শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৫ ।। ৮ কার্তিক ১৪৩২ ।। ২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭


খাগড়াছড়িতে শিক্ষিকা ধর্ষণ

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

নুরুল কবির আরমান,

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার মাটিরাঙ্গা উপজেলায় দুই দিনের ব্যবধানে পরপর দুটি ধর্ষণের ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। সর্বশেষ ঘটনাটি ঘটেছে গত বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) রাতে। আলুটিলা তারেং পর্যটন কেন্দ্রে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে চাকমা সম্প্রদায়ের এক স্কুল শিক্ষিকাকে (২৯) ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে লিটন ত্রিপুরা (২৪) নামে ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের এক যুবকের বিরুদ্ধে।

সেনাবাহিনীর দ্রুত হস্তক্ষেপে অভিযুক্ত লিটন ত্রিপুরাকে (২৪) আটক করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। এই ঘটনায় ভুক্তভোগী শিক্ষিকা নিজেই বাদী হয়ে মাটিরাঙ্গা থানায় মামলা দায়ের করেছেন।

পুলিশ ও ভুক্তভোগীর বর্ণনা অনুযায়ী, চাকমা সম্প্রদায়ের ওই স্কুল শিক্ষিকা বৃহস্পতিবার খাগড়াছড়ি সদরে এক বান্ধবীর গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসেছিলেন। অনুষ্ঠান শেষে তিনি স্কুল জীবনের বন্ধু মো. আরিফুল ইসলামের মোটরসাইকেলে করে ঘুরতে বের হন।

রাত আনুমানিক সাড়ে ৮টার দিকে তারা মাটিরাঙ্গা সদর ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্রের তারেং এলাকায় পৌঁছালে অভিযুক্ত লিটন ত্রিপুরা মোটরসাইকেল নিয়ে তাদের পথরোধ করেন। সে প্রথমে শিক্ষিকার বন্ধু আরিফুল ইসলামের মোটরসাইকেলের চাবি কেড়ে নেয়। এরপর সে শিক্ষিকাকে ভয় দেখিয়ে বলে যে তার কাছে রিভলভার আছে এবং চুপচাপ না থাকলে গুলি করা হবে। অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে লিটন শিক্ষিকাকে তারেংয়ের পাশের জঙ্গলে নিয়ে গিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। ধর্ষণের পর সে ঘটনাস্থলেই ভুক্তভোগীর কাছে দশ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে।

ধর্ষণের শিকার শিক্ষিকা তার বন্ধু আরিফুল ইসলামের কাছে পুরো বিষয়টি জানালে, আরিফুল কৌশলের আশ্রয় নেন। তিনি টাকা আনার কথা বলে ঘটনাস্থল থেকে সরে গিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে সেনাবাহিনীকে খবর দেন। সেনাবাহিনীর সদস্যরা দ্রুততার সাথে ঘটনাস্থলে পৌঁছান এবং ধর্ষক লিটন ত্রিপুরাকে হাতেনাতে আটক করে মাটিরাঙ্গা থানা পুলিশের হাতে সোপর্দ করেন।

আটক লিটন ত্রিপুরা (২৪) খাগড়াছড়ি সদর উপজেলার দক্ষিণ মহালছড়া গোলাবাড়ী এলাকার বাচ্চুরাম ত্রিপুরার ছেলে। ধর্ষিতা নারীও একই উপজেলার নারায়নখাইয়া এলাকার বাসিন্দা।

মাটিরাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. তৌফিকুল ইসলাম তৌফিক বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, "ধর্ষিতা নিজেই বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন। সেনাবাহিনীর সহায়তায় আমরা লিটন ত্রিপুরাকে আটক করেছি। মামলার পরিপ্রেক্ষিতে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।"

এই ঘটনার মাত্র দুই দিন আগে, ২০ অক্টোবর একই উপজেলার অযোধ্যা এলাকায় শ্যামা পূজা দেখতে গিয়ে ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের এক কিশোরী (১৫) নিজ সম্প্রদায়ের চার যুবকের হাতে গণধর্ষণের শিকার হয়। সেই ঘটনায়ও স্থানীয়দের সহযোগিতায় তিনজনকে আটক করে মাটিরাঙ্গা থানা পুলিশ।

দুই দিনের ব্যবধানে পরপর দুটি ধর্ষণের ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তারা অভিযোগ করেন, "মাটিরাঙ্গার মতো শান্ত এলাকায় পাহাড়ি যুবকদের মধ্যে অস্ত্রসজ্জিত অপরাধ প্রবণতা ভয়ঙ্কর পর্যায়ে পৌঁছেছে।" তারা এই ধরনের জঘন্য অপরাধের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।

এনএইচ/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ