মঙ্গলবার, ০৬ মে ২০২৫ ।। ২৩ বৈশাখ ১৪৩২ ।। ৮ জিলকদ ১৪৪৬


মিথ্যা মামলাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বললো হেফাজত

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মোস্তফা ওয়াদুদ: হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের (ভারপ্রাপ্ত) মহাসচিব মাওলানা নুরুল ইসলাম জিহাদী বলেছেন, যারা শায়খুল ইসলাম আল্লামা শাহ আহমদ শফি রহ. এর অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে উল্লেখ করে ৩৬ জনের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করেছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। আল্লামা শফি রহ. এর স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে-একথা শায়খুল ইসলাম আল্লামা শাহ আহমদ শফি রহ. এর খাদেম মাওলানা শফিও বলেছেন। খাদেম শফি বলেছেন, হাটহাজারীতে হজরতের অক্সিজেন খোলা কিংবা মানসিক-শারীরিক টর্চারিংয়ের মতো কোনোকিছুই সেখানে ঘটেনি। সে সাথে ছিলো। চট্টগ্রাম মেডিকেল, ঢাকার আসগড় আলীসহ সব জায়গায় সে ছিলো। এরপরও যারা মিথ্যা মামলা করেছেন তাদের বিরুদ্ধে যেনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

আজ রোববার (১০ জানুয়ারি) দুপুর ১২টায় রাজধানীর খিলগাঁওয়ে মাখজানুল উলুম মিলনায়তনে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে সরকারের প্রতি এ আহবান করেন তিনি। কক্সবাজারের পিএমখালী মাদরাসা, ফটিকছড়ির মাইজভান্ডার মাদরাসা ও কুমিল্লার কচুয়ায় মাদরাসায় হামলার প্রতিবাদে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

তিনি বলেন, আমি অবাক হয়ে যাই-এই মামলাটা করার সময় তাদের মনটা কাঁপে নাই? মনের মাঝে একটু দাগ কাটেনি? আল্লামা আহমদ শফির সাথে আমার সম্পর্ক দীর্ঘ ৫০ বছরের। আমি হুজুরের কাছে বহু কিতাব পড়েছি। এটা দাবি করতে দ্বিধা করবো না যে, হজরত আমার মাধ্যমে ঢাকা শহরে পরিচিতি লাভ করেছেন। তার মৃত্যু স্বাভাবিক হয়েছে। হেফাজতের আমির আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী হাটহাজারী মাদরাসায় সংবাদ সম্মেলন করে এ বিষয়গুলো পরিস্কার করেছেন।

তিনি বলেন, তার মৃত্যুর পর রাষ্ট্রপতি-প্রধানমন্ত্রী শোক বাণী দিয়েছেন। জাতীয় সংসদে শোক প্রস্তাব পাস হয়েছে। কোনো জায়গার মধ্যে  অস্বাভাবিক মৃত্যুর শব্দ তো নাই, ভাষা নেই গন্ধও নাই। তার বড় ছেলে সবার সামনে বলেছেন, তার পিতার স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। আমি বলতে চাই, যাদের বিরুদ্ধে এই মিথ্যা মামলা করা হয়েছে তারা যেন এর থেকে রেহাই পান।

তিনি বলেন, ইসলামবিরোধী শক্তিগুলোর বিরুদ্ধে আন্দোলন করার জন্য আল্লামা আহমদ শফী হেফাজতে ইসলাম প্রতিষ্ঠা করেছেন। এই সংগঠন সরকারবিরোধী কিংবা নির্বাচনমুখী কোনো সংগঠন নয়। আমরা সবসময় সরকারের আইন-কানুন মেনেই আন্দোলন করি। কিন্তু চাঁদপুরের কচুয়া, কক্সবাজারের পিএমখালী, ফটিকছড়ির মাইজভান্ডার মাদরাসায় যে আক্রমণ হলো, এ কথা কেউ বলে না যে তারা কেন আইন হাতে তুলে নিল? আমরা সরকারকে জানাতে চাই, তারা কেন আইন হাতে তুলে নিল, তারা আইন হাতে তুলে নেওয়ার কে? এর ব্যবস্থা সরকারকে করতে হবে। আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।

মাওলানা জিহাদী বলেন, আমরা জানতে পেরেছি কওমি মাদরাসাগুলোর ক্ষতি সাধনের জন্য বিভিন্ন পন্থা অবলম্বন করা হচ্ছে; চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। কওমি মাদরাসার উন্নতি কেন, তাদের প্রতি মানুষের আগ্রহ কেন, শ্রদ্ধাবোধ কেন? এটাকে কেন্দ্র করে কওমি মাদরাসার আলেম ও ছাত্রদের চারিত্রিক অভিযোগে অভিযুক্ত করে দেশের জনসাধারণ, মুসলমান দানশীল যারা মাদরাসাকে ভালোবাসে তাদের থেকে দূরে সরিয়ে নেওয়ার একটা চক্রান্ত করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, দেশের কওমি মাদ্রাসাগুলোতে বছরে একবার সম্মেলন ওয়াজ মাহফিল করা হয়। এটার উদ্দেশ্য যারা দান করেন সেই সাধারণ জনগণও কিছু পাওয়ার হক রাখেন। সেজন্য মানুষের হেদায়েতের জন্য মাহফিলগুলো করা হয়। ইদানীং অনেক জায়গা থেকে দুঃসংবাদ আসছে যে ওয়াজ মাহফিল বন্ধ। তারা তো কোরআন হাদিসের কথা বলে। সেটাকে যদি সরকারবিরোধী-রাষ্ট্রবিরোধী মনে করে তাহলে তো কিছু করার নেই। কিছু বক্তার নামের তালিকা করা হচ্ছে। কিন্তু কেন, কী কারণে করা হচ্ছে? যারা দোষী তাদের বক্তব্য ধরে সরকারের আইন-কানুন দিয়ে ব্যবস্থা নেন। কিন্তু ঢালাওভাবে ওয়াজ মাহফিল বন্ধ কেন?

এ সময় সরেজমিনে ঘটনাস্থল প্রত্যক্ষদর্শীদের থেকে বর্ণনা দেন হেফাজতের যুগ্মমহাসচিব মাওলানা ফজলুল করীম কাসেমী। তিনি বলেন, আমরা সরেজমিনে গিয়ে জেনেছি, সেখানে মাদরাসায় হামলা চালিয়ে মাদরাসার প্রায় ৮৩ হাজার টাকা, একজন শিক্ষকের পকেট থেকে ৫ হাজার টাকা ও মোবাইল ছিনিয়ে নিয়েছে সন্ত্রাসীরা।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের নায়েবে আমির আল্লামা আব্দুর রব ইউসুফী, যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিব, মাওলানা ফজলুল করীম কাসেমী, অর্থ সম্পাদক মুফতি মুনীর হোসাইন কাসেমী, মাওলানা শফিকুদ্দীন, মাওলানা ফয়সাল আহমদ প্রমুখ।

এমডব্লিউ/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ