দেশের প্রখ্যাত ইসলামি ব্যক্তিত্ব, সুবক্তা, লেখক ও আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শায়খ আহমাদুল্লাহ অভিভাবকদের উদ্দেশে বলেছেন, আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে ইসলামের সঠিক আদর্শে গড়ে তুলতে এবং সুন্দর সমাজ বিনির্মাণে শিশুদের শৈশব থেকেই মহানবীর জীবন ও চরিত্রের সঙ্গে পরিচয় করানো অপরিহার্য। তরুণ প্রজন্মে যত বেশি সিরাত চর্চা ছড়িয়ে দেওয়া যাবে, আগামী প্রজন্ম তত বেশি সুন্দর হয়ে ওঠবে।
৬ সেপ্টেম্বর (শনিবার) বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব হংকংয়ের আয়োজনে সেন্ট্রাল কাউলুন মসজিদ অ্যান্ড ইসলামিক সেন্টারে অনুষ্ঠিত ‘পবিত্র সিরাতুন্নবী সা.’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান আলোচকের বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব হংকংয়ের সভাপতি আশফাকুর রহমান ও বাংলাদেশ অ্যাম্বাসির কনস্যুলেট জেনারেল ড. শাহ মুহাম্মদ তানভীর মনসূর।
শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন, অনেক বাবা-মা সন্তানদের অতিরিক্ত ক্যারিয়ারিস্ট করে গড়ে তুলতে গিয়ে বস্তুবাদী জীবনধারায় এমনভাবে নিমজ্জিত করে ফেলে যে, তারা নিজেদের মূল্যবোধ ও আত্মপরিচয় থেকে বিচ্যুত হয়ে পড়ে। সন্তানের ভালো ক্যারিয়ার চিন্তার পাশাপাশি তাদের আত্মপরিচয় ও ইসলামি আইডেন্টিটি যেন টিকে থাকে, সে বিষয়ে বাবা-মাকে বিশেষভাবে যত্নবান হওয়ার আহ্বান জানান শায়খ আহমাদুল্লাহ।
হংকং প্রবাসী বাংলাদেশিদের উদ্দেশে শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন, দেশের প্রতি প্রবাসীদের অবদান অনস্বীকার্য। প্রবাসী হিসেবে নিজ দেশের ভাবমূর্তি ও একজন মুসলিম হিসেবে ইসলামের ভাবমূর্তি রক্ষা করা প্রত্যেক প্রবাসীর নৈতিক দায়িত্ব ও কর্তব্য।
প্রবাসীদের লক্ষ্য করে তিনি বিশেষভাবে বলেন, প্রবাস জীবনে অর্থ উপার্জনের পাশাপাশি যেন আমরা পরিবার ও সন্তানদের সঠিক তত্ত্বাবধানের ব্যাপারে অলসতা না করি। অনেক প্রবাসী শুধু অঢেল ধন-সম্পদ অর্জনের পেছনে পড়ে থাকে, অন্যদিকে নিজের পরিবার ও সন্তান বিপদগামী হয়ে পড়ে কিন্তু খোঁজ রাখে না। ফলশ্রুতিতে একটা সময় আফসোসের অন্ত থাকে না।
এছাড়াও প্রবাসীদের পারস্পরিক সৌহার্দ্য ও ভ্রাতৃত্ব বজায় রাখা, হালাল উপার্জন ও সৎভাবে জীবনযাপন করারও পরামর্শ দেন তিনি। অনুষ্ঠানটি যৌথভাবে পরিচালনা করেছেন মুফতি ইফতিখার হুসেন ও মাওলা মাসউদ। ছয় শতাধিক প্রবাসী নারী-পুরুষ এ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন। আয়োজকদের ভাষ্যমতে এপর্যন্ত তাদের আয়োজিত অনুষ্ঠানগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি মানুষের উপস্থিতি ছিল এই অনুষ্ঠানে।
হংকং-এর তুমচং ও শাম শুই পো-তে আরও দুটি প্রোগ্রামে বক্তব্য দেন শায়খ আহমাদুল্লাহ। হংকংয়ের প্রধান খতিব মুফতি মুহাম্মাদ আরশাদ ও দি ইসলামিক কাউন্সিল অব ইউরোপের ফতোয়া বোর্ডের চেয়ারম্যান শায়খ ড. হাইথাম আল-হাদ্দাদের সঙ্গে শায়খ আহমাদুল্লাহর বিশেষ মতবিনিময় সভাও অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে একান্তে তাঁরা নিজেদের পারস্পরিক চিন্তা-চেতনা ও দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে দীর্ঘক্ষণ আলাপ করেন।
এমএইচ/