শেখ আজিমুদ্দিন, মাওলানা ইয়াহইয়া জাহাঙ্গীর ও মুফতি মাহমুদুল হাসান। শুরা পরিষদের সদস্য যথাক্রমে মুফতি নেয়ামাতুল্লাহ, মাওলানা মানসুরুল হক, মাওলানা মোতাহার উদ্দিন, মুফতি মাসউদুর রহমান, মুফতি মাসুম আহমাদ, মুফতি আব্দুর রহিম কাসেমী ও মাওলানা মো. নাজমুল হক।
এমএইচ/