বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫ ।। ১৭ বৈশাখ ১৪৩২ ।। ২ জিলকদ ১৪৪৬

শিরোনাম :
দেশে ফিরছেন খালেদা জিয়া, প্রস্তুত করা হচ্ছে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স শিক্ষার্থীদের সভা-সমাবেশ ও মিছিলে অংশগ্রহণ বন্ধের নির্দেশ নারী নীতিমালা নিয়ে জাতীয় সেমিনারে শীর্ষ আলেম-রাজনীতিকরা ‘মানবিক করিডোর’ প্রতিষ্ঠার আগে জাতীয় ঐকমত্য তৈরি করতে হবে সুখী ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ দেখতে চায় বিএনপি : মির্জা ফখরুল ইসলামিক ফাউন্ডেশনের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি স্থগিত প্রতিহিংসা-প্রতিশোধ শান্তি বয়ে আনতে পারে না: আমীরে জামায়াত শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানে শাসন সংকট, মনোভাবের বিপর্যয় এবং সতর্কতার আহ্বান নিবরাস ইসলামিক রিসার্চ ফাউন্ডেশনে শিক্ষক নিয়োগ মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনতে পুলিশের প্রতি প্রধান উপদেষ্টার আহ্বান

সন্তানকে ইসলামের সঙ্গে পরিচিত করুন : আবুল হাসান আলী নদভী

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

সন্তানের মুখ থেকে কালেমা শুনুন-সে শুদ্ধ করে কালেমা বলতে পারে কি না। খোঁজ নিন, এ পরিমাণ কুরআন তার মুখস্থ আছে কি না যার দ্বারা নামায পড়া যায়।

আমরা যদি এখনই এ বিষয়ে সচেতন না হই তাহলে এ দেশের ভবিষ্যৎ আশংকাজনক। এই জলসায় এ কথাটাই আমি আপনাদেরকে বলতে চেয়েছি এবং আমানত হিসেবে আপনাদের কাছে রেখে যাচ্ছি।

সন্তানের দ্বীন ও ঈমান রক্ষায় সচেতন হোন। পাড়া-প্রতিবেশী, আত্মীয়-স্বজন ও পরিচিত মেয়েদেরকেও এ বিষয়ে সচেতন করুন। তাদেরকে বলুন-দেখুন মা, দেখ বোন, তোমার সন্তানকে যে শিক্ষায় ইচ্ছা শিক্ষিত কর তবে আল্লাহর নাম তাকে শিখিয়ে দাও।

হৃদয়ের গভীরে তাওহীদ ও রিসালাতের বিশ্বাস বসিয়ে দাও। আল্লাহ এক, তাঁর কোনো শরীক নেই। হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর সর্বশেষ রাসূল।

এখনই আমাদের সজাগ হতে হবে। তা না হলে এত ষড়যন্ত্র ও পরিকল্পনা তৈরি হচ্ছে যে, দ্বীন ও ঈমানের সঙ্গে আগামী প্রজন্মের কোনো সম্পর্কই থাকবে না। শিশুদেরকে বোঝানো হচ্ছে, যদি তোমার কোনো কিছু হারিয়ে যায়, অথবা তোমার পছন্দের কোনো জিনিস পেতে চাও কিংবা কোথাও কোনো বিপদ-আপদের সম্মুখীন হয়ে পড় তাহলে একটা কাজ করবে। পথে চলার সময় রাস্তার পার্শ্বে কোনো মন্দির যদি দেখ তাহলে সেখানে গিয়ে প্রার্থনা করবে।

এতে তোমার উদ্দেশ্য সফল হবে এবং তুমি বিপদ থেকে মুক্তি পাবে। এমনকি এ কথাও শুনেছি যে, এক ছাত্র অপর ছাত্রের কলম-খাতা লুকিয়ে রেখে বলে, রাম নাম জপ কর তাহলে খাতা-কলম পেয়ে যাবে। সে যখন রামের নাম উচ্চারণ করেছে তখন গোপনে তার কলম-খাতা ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

এভাবে তার কচিমনে এই বিশ্বাস সৃষ্টির প্রয়াস চালানো হয়েছে যে, রামের নাম নিলে সমস্যার সমাধান হয়! হারানো বস্ত্ত ফিরে পাওয়া যায়!

হিন্দুস্তান ওলী-আউলিয়ার ভূমি, মুজাহিদীনের ভূমি, মুজাদ্দিদীনের ভূমি, এখানে মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রাহ. পয়দা হয়েছেন। খাজা মুঈনুদ্দীন চিশতীর আগমন হয়েছে। শাহ ওয়ালিউল্লাহ-এর মতো ইমাম জন্মলাভ করেছেন। মাওলানা কাসিম নানুতবী রাহ., মাওলানা রশীদ আহমদ গংগুহী রাহ., মাওলানা মুহাম্মাদ আলী মুংগেরী রাহ. এবং আরো কত আলিম-ফাযিল পয়দা হয়েছেন।

এই দেশের ব্যাপারে অনেক আগেই নীল নকশা তৈরি করা হয়েছে যে, নাম-পরিচয়ে এরা কিছুদিন মুসলিম থাকুক কিন্তু মুসলমানের কোনো বৈশিষ্ট্য যেন তাদের মধ্যে অবশিষ্ট না থাকে। আর এদের আগামী প্রজন্ম যেন ইসলাম সম্পর্কে একেবারেই অজ্ঞ হয়ে যায়। তারা ইসলামকে অস্বীকার করবে না তবে ইসলামের সঙ্গে তাদের কোনো সম্পর্কও থাকবে না।

আমার কাছ থেকে এই পয়গাম গ্রহণ করুন এবং নিজ ঘরে, নিজ মহল্লায়, আত্মীয়-স্বজনের কাছে পৌঁছে দিন। বিয়ে-শাদী উপলক্ষে কোথাও গিয়েছেন, সেখানে বলুন। অন্য কোনো অনুষ্ঠানে গিয়েছেন সেখানেও আলোচনা করুন। আপনার চারপাশের সবাইকে সচেতন করুন।

আমার বোনেরা! মনোযোগ দিয়ে শুনুন। সন্তানকে মুসলমান বানান এবং তাকে মুসলমান হিসেবে বেঁচে থাকার সুযোগ করে দিন। তাকে কুরআন মজীদ পড়তে শেখান। তার অন্তরে তাওহীদের বিশ্বাস বসিয়ে দিন। শিরক-বিদআত থেকে, মূর্তিপূজা থেকে এবং সকল ভ্রষ্টতা থেকে তাদেরকে আগলে রাখুন।

আমাদের মা-বোনেরা যদি এ কাজটুকু করতে সক্ষম হন তবে এতে দ্বীনের হেফাযতের অনেকখানি নিশ্চয়তা রয়েছে। অন্যথায় শুধু বাইরের তৎপরতা, সাংগঠনিক কাজকর্ম, পত্র-পত্রিকা, বই-পুস্তক, সেমিনার-কনফারেন্স ইত্যাদির দ্বারা-কিছু সুফল পাওয়া গেলেও-দ্বীন রক্ষার উদ্দেশ্য পূরণ হবে না।

(উর্দূ ভাষায় প্রদত্ত এই ভাষণটি পাক্ষিক তা’মীরে হায়াত ১০ সেপ্টেম্বর ১৯৯৬ ঈ. থেকে মাসিক আল-কাউসারের পর্দানশীন বিভাগে অনুদিত হয়)

আরও পড়ুন : এক নারীর কারণে মুসলমান হলো পুরো গ্রাম


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ