স্বাধীনতার পর সবচেয়ে বেশি জনসমর্থন নিয়ে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতায় এসেছেন বলে মনে করেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম পীর সাহেব চরমোনাই। এরপর সরকার সুন্দর ও ন্যায়ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠায় ব্যর্থ কেন সেটা নিয়ে তিনি প্রশ্ন তুলেছেন।
বৃহস্পতিবার (৮ মে) বিকেলে টাঙ্গাইল শহরের শহীদ স্মৃতি পৌর উদ্যানে আয়োজিত এক জনসভায় তিনি এই কথা বলেন।
এই জনসভা অনুষ্ঠিত হয় সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন পদ্ধতি চালু, নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব বাতিল এবং কোরআন-সুন্নাহবিরোধী সকল আইনি উদ্যোগ প্রত্যাহারের দাবিতে।
পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, ৫ আগস্টের ঘটনার পর মায়ের আর্তনাদ থামেনি। আজও সেই কান্না, সেই চিৎকার আমাদের কানে বাজে। মুগ্ধর পানি পানি শব্দ ভুলিনি, আবু সাইদের গুলিবিদ্ধ বুকে দুই হাত ছড়িয়ে পড়ার দৃশ্য ভুলিনি। অথচ সেই ঘটনায় যারা দায়ী, তারাই আজ চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, স্টেশন-ঘাট দখল নিয়ে আবারও মাঠে নেমেছে।
তিনি অভিযোগ করেন, দেশের লাখ লাখ মানুষ আন্দোলনে পঙ্গু হয়েছে, অনেকেই চোখ হারিয়েছে, প্রাণ হারিয়েছে বহু সাংবাদিক। তারপরও যারা এসব ঘটনার পেছনে, তাদের যদি আবার ক্ষমতায় বসানো হয়, তাহলে এই জাতি আরেকটি গণবিনাশের মুখে পড়বে।
মুফতি রেজাউল করীম বলেন, বাংলাদেশের ছাত্রসমাজ ও জনতা তা কিছুতেই মেনে নেবে না। এই রাষ্ট্রে প্রথম প্রয়োজন প্রকৃত সংস্কার। তার আগে কোনো জাতীয় নির্বাচন নয়।
চরমোনাই পীর আরও বলেন, বর্তমান সরকার গণঅভ্যুত্থানের ফসল। স্বাধীনতার পর কেউ এত বড় জনসমর্থন পায়নি। এত সমর্থন পেয়েও সুন্দর ও ন্যায়ভিত্তিক শাসন প্রতিষ্ঠায় তারা ব্যর্থ হয়েছে। প্রশ্ন হলো— এই ব্যর্থতার দায় কোথায়?
নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নারীদের বাদ দিয়ে যে সংস্কারের কথা বলা হয়েছে, তা বিশ্বে নজিরবিহীন। এটি কোনো সভ্য রাষ্ট্রে কল্পনাও করা যায় না।
এই জনসভায় সভাপতিত্ব করেন ইসলামী আন্দোলনের টাঙ্গাইল জেলা শাখার সভাপতি আকরাম আলী। আরও বক্তব্য দেন সংগঠনের প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা নেছার উদ্দিন, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, দফতর সম্পাদক মাওলানা লোকমান হোসেন জাফরী, সহ-সভাপতি মনতাছির আহমাদ এবং জেলা সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ আখিনুর মিয়া।
এনএইচ/