শনিবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ।। ৫ আশ্বিন ১৪৩২ ।। ২৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

শিরোনাম :
মসজিদে নববীতে এক দিনে বিতরণ ১৮৩ টন জমজমের পানি কলকাতায় বাংলাদেশি ইলিশের দাম চড়া, আগ্রহ হারাচ্ছে ক্রেতারা মাদরাসাতুল কুরআনে ‍দুই দিনব্যাপী সিরাত প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত আগামী সরকার জুলাই আত্মত্যাগকে ধারণ করবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা  ভারত থেকে দেশবিরোধী অপকৌশলে লিপ্ত শেখ হাসিনা: এ টি এম আজহার ৩৭ বছরের ইমামকে রাজকীয় বিদায় ইমাম-খতিবদের হয়রানি বন্ধে হেফাজতের ‘বিশেষ সেল’ খোলার আহ্বান এদেশের সব ভালো কাজেই বিএনপির অবদান রয়েছে: মির্জা ফখরুল সংকট এড়িয়ে ফ্যাসিবাদবিরোধী ঐক্য বজায় রাখার আহ্বান সালাহউদ্দিনের জামায়াতের আমির হামযার বক্তব্যের কড়া প্রতিবাদ মুহসীন হল শিক্ষার্থীদের

ইরান যেভাবে তছনছ করল ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষা


নিউজ ডেস্ক

নিউজ ডেস্ক
শেয়ার
ছবি: সংগৃহীত

ইসরায়েলের বহুস্তরবিশিষ্ট আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে হোঁচট খাইয়ে বিস্ময়ের জন্ম দিয়েছে ইরানের পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা। এক রাতের আঘাতেই প্রশ্নের মুখে পড়েছে ইসরায়েলের দীর্ঘদিনের পরীক্ষিত প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি, যা এতদিন পর্যন্ত একপ্রকার দুর্ভেদ্য বলেই বিবেচিত ছিল।

আধুনিক প্রযুক্তিতে গড়া আয়রন ডোম, ডেভিড’স স্লিং, অ্যারো-২ ও ৩ এবং বারাক-৮—এই প্রতিরক্ষাব্যবস্থা একসঙ্গে কাজ করে গড়ে তোলে একটি শক্তিশালী নিরাপত্তা বলয়। আয়রন ডোম স্বল্পপাল্লার রকেট প্রতিহত করতে ব্যবহৃত হয়, ডেভিড’স স্লিং ও অ্যারো সিরিজ ব্যালিস্টিক এবং মাঝারি পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ঠেকায়, আর বারাক-৮ মূলত আকাশ থেকে আসা হুমকির মোকাবিলায় ব্যবহৃত হয়।

কিন্তু ইরান যেভাবে এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভেদ করেছে, তা কেবল প্রযুক্তিগত উৎকর্ষ নয়—সঙ্গে ছিল সুপরিকল্পিত কৌশলগত ধাক্কাও। একযোগে বিপুল সংখ্যক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র, ক্রুজ মিসাইল এবং ড্রোন নিক্ষেপ করে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে সংখ্যাগত চাপে ফেলে দেয় তারা। এতে ইন্টারসেপ্টর ক্ষেপণাস্ত্রের মজুত দ্রুত কমে আসে।

এছাড়া ইরান ব্যবহার করে তাদের উন্নততর হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র ‘ফাত্তাহ-২’, যা শব্দের চেয়ে পাঁচগুণ দ্রুত এবং অপ্রত্যাশিত গতিপথে চলায় প্রচলিত রাডার সিস্টেমের বাইরে চলে যায়। এর সঙ্গে যুক্ত ছিল নিচু দিয়ে উড়ে আসা ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র, যেগুলো রাডারকে ফাঁকি দিয়ে নির্ভুলভাবে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ইরান ভুয়া লক্ষ্যবস্তু পাঠিয়ে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষাব্যবস্থাকে বিভ্রান্ত করেছে। এতে প্রকৃত হামলা তুলনামূলক কম প্রতিরোধের মুখে পড়েছে। এমনকি কিছু ক্ষেপণাস্ত্রে ছিল রাডার ধ্বংসকারী প্রযুক্তিও।

হামলার পর ইসরায়েল দাবি করেছে, তারা আকাশপথে নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখতে পেরেছে এবং অধিকাংশ হামলা প্রতিহত করা সম্ভব হয়েছে। তবে তারা এও স্বীকার করেছে—কোনও প্রতিরক্ষাব্যবস্থাই শতভাগ সুরক্ষা দিতে পারে না। দীর্ঘমেয়াদি সংঘাত শুরু হলে দুই পক্ষই অস্ত্র ও প্রযুক্তির ঘাটতির মুখে পড়বে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি সহযোগিতা ছাড়া ইসরায়েলের পক্ষে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা কঠিন হয়ে উঠতে পারে।

সামরিক বিশ্লেষকদের মতে, এই হামলার মাধ্যমে ইরান কেবল ইসরায়েলকেই বার্তা দেয়নি, বরং গোটা বিশ্বকে দেখিয়েছে—প্রযুক্তির যতই দেয়াল থাক, কৌশলের সঠিক চাবি থাকলে তা খুলে ফেলা সম্ভব।

তথ্যসূত্র: আল জাজিরা

এসএকে/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ