সোমবার, ০৪ আগস্ট ২০২৫ ।। ২০ শ্রাবণ ১৪৩২ ।। ১০ সফর ১৪৪৭

শিরোনাম :
ইসলামি দলগুলোর ঐক্য-সমঝোতা কতদূর? গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে খেলাফত মজলিস ঢাকা মহানগরী উত্তর-এর সমাবেশ  আদর্শিক বিরোধে গণ-অভ্যুত্থানে কারো অবদান অস্বীকার করা উচিত নয় : মাহফুজ আলম ইসলামি চার রাজনৈতিক দলের লিয়াঁজো কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত ‘স্বৈরতন্ত্র ও স্বৈরতান্ত্রিক বন্দোবস্তের স্থায়ী বিলোপের জন্য ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে’ মোবাইলে লাউডস্পিকারে কথা বলা; ইসলাম কি বলে: শায়খ আহমদুল্লাহ জুলাই গণঅভ্যুত্থান ছিল দুঃশাসনের বিরুদ্ধে জনতার বিস্ফোরণ: রাষ্ট্রপতি মাহাথির মোহাম্মদের সঙ্গে ড. শোয়াইব আহমদের সৌজন্য সাক্ষাৎ ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ পাঠ করবেন প্রধান উপদেষ্টা সব ধরনের দূষণ রোধে আলেম-ওলামার সহযোগিতা চায় সরকার

‘বসিলা আন্দোলন জমানোর পিছনে আমাদের মাদ্রাসার বড় ভূমিকা ছিল’

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার
ছবি: সংগৃহীত

মাওলানা শহিদুল ইসলাম

জুলাই আন্দোলন চলাকালে মাওলানা মামুনুল হক পরিচালিত তারবিয়াতুল উম্মাহ মাদরাসা বন্ধ করে দিয়েছিল প্রশাসন। 

জুলাই আন্দোলন যখন তুঙ্গে তখন ওই মাদরাসার ছাত্র শিক্ষক সবাই রাস্তায় নেমে আসে। আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীদের চিকিৎসা সেবা,খাবার পানি বিতরণসহ সর্বাত্মক সহযোগিতা করে। বসিলা ব্রীজের গোড়ায় অবস্থিত ওই মাদরাসার ছাত্র–শিক্ষকরা ১৮ জুলাই থেকে ২০ জুলাই আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীদের ব্যাপক পরিসরে পানিও শরবত বিতরণসহ সর্বাত্মক সহায়তা করে। বিষয়টি নজরে আসে মাদরাসার পাশে অবস্থিত র‍্যাব-২ এর কর্মকর্তাদের। ২১ জুলাই কারফিউ—এ র দ্বিতীয় দিন র‍্যাব এসে মাদরাসাটি বন্ধ করে দেয় । 

বার ছিল রবিবার। ২১ জুলাই । মাদ্রাসার নিচে বিভিন্ন সংস্থার গোয়েন্দা আনাগোনা করছে। ১১ টার দিকে আমি বাসায় যাওয়ার জন্য বের হই। সঙ্গে সঙ্গে দুই গোয়েন্দা এসে আমাকে বলে স্যারের কাছে যেতে হবে। স্যার ব্রীজের গোড়ায় বসে চেকপোস্ট তদারকি করছে। আমাকে নিয়ে যাওয়ার পর অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। অবশেষে আরো দুজন শিক্ষককে ডেকে আনতে বাধ্য করে। আমি গিয়ে হেফজ এবং মক্তবের দুজন শিক্ষককে ডেকে আনি। তারা আসার পরও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। সর্বশেষ বিকেলের মধ্যে মাদরাসা খালি করতে বলে। আমি বললাম এখন তো জরুরি অবস্থা চলছে ছাত্ররা বাড়িতে যেতে পারবে না। তাই আমি দায়িত্ব নিচ্ছি কোন ছাত্র বের হবে না। তাদেরকে থাকতে দিন। সে সবকিছু নাকচ করে দিয়ে বলে মাদরাসা খালি করতে হবে। আমি মাদরাসায় গিয়ে ঘটনা শুনিয়ে বাসায় চলে যাই। ছুটি বা বন্ধের কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। আসরের পর আবার মাদরাসায় আসি। তখন সবাই উদ্বিগ্ন যেহেতু মাদ্রাসা খালি করতে বলেছে হয়তো রাত্রে চেক দিতে পারে। তাদের কথা মতো খালি না করলে বড় ধরনের সমস্যা হতে পারে। গাড়ি-ঘোড়া বন্ধ। ছাত্রদেরকে কিভাবে বিদায় দেই। তাই আশপাশের কিছু মাদরাসার সঙ্গে যোগাযোগ করে ভাগ করে ছাত্রদেরকে বিভিন্ন মাদরাসায় রাখার সিদ্ধান্ত নিই। সে হিসাবে শহিদুল্লাহ ফজলুল বারীতে ১০ জন বসিলা ব্রিজের পাশেই মাদরাসাতুল হিকমাহ'য় ১০ জন এবং রাহমানিয়ায় আরো কিছু ছাত্রকে রাখা হয়। আশপাশের যারা ছিল সবাইকে বাসায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়। কিছু ছাত্রকে পরিচিত আশপাশের বাসায় রাখা হয়। এভাবে সন্ধ্যার মধ্যে মাদরাসা খালি করা হয়। হয়তো বিষয়টা গোয়েন্দাদের নজরেও ছিল। তাই রাতের বেলায় আমাদের এখানে আর হানা দেয়নি। পাশেই আরেকটি মাদরাসায় হানা দেয়। তিন চার দিন ছাত্ররা বিভিন্ন মাদরাসায় থাকার পর যখন পরিবেশের কোন উন্নতি হচ্ছিল না যার যার মত বাড়িতে চলে যাওয়ার অনুমতি দিয়ে দেই। 

বসিলা আন্দোলন জমানোর পিছনে আমাদের মাদ্রাসার বড় ভূমিকা ছিল। বিশেষত শুরু থেকেই শরবত পান করানো বসার জন্য ব্যবস্থা নামাজের আয়োজন এ সমস্ত আনুষ্ঠানিকতার মাধ্যমে মানুষকে জমানো হয়েছিল। গোয়েন্দারা বিভিন্ন দোকান থেকেও রিপোর্ট নিয়েছে। হালকা নাস্তা বা শরবত এর সরঞ্জাম আমরা কিনেছি দোকানদাররা সেই রিপোর্ট দিয়েছে। এর দ্বারা গোয়েন্দারা বুঝে নিয়েছে এখানকার আন্দোলনের মূল উদ্যোক্তা এই মাদরাসা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিগণ। তাই সবচেয়ে বেশি ক্ষ্যাপা ছিল আমাদের উপর।

লেখক: শিক্ষক, তারবিয়াতুল উম্মাহ মাদরাসা

এমএইচ/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ