।।ইশতিয়াক সিদ্দিকী।। হাটহাজারী থেকে>
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমীর আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী অদ্ভূত পরিস্থিতিতে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলন করেছেন। আজ রোববার (২৮ মার্চ) চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদরাসায় এ সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, গত (২৬ মার্চ) শুক্রবার আমাদের হাটহাজারী মাদরাসার শান্তিপূর্ণ মিছিলে প্রশাসন পুলিশ বাহিনী (বিশেষভাবে হাটহাজারী থানার ওসি) গুলি করে ৭ জনকে শহীদ করেছে। আরো অনেক আহত। একজন নিরীহ মানুষ, তাবলীগী ভাই-তাকেও শহীদ করেছে।
আরো অনেক জায়গায় নিহত হয়েছে। বিশেষভাবে ঢাকায়, হাটহাজারী ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মোট ১৬ জনের মৃত্যু সংবাদ আমরা পেয়েছি। এটা কোন সাধারণ বিষয় নয়। এই কারণে আমরা হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ-এর পক্ষ থেকে হরতালের ডাক দিয়েছিলাম। আমাদের হরতালের কর্মসূচি ছিল অত্যন্ত সুশৃংখল ও শান্তিপূর্ণ। আমাদের হরতাল আজকে সারাদিন চলবে। আর মাত্র কয়েক ঘন্টা বাকি আছে। শান্তিপূর্ণভাবেই হরতাল পালিত হচ্ছে। এ হরতাল পালন করার জন্য সারা দেশের জনগণ এবং আলেম-ওলামারা সাড়া দিয়েছে।
তিনি হরতাল পালনকারী সাধারণ হেফাজত কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, আজকে যেভাবে আপনারা সাড়া দিয়েছেন। এভাবে ইসলামবিরোধী কাজ হলে আমরা আহবান করব, আপনারা আমাদের ডাকে ঝাঁপিয়ে পড়বেন ইনশাআল্লাহ।
তিনি বলেন, আমরা বাধ্য হয়েই হরতালের ডাক দিয়েছি। ১৬ টি প্রাণ নিহত। আরো কত আহত। আবার গ্রেফতার করেছে অনেককে। এই জুলুম-নির্যাতন ও বর্বরতার বিরুদ্ধে ছিলো হরতালের ডাক। আমাদের হরতাল ন্যায়ের পক্ষে ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে। আমাদের হরতাল ইনসাফের পক্ষে ও জুলুমের বিরুদ্ধে। আলহামদুলিল্লাহ আমাদের হরতাল কামিয়াব ও সফল।
কিন্তু বিভিন্ন জায়গায় সরকারের পেটোয়া বাহিনী এবং দলীয় ক্যাডাররা আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর জুলুম নির্যাতন করেছে। হামলা করেছে। আক্রমণ করেছে। আহত-নিহত করেছে। আমাদের হেফাজতের নায়েবে আমীর, আল্লাহর অলি মধুপুরের পীর আল্লামা আব্দুল হামিদ সাহেবের উপর হামলা করেছে।
এই ১৬ জন নিহত হওয়া ছাড়াও আরো অনেক আহত হয়েছে। আমি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। সরকারের কাছে আমাদের দাবি এ হামলা যেন বন্ধ করে। যারা নিহত হয়েছে তাদের জন্য ক্ষতিপূরণ দিতে হবে সরকারের। যারা আহত হয়েছে তাদের ভালো চিকিৎসা চালানোর জন্য যে টাকা-পয়সা দরকার সেটা সরকারের পক্ষ থেকে দিতে হবে।
যাদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তাদেরকে অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে। বিভিন্ন মাদরাসায় হামলা করেছে। বিশেষ করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জামিয়া ইউনুছিয়া, দারুল আরকাম, রাজধানীর ফরিদাবাদ মাদরাসা, ঢাকার যাত্রাবাড়ী ও সাইনবোর্ড মাদরাসায় হামলা করেছে সরকারের পেটোয়া বাহিনী।
এগুলো যেন অবিলম্বে বন্ধ করে। আর যদি এভাবে হামলা চলতে থাকে, এবং আমাদের নেতাকর্মীদের যদি আহত করা হয়, নিহত আহত করা হয়, হেফাজতের দাবি দাওয়া যদি দাবী পূরণ করা না হয়, তাহলে পরামর্শ সাপেক্ষে হেফাজতের পক্ষ থেকে কঠিন কর্মসূচি দেয়া হবে।
এমডব্লিউ/