আওয়ার ইসলাম: পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিদের অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকারের অবস্থান কঠোর বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি।
তিনি বলেন, ভিসিদের কেউ যদি ভাবেন, আমি আমার মতো কাজ করবো, আমি রাজা, তাহলে সহযোগিতা দূরে থাক; তাদের বলবো, স্যরি। আর আইনের মধ্যে থাকলে আপনাদের সঙ্গে আমরা ষোলআনা আছি। যেসব ভিসিরা ক্ষমতার অপব্যবহার করবেন, তাদের প্রয়োজন নেই।
গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিদের নিয়ে বৈঠকে এসব কথা বলেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
বৈঠকে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি, নৈতিক স্খলনসহ বিভিন্ন অভিযোগ উত্থাপন করা হয়। ইউজিসি থেকে বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির বিরুদ্ধে তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা এবং বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়। বৈঠকে ভিসিরা শিক্ষক নিয়োগসহ বিভিন্ন বিষয়ে দাবি তুলে ধরেন।
ভিসিদের এসব দাবির পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, কোনও কোনও ভিসি তার অবস্থানে থেকে ক্ষমতার অপব্যবহার করছেন, অসদাচরণ করছেন। ভিসিদের নিয়ে আমরা এতক্ষণ যা শুনলাম, তার সবই কী পত্রিকার তৈরি? কেউ কেউ ক্ষমতার অপব্যবহার করে পুরো বিশ্ববিদ্যালয় ও উচ্চশিক্ষা ধ্বংসের পর্যায়ে নিয়ে গেছেন। ভিসিরা অনেক সম্মানিত ব্যক্তি। কিন্তু, আইন মেনে না চললে এমন ভিসির দরকার নেই।’
বৈঠকের সমাপনী বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, নিয়োগ সহজীকরণের কথা আসছে। কিন্তু, যাদের কারণে উচ্চশিক্ষা ধ্বংসের পর্যায়ে গেলো ভবিষ্যতে তাদের মতো কেউ ভিসি হিসেবে নিয়োগ পাবেন না, তার নিশ্চয়তা কে দেবে?
‘কেউ কেউ নিয়োগে চাপ প্রয়োগের কথা বলেছেন। কারা চাপ দেয়, তাদের আমরা চিনি। চাপ বন্ধ করার জন্য কী করতে হয়, তাও আমরা জানি। আপনারা চিন্তা করবেন না। স্বচ্ছতা, দায়িত্বশীলতা, মান-সম্মান, নিয়ম-কানুন ও আইনের মধ্যে থেকে কাজ করলে ২০০ শতাংশ সহায়তা পাবেন।’
বৈঠকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনিয়ম-দুর্নীতি তদন্তে ইউজিসির কর্মকর্তাদের কমিটিতে রাখার প্রতিবাদ জানানো হয়। ভিসিরা অনিয়ম-দুর্নীতির তদন্ত কমিটিতে শিক্ষকদের রাখার দাবি জানান।
ভিসিরা অভিযোগ করেন, ইউজিসির কর্মকর্তাদের তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হলে তারা ক্ষমতার অপব্যবহার করেন। অনেক সময় ভিসিদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন। ভিসিদের অপরাধ পেলে ব্যবস্থা নেবে সরকার, কিন্তু ইউজিসির অফিসাররা সেখানে অসদাচরণ করতে পারেন না বলে উল্লেখ করেন ভিসিরা।
শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি কামালউদ্দিন আহমদ দাবি করেন, কোনও বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে খবর এলে বিশেষ করে বিপক্ষে খবর এলে সেই সাংবাদিকের ব্যাকগ্রাউন্ড কি সেটিও জানতে হবে। দেখতে হবে বিশ্ববিদ্যালয় অস্থিতিশীল করার পাঁয়তারা আছে কিনা?
শিক্ষক নিয়োগ ও পদোন্নতি সংক্রান্ত এই বৈঠকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষে শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব মুহা. সোহরাব হোসাইন, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কাজী শহীদুল্লাহ অংশ নেন।
-এএ