শুক্রবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ।। ৪ আশ্বিন ১৪৩২ ।। ২৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

শিরোনাম :
মাদকের বিরুদ্ধে মুরাদনগরে ওলামা পরিষদের মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ পাকিস্তানে পৃথক বিস্ফোরণে নিহত অন্তত ১১ ইসলামি বইমেলা পরিদর্শনে জাতীয় মসজিদের খতিব প্রাথমিকে গানের নয়, ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে: শায়খে চরমোনাই পীর সাহেব চরমোনাইয়ের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের ‘মিট আপ’ আফগানিস্তানের বাগরাম বিমান ঘাঁটি আবারও নিয়ন্ত্রণে নিতে চায় যুক্তরাষ্ট্র কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্যের মায়ের ইন্তেকালে খেলাফত মজলিসের শোক মদিনায় তিন বছর ধরে আইসিইউতে থাকা এক বাংলাদেশি আলেমের করুণ কাহিনি আল্লামা আহমদ শফী রহ.: খণ্ড খণ্ড গল্প চামড়ায় দেওয়া লবণে রং মিশিয়ে তৈরি হতো বিট লবণ

হাসিনা-কামালের নির্দেশেই জুলাই অভ্যুত্থানে প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের স্বীকারোক্তি সাবেক আইজিপির

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

জুলাই অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের দায় স্বীকার করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দিয়েছেন সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন। মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন আইসিটি-১ এ তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এসময় নিহতদের পরিবার, দেশবাসী ও ট্রাইব্যুনালের কাছে ক্ষমা চান তিনি।

সাক্ষ্যে মামুন বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্দোলন দমনে সরাসরি প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ দেন। এই নির্দেশ তার কাছে পৌঁছে দেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

গত ১০ জুলাই ট্রাইব্যুনাল সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক আইজিপি মামুনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু করে। এর মধ্যে হাসিনা ও কামাল পলাতক, আর মামুন গ্রেপ্তার হয়ে দোষ স্বীকার করে রাজসাক্ষী হয়েছেন।

মামুন জানান, ২০২৩ সালের ১৮ জুলাই শেখ হাসিনার কাছ থেকে নির্দেশ আসার পর থেকে আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের ধারা শুরু হয়। এসময় তৎকালীন ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান ও ডিবি প্রধান হারুন অর রশিদ বিশেষভাবে সক্রিয় ছিলেন। এছাড়া কয়েকজন মন্ত্রী-নেতাও প্রাণঘাতী শক্তি প্রয়োগে প্রধানমন্ত্রীকে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন বলে উল্লেখ করেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কারীদের আটক করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ধানমন্ডির বাসভবনে অনুষ্ঠিত কোর কমিটির বৈঠকে। এ প্রস্তাব আসে ডিজিএফআই থেকে। যদিও তিনি প্রথমে আপত্তি করেন, পরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্দেশে রাজি হন।

ক্রসফায়ারের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে মামুন বলেন, এসব ঘটনার সিদ্ধান্ত আসত গোয়েন্দা সংস্থার কাছ থেকে, কখনো চেইন অব কমান্ড অনুসরণ করা হতো না। তিনি স্বীকার করেন, এসব ঘটনার তদন্তও তিনি করেননি।

৫ আগস্টের পরিস্থিতি বর্ণনা করতে গিয়ে তিনি বলেন, দুপুর নাগাদ খবর পান প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতা ছাড়বেন। এরপর সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টারে পুলিশ সদরদপ্তর থেকে তাকে ও অন্য কর্মকর্তাদের ক্যান্টনমেন্টে নিয়ে যাওয়া হয়। কয়েকদিন পর তাকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং ৬ আগস্ট তার নিয়োগ চুক্তি বাতিল করা হয়।

নিজেকে দায়ী করে সাবেক আইজিপি বলেন, “আন্দোলন দমনে অতিরিক্ত বল প্রয়োগে আহত ও নিহত হওয়ার ঘটনায় আমি লজ্জিত, অনুতপ্ত ও ক্ষমাপ্রার্থী। এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের কারণে আমি বিবেকের তাড়নায় রাজসাক্ষী হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”

তিনি নিহতদের পরিবার, দেশবাসী ও ট্রাইব্যুনালের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে বলেন, “আমাকে ক্ষমা করলে হয়তো জীবনের বাকিটা সময় কিছুটা হলেও অপরাধবোধ থেকে মুক্তি পাব।”

এরপর আসামিপক্ষের রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমীর হোসেন তাকে জেরা শুরু করেন। জেরা শেষ হয়নি, আগামীকাল (৩ সেপ্টেম্বর) তা অব্যাহত থাকবে।

এমএইচ/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ