বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫ ।। ১৬ বৈশাখ ১৪৩২ ।। ২ জিলকদ ১৪৪৬

শিরোনাম :
দেশে ফিরছেন খালেদা জিয়া, প্রস্তুত করা হচ্ছে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স শিক্ষার্থীদের সভা-সমাবেশ ও মিছিলে অংশগ্রহণ বন্ধের নির্দেশ নারী নীতিমালা নিয়ে জাতীয় সেমিনারে শীর্ষ আলেম-রাজনীতিকরা ‘মানবিক করিডোর’ প্রতিষ্ঠার আগে জাতীয় ঐকমত্য তৈরি করতে হবে সুখী ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ দেখতে চায় বিএনপি : মির্জা ফখরুল ইসলামিক ফাউন্ডেশনের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি স্থগিত প্রতিহিংসা-প্রতিশোধ শান্তি বয়ে আনতে পারে না: আমীরে জামায়াত শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানে শাসন সংকট, মনোভাবের বিপর্যয় এবং সতর্কতার আহ্বান নিবরাস ইসলামিক রিসার্চ ফাউন্ডেশনে শিক্ষক নিয়োগ মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনতে পুলিশের প্রতি প্রধান উপদেষ্টার আহ্বান

রোজার যে বিস্ময়কর উপকারিতার কথা জানালো বিজ্ঞান

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: চলছে পবিত্র রমজান মাস। সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পানাহার থেকে বিরত থাকছেন গোটা বিশ্বের কোটি কোটি মুসলমান।

কয়েক বছর ধরে উত্তর গোলার্ধের দেশগুলোতে রোজা পড়েছে গ্রীষ্মকালে। ফলে এসব দেশের মুসলিমদের রোজা রাখতে হচ্ছে গরমের মধ্যে দীর্ঘসময় ধরে। বিবিসির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে সারাদিন রোজা রাখলে কী প্রভাব ঘটে শরীরে।

প্রথম কয়েকদিন: সবচেয়ে কষ্টকর

শেষবার খাবার খাওয়ার পর আট ঘন্টা পার না হওয়া পর্যন্ত মানুষের শরীরে সেই অর্থে উপোস বা রোজার প্রভাব পড়ে না। আমরা যে খাবার খাই, পাকস্থলীতে তা পুরোপুরি হজম হতে এবং এর পুষ্টি শোষণ করতে অন্তত আট ঘন্টা সময় নেয় শরীর। যখন এই খাদ্য পুরোপুরি হজম হয়ে যায়, তখন যকৃৎ এবং মাংসপেশিতে সঞ্চিত থাকা গ্লুকোজ, সেটা থেকে শক্তি নেওয়ার চেষ্টা করে।

শরীর যখন এই চর্বি খরচ করতে শুরু করে, তা ওজন কমাতে সাহায্য করে। এটি কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায় এবং ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমায়।

তবে সারাদিন উপবাসের কারণে যেহেতু রক্তে সুগার বা শর্করার মাত্রা কমে যায়, সে কারণে হয়তো শরীর কিছুটা দুর্বল হয়ে যায় এবং ঝিমুনির ভাব আসতে পারে।

এছাড়া কারও কারও ক্ষেত্রে মাথাব্যাথা, মাথা ঘোরা, বমি বমি ভাব বা নিশ্বাসে দুর্গন্ধ হতে পারে। এ সময়টাতেই আসলে শরীরে সবচেয়ে বেশি ক্ষুধা লাগে।

৩ হতে ৭ রোজা: পানিশূন্যতা থেকে সাবধান

প্রথম কয়েকদিনের পর শরীর যখন রোজায় অভ্যস্ত হয়ে উঠছে, তখন শরীরে চর্বি গলে গিয়ে তা রক্তের শর্করায় পরিণত হচ্ছে।

কিন্তু রোজার সময় দিনের বেলায় যেহেতু কিছুই খাওয়া বা পান করা যায় না তাই রোজা ভাঙ্গার পর অবশ্যই সেটার ঘাটতি পূরণের জন্য প্রচুর পানি পান করতে হবে। তা না হলে শরীরে মারাত্মক পানিশূন্যতা হতে পারে। বিশেষ করে গরমের দিনে যদি শরীরে ঘাম হয় তাহলে এ সমস্যা মারাত্মক হতে পারে।

ইফতার-সেহেরিতে যে খাবার খাবেন, সেটাতেও যথেষ্ট শক্তিদায়ক খাবার থাকতে হবে। যেমন কার্বোহাইড্রেট বা শর্করা এবং চর্বি।

একটা ভারসাম্যপূর্ণ খাবার খুব গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে সব ধরণের পুষ্টি, প্রোটিন বা আমিষ, লবণ এবং পানি থাকবে।

৮ হতে ১৫ রোজা: অভ্যস্ত হয়ে উঠছে শরীর

এই পর্যায়ে এসে আপনি নিশ্চয়ই অনুভব করতে পারছেন যে আপনার শরীর-মন ভালো লাগছে, কারণ রোজার সঙ্গে আপনার শরীর মানিয়ে নিতে শুরু করেছে। ক্যামব্রিজের এডেনব্রুকস হাসপাতালের 'অ্যানেসথেসিয়া এন্ড ইনটেনসিভ কেয়ার মেডিসিনের' কনসালট্যান্ট ড. রাজিন মাহরুফ বলেন, এর অন্যান্য সুফলও আছে।

তার ভাষায়, সাধারণত দৈনন্দিন জীবনে আমরা অনেক বেশি ক্যালরিযুক্ত খাবার খাই এবং এর ফলে আমাদের শরীর অন্য অনেক কাজ ঠিকমত করতে পারে না। কিন্তু রোজার সময় যেহেতু আমরা উপোস থাকছি, তাই শরীর তখন অন্যান্য কাজের দিকে মনোযোগ দিতে পারে। কাজেই রোজা কিন্তু শরীরের জন্য বেশ উপকারী। এটি শরীরের ক্ষত সারিয়ে তোলা বা সংক্রমণ রোধে সাহায্য করতে পারে।

১৬ হতে ৩০ রোজা: ভারমুক্ত শরীর

রমজান মাসের দ্বিতীয়ার্ধে শরীর পুরোপুরি রোজার সঙ্গে মানিয়ে নেবে। টানা রোজা রাখার ফলে শরীরের পাচকতন্ত্র, যকৃৎ, কিডনি এবং দেহত্বক এক ধরণের পরিবর্তনের ভেতর দিয়ে যাবে। সেখানে থেকে সব দূষিত বস্তু বেরিয়ে শরীর শুদ্ধ হয়ে উঠবে।

ড. মাহরুফ বলেন, এসময় শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ তাদের পূর্ণ কর্মক্ষমতা ফিরে পাবে। স্মৃতি এবং মনোযোগের উন্নতি হবে। শরীরও অনেক শক্তি পাবে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রোজা রাখা শরীরের জন্য ভালো, কারণ আমরা কী খাই এবং কখন খাই সেটার ওপর আমাদের মনোযোগ দিতে সাহায্য করে। একমাসের রোজা রাখা হয়তো ভালো। কিন্তু একটানা রোজা রাখা ঠিক নয়।

তাদের মতে, শরীরের ওজন কমানোর জন্য একটানা রোজা রাখা কোন উপায় হতে পারে না। কারণ একটা সময় শরীর চর্বি গলিয়ে তা শক্তিতে পরিণত করার কাজ বন্ধ করে দেবে। তখন এটি শক্তির জন্য নির্ভর করবে মাংসপেশির ওপর। এটা স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয়। কারণ শরীর তখন ক্ষুধায় ভুগবে।

-কেএল


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ