মঙ্গলবার, ০৪ নভেম্বর ২০২৫ ।। ১৯ কার্তিক ১৪৩২ ।। ১৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭


হজের কোন প্যাকেজে কী সুবিধা থাকছে

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আগামী বছরের পবিত্র হজ উপলক্ষে সরকারিভাবে তিনটি প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছে। ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে প্যাকেজগুলো ঘোষণা করেন। তিনি সংবাদ সম্মেলনে প্যাকেজগুলোর নানা দিক তুলে ধরেন। পাঠকদের জন্য হজের তিনটি প্যাকেজের বিস্তারিত তুলে ধরা হলো-

হজ প্যাকেজ-১ (বিশেষ)
এই প্যাকেজের হজযাত্রীদের মক্কায় হারাম শরীফের বহিরাঙ্গন থেকে সর্বোচ্চ ৭০০ মিটারের মধ্যে এবং মদিনায় মারকাজিয়া বা সেন্ট্রাল এরিয়ায় হাজীদের আবাসন সুবিধা দেওয়া হবে। অ্যাটাচড বাথরুমসহ একরুমে সর্বোচ্চ পাঁচজনের আবাসনের ব্যবস্থা থাকবে। মিনায় জোন-২ এ তাঁবুর অবস্থান হবে এবং মিনা-আরাফায় ডি+ ক্যাটাগরির সার্ভিসসহ মোয়াল্লেম কর্তৃক খাবার সরবরাহ করা হবে। এ প্যাকেজের খরচ ধরা হয়েছে ৬ লাখ ৯০ হাজার ৫৯৭ টাকা।

হজ প্যাকেজ-২
এই প্যাকেজের হজযাত্রীদের মক্কায় হারাম শরীফের বহিরাঙ্গন থেকে ১.২ কিলোমিটার থেকে ১.৮ কিলোমিটারের মধ্যে এবং মদিনায় মারকাজিয়া বা সেন্ট্রাল এরিয়ায় হাজীদের আবাসন সুবিধা দেওয়া হবে। এটাচড বাথরুমসহ একরুমে সর্বোচ্চ ছয়জনের আবাসনের ব্যবস্থা থাকবে। মিনায় জোন-২ এ তাঁবুর অবস্থান হবে এবং মিনা-আরাফায় ডি ক্যাটাগরির সার্ভিসসহ মোয়াল্লেম কর্তৃক খাবার সরবরাহ করা হবে। এ প্যাকেজের খরচ ধরা হয়েছে ৫ লাখ ৫৮ হাজার ৮৮১ টাকা।

হজ প্যাকেজ-১ ও হজ প্যাকেজ-২ এ নির্ধারিত অর্থ পরিশোধ সাপেক্ষে মক্কা ও মদিনায় ২ ও ৩ সিটের রুম আপগ্রেডেশন ও শর্ট প্যাকেজ সুবিধা গ্রহণ করা যাবে। হজযাত্রীদের সৌদি আরব অবস্থানকাল হবে সাধারণত ৩৫-৪৭ দিন। তবে শর্ট প্যাকেজে সৌদি আরবে অবস্থানকাল হবে ২২-৩০ দিন।

হজ প্যাকেজ-৩
এটি সাশ্রয়ী হজ প্যাকেজ। এই প্যাকেজের হজযাত্রীদের আবাসন হবে মক্কায় আজিজিয়া এলাকায় এবং মদিনায় মারকাজিয়া এলাকার বাইরে। একরুমে সর্বোচ্চ ছয়জনের আবাসনের ব্যবস্থা থাকবে। মিনায় জোন-৫ এ তাঁবুর অবস্থান হবে এবং মিনা-আরাফায় ডি ক্যাটাগরির সার্ভিসসহ মোয়াল্লেম কর্তৃক খাবার সরবরাহ করা হবে। হারাম শরীফে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের জন্য যাতায়াতের নিমিত্ত এসি বাসের বন্দোবস্ত থাকবে। এ প্যাকেজের খরচ ধরা হয়েছে ৪ লাখ ৬৭ হাজার ১৬৭ টাকা।

সংবাদ সম্মেলনে আরো জানানো হয়, এই প্যাকেজ সরকারি মাধ্যমে হজযাত্রীদের জন্য নতুন সংযোজন। এর আগে কখনো সরকারি মাধ্যমের হাজীদের আজিজিয়া এলাকায় আবাসনের ব্যবস্থা করা হয়নি। তবে সর্বোচ্চ হজযাত্রী তিনটি দেশ ইন্দোনেশিয়া, পাকিস্তান ও মালয়েশিয়ার হজযাত্রীদের বহু বছর ধরে আজিজিয়া এলাকাতেই রাখছে । এছাড়া, আমাদের দেশের হজযাত্রীদের দীর্ঘবছর যাবৎ যে এলাকায় রাখা হতো এই এলাকার হোটেল বা বাড়িগুলো সৌদি সরকার ভেঙে ফেলেছে। এ কারণে আগামীতে বাংলাদেশের হজযাত্রীদের আজিজিয়া এলাকায়ই রাখতে হবে।

হজ এজেন্সিসমূহের জন্য বেসরকারি মাধ্যমের সাধারণ হজ প্যাকেজ শিরোনামে একটি প্যাকেজ নির্ধারণ করা হয়েছে। এই প্যাকেজের খরচ ধরা হয়েছে ৫ লাখ ৯ হাজার ১৮৫ টাকা। সরকার অনুমোদিত এই প্যাকেজ গ্রহণ করে এজেন্সিসমূহ অতিরিক্ত দুটি প্যাকেজ ঘোষণা করতে পারবে।

প্রত্যেক হজযাত্রীর খাবার বাবদ প্রতিদিন ন্যূনতম ৩৫ সৌদি রিয়াল ব্যয় হতে পারে। এ হিসাব অনুসারে খাবারের জন্য প্রয়োজনীয় টাকা হজযাত্রীদের সঙ্গে নিতে হবে এবং নিজ দায়িত্বে খাবার ক্রয় করতে হবে। ২০২৬ সালের হজে কোরবানির টাকা আবশ্যিকভাবে নুসুক মাসার প্লাটফর্মে জমা দেয়ার নির্দেশনা দিয়েছে সৌদি হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়। একারণে কোরবানি বাবদ ৭২০ সৌদি রিয়ালের সমপরিমাণ ২৩ হাজার ৬৫২ টাকা হজ প্যাকেজে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তবে খাবার বাবদ কোনো টাকা প্যাকেজে ধরা হয়নি। এজন্য প্রত্যেক হজযাত্রীকে খাবার বাবদ প্রতিদিন ন্যূনতম ৩৫ সৌদি রিয়াল হিসেবে প্রয়োজনীয় অর্থ সাথে নিতে বলেছে সরকার।

সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ২০২৬ সনের ২৬ মে পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে। এ বছর বাংলাদেশ থেকে সম্ভাব্য এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজ পালন করতে পারবেন।

গত ২৭ জুলাই থেকে হজের প্রাথমিক নিবন্ধন শুরু হয়েছে এবং সৌদি সরকারের রোডম্যাপ অনুসারে আগামী ১২ অক্টোবর হজের নিবন্ধন কার্যক্রম শেষ হবে। ১২ বছর ও তদূর্ধ্ব বয়সের শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ ব্যক্তি ২০২৬ সালের হজে গমন করতে পারবেন। তিন লাখ ৫০ হাজার টাকা জমা দিয়ে প্রাথমিক নিবন্ধন সম্পন্ন করা যাবে। আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে প্যাকেজ মূল্যের সমুদয় অর্থ আবশ্যিকভাবে জমা প্রদান করতে হবে।

এমএইচ/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ