শুক্রবার, ২৩ মে ২০২৫ ।। ৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ ।। ২৫ জিলকদ ১৪৪৬


‘আধুনিক ও বিজ্ঞান শিক্ষা যেন হয় আদর্শিক’


নিউজ ডেস্ক

নিউজ ডেস্ক
শেয়ার
ছবি: সংগৃহীত

আধুনিক শিক্ষা ও বিজ্ঞান শিক্ষা যেন আদর্শিক হয়, ইসলামিকরণ হয় সেদিকে গুরুত্ব দিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন দারুননাজাত সিদ্দীকিয়া কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ আ. খ. ম আবুবকর সিদ্দীক। 

দারুননাজাত একাডেমির দ্বিতীয় ইবনে সিনা বিজ্ঞান মেলা, হিফজুল কুরআন অ্যাওয়ার্ড ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে শুক্রবার (২৩ মে) সকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন তিনি। 

আ. খ. ম আবুবকর সিদ্দীক বলেন, দারুননাজাত একাডেমির খুদে শিক্ষার্থীরা যেসব প্রজেক্ট তৈরি করেছে সত্যিই চমকপ্রদ, অবাক হওয়ার মতো। অটোনোমাস অবস্ট্যাকল এভোইডেন্স রোবট কার তৈরি করেছে ষষ্ঠ শ্রেণির একদল শিক্ষার্থী। আমাদের সময়ে এই বয়সে আমরা তো বিজ্ঞান কী জিনিস তা-ই জানতাম না। মুসলমানরা হাজারো বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার বিশ্বকে উপহার দিয়েছে, যা ইতিহাসের চেহারা পাল্টে দিয়েছে এবং একটি বৈজ্ঞানিক পরম বিপ্লব ঘটিয়েছে। তবে আজ মুসলমানরা জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চা থেকে পিছিয়ে আসার ফলে যে শূন্যতা তৈরি হয়েছে তাও আবার পূর্ণ হওয়ার পথ মসৃণ হবে এসব কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে। এর মাধ্যমে জ্ঞান-বিজ্ঞান শিক্ষায় মাদরাসা শিক্ষার্থীরা নতুনভাবে প্রেরণা পাবে। নতুনভাবে এগিয়ে যাবে।

এমনকি বিজ্ঞান মেলা শিক্ষার্থীদের সৃজনশীলতা বাড়াবে, সাহসী ও উদ্যমী করবে, বিজ্ঞানমনস্ক করবে, অনুসন্ধিৎসু করবে। 

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ঢাকার অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ শিহাবুল ইসলাম বলেন, বিজ্ঞানের আজকের উত্থান ও উন্নয়নের পেছনে মৌলিক ভূমিকা পূর্ববর্তী মুসলিম মনীষীদের। বিজ্ঞানকে উন্নতির চরম শিখরে পৌঁছানোর গোড়ার কারিগর তারা। কিন্তু বিজ্ঞানে আজ মুসলমানদের উল্লেখযোগ্য দখল নেই। এ ময়দানে যখন তারা পিছিয়ে পড়ে তখন এর নেতৃত্বে আসে পশ্চিমারা এবং তাদের হাত ধরেই বিজ্ঞানের আজকের এ অবস্থান। ইবনে সিনা, আল-কিন্দি, আল রাজি, ইবনে রুশদ, আল-ফারাবি, আল বেরুনি ও ইমাম গাজ্জালিসহ অগণিত মুসলিম মনীষী রচিত গ্রন্থগুলো ইউরোপীয় ভাষায় অনুবাদ করা হলেও গ্রন্থকারের লাতিন নাম বা বিদেশী নাম দেখে বোঝার উপায় নেই যে তাঁরা মুসলমান।

শিহাবুল ইসলাম বলেন, বর্তমান বিশ্ব মুসলিমদের কাছে শুধু ঋণী নয় বরং বিজ্ঞানের উত্থানে মুসলমানদের কালচার ও সংস্কৃতিও বেশ প্রভাব রেখেছে। এক কথায়, বিজ্ঞানের অস্তিত্বই মুসলমানদের থেকে। এটা স্বতঃসিদ্ধ যে, আধুনিক বিজ্ঞানের পথের সূচনাও মুসলমানদেরই অবদান।

এসময় আরও ববক্তব্য দেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র অ্যাডভোকেট ব্যারিস্টার এ বি এম ছিদ্দিকুর রহমান খান, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আহসান উল্লাহ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের লেকচারার আব্দুল্লাহ যোবায়ের ও  দারুননাজাত একাডেমির সিইও নাজমুল ইসলাম।  

বিজ্ঞান মেলায় উপস্থাপিত কয়েকটি প্রজেক্ট হলো: অটোনোমাস অবস্ট্যাকল এভোইডেন্স রোবট কার— এমন একটি রোবট গাড়ি যা সেন্সরের সাহায্যে চলতে পারে এবং সামনে বাধা এলে তা এড়িয়ে চলতে পারে। এটি দেখায় কীভাবে যন্ত্র নিজের সিদ্ধান্ত নিয়ে কাজ করতে পারে।

স্মার্ট এসি সার্কিট মডেল— এ প্রজেক্ট দেখায় কীভাবে বৈদ্যুতিক সার্কিট দক্ষতার সাথে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এটি আমাদের ঘরোয়া অটোমেশন এবং শক্তি সাশ্রয়ের ধারণা শেখায়। 

স্যাটেলাইট যোগাযোগ মডেল— একটি মডেল যা ব্যাখ্যা করে কীভাবে স্যাটেলাইট আমাদের টেলিভিশন, ইন্টারনেট, নেভিগেশন এবং যোগাযোগে সহায়তা করে সারা পৃথিবীজুড়ে সংযোগ স্থাপন করতে। 

হৃদযন্ত্রের কার্যপ্রণালীর মডেল— একটি চলমান মডেল যা দেখায় কীভাবে মানব হৃদয় রক্ত সারা শরীরে পাম্প করে। এটি আমাদের রক্ত সঞ্চালন প্রক্রিয়া বোঝাতে সাহায্য করে। 

ল্যান্ডস্কেপ গার্ডেনিং মডেল— একটি সৃজনশীল প্রদর্শনী যা দেখায় কীভাবে সৌন্দর্য ও পরিবেশের জন্য বাগান ডিজাইন করা হয়। এটি প্রকৃতি ও টেকসই জীবনের শিক্ষা দেয়।

এসএকে/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ