আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী পাঁচ সদস্যের ভেটো ক্ষমতা নিয়ে বিতর্ক দীর্ঘদিনের। এবার বিষয়টি প্রথমবারের মতো সাধারণ পরিষদে আনুষ্ঠানিক বিতর্কের জন্য উপস্থাপন হতে যাচ্ছে। ইউরোপের ক্ষুদ্র দেশ লিকটুনস্টাইন একটি খসড়া প্রস্তাব আনতে যাচ্ছে, যেখানে ভেটো দানকারী দেশের অবস্থানের পক্ষে যুক্তি প্রদর্শনের বিধান রাখা হচ্ছে।
জাতিসংঘের সর্বোচ্চ ক্ষমতাধর সংস্থা নিরাপত্তা পরিষদ। সেখানে উত্থাপিত যে কোনো প্রস্তাব ভেটোর মাধ্যমে আটকে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে পাঁচ স্থায়ী সদস্য রাষ্ট্র- যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও চীন। দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধোত্তর সময়ে জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠার সময় এই পাঁচটি দেশ নিজেদের ভেটো ক্ষমতার বিধান সংযুক্ত করে।
ভেটো ক্ষমতাধারী স্থায়ী সদস্যরা বিশ্বশান্তির রক্ষক হিসেবে কাজ করবে, এমন ভূমিকা প্রত্যাশিত হলেও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে রোহিঙ্গা গণহত্যাসহ বিভিন্ন ইস্যুতে নিরাপত্তা পরিষদে আনীত প্রস্তাব কোনো না কোনো স্থায়ী সদস্যের আপত্তির কারণে ব্যর্থ হয়েছে। নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থ মাথায় রেখে সুবিধামতো ভেটো ক্ষমতা প্রয়োগ করছে এসব দেশ।
স্থায়ী সদস্যদের ভেটো ক্ষমতা প্রয়োগ নিয়ে অতীতে বিভিন্ন সময়ে কথা উঠলেও এবার ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের বিরুদ্ধে নিরাপত্তা পরিষদে আনীত প্রস্তাবগুলো রাশিয়ার ভেটোর কারণে ব্যর্থ হওয়ায় পশ্চিমা দেশগুলো বিষয়টিতে অধিকতর মনোযোগ দিচ্ছে।
বার্তা সংস্থা আনাদোলু জানিয়েছে, ভেটো ক্ষমতার ব্ষিয়ে লিকটুনস্টাইনের প্রস্তাব নিয়ে আগামী মঙ্গলবার সাধারণ পরিষদে ভোট হতে পারে। ১৯৩ সদস্যের পরিষদে প্রস্তাবটি গৃহীত হলে ভবিষ্যতে যে কোনো প্রস্তাবে কোনো স্থায়ী সদস্য ভেটো প্রয়োগ করলে ১০ দিনের মধ্যে সাধারণ পরিষদ বৈঠকে মিলিত হবে।
বৈঠকে সাধারণ সদস্যরা ভেটো নিয়ে বিতর্কে অংশ নিতে পারবে এবং ভেটো প্রয়োগকারী রাষ্ট্রকে তাদের অবস্থানের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপনের অনুরোধ জানাতে পারবে।
লিকটুনস্টাইনের প্রস্তাবের যৌথ পৃষ্ঠপোষক হিসেবে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, তুরস্কসহ ৫৭টি দেশ।
গত সপ্তাহে এক বিবৃতিতে জাতিসংঘে মার্কিন রাষ্ট্রদূত লিন্ডা টমাস-গ্রিনফিল্ড বলেন, কোনো স্থায়ী সদস্য একটি প্রস্তাবে ভেটো প্রয়োগ করলে তারা যেন সংশ্লিষ্ট প্রস্তাবটি কেন আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষায় সহায়ক হতো না, তা ব্যাখ্যা করতে প্রস্তুত থাকে।
তিনি বলেন, আমরা বিশেষতঃ গত দুই দশকে রাশিয়ার ভেটো ক্ষমতার অপপ্রয়োগের লজ্জাজনক ধারাবাহিকতায় উদ্বিগ্ন বোধ করছি।
-এটি