রবিবার, ০১ জুন ২০২৫ ।। ১৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ ।। ৫ জিলহজ ১৪৪৬


দেওবন্দ আন্দোলন: ঈমানদীপ্ত এক সংগ্রামী চেতনার নাম

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

হাফেজ মুহাম্মদ আবুল মঞ্জুর

আমাদের ইলমি-আমলি মারকাজ, আদর্শিক সংগ্রাম ও চেতনার সূতিকাগার দারুল উলুম দেওবন্দ। ইলমে নববীর আলোকধারায় উদ্ভাসিত, স্বচ্ছ ধারার ওলামা-মাশায়েখ তৈরি করা এবং ব্রিটিশবিরোধী আজাদি আন্দোলনের গতিধারা বেগবান করা ছিল ঐতিহ্যবাহী এই দীনি শিক্ষাকেন্দ্রের বুনিয়াদ রচনার অন্যতম প্রধান লক্ষ্য। 

১৮৫৭ সালে ব্রিটিশবিরোধী ঐতিহাসিক সিপাহী বিদ্রোহ সংঘটিত হয়। এর নয় বছর পর ১৮৬৬ সনের ৩০ মে দারুল উলুম দেওবন্দ প্রতিষ্ঠা এক ঐতিহাসিক তাৎপর্য বহন করে। যুগে যুগে বাতিল অপশক্তির যত চক্রান্ত সবই নস্যাৎ করতে দারুল দেওবন্দের ঈমানি চেতনাদীপ্ত সন্তানেরা এগিয়ে এসেছেন তেজোদৃপ্ত মনোবল নিয়ে। ইলমে দীনের প্রচার-প্রসার, ইসলামি তাহজিব-তামাদ্দুন এবং ইসলামি রাজনীতির বিকাশধারায় এটিই আমাদের সংগ্রামী চেতনার বাতিঘর।

হেরার জ্যোতি বিকিরণে ঈমানি চেতনার জাগরণে, ইসলামি আন্দোলন-সংগ্রামে আকাবিরে দেওবন্দের অসামান্য কোরবানির নজির ইতিহাসের অবিস্মরণীয় অধ্যায়। আকাবিরিন তথা পূর্বসূরিদের সংগ্রামী অবদানের ধারাবাহিকতায় ইসলামি শিক্ষা ও সভ্যতা-সংস্কৃতির বিকাশ, ঈমান-আমলের চর্চা, ইসলামি আন্দোলন-সংগ্রামের ধারা অবারিতকরণ, ঈমানদার দেশপ্রেমিক নাগরিক তৈরি, স্বাধিকার ও ঐতিহ্য চেতনাকে উজ্জীবিত করতে তারিখে দারুল দেওবন্দ এবং তাহরিকে দারুল উলুম দেওবন্দ আমাদের চেতনার দীপ্তি, প্রেরণার মশাল।

এমতাবস্থায় নবপ্রজন্মকে আজাদি আন্দোলন তথা মূল স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং ইলমে নববীর আলোকরশ্মি ছড়িয়ে দেওয়াসহ ইসলাম, উম্মাহ ও দেশের প্রকৃত কল্যাণে উলামায়ে দেওবন্দের ঐতিহাসিক অবদান সম্পর্কে জানিয়ে তাদেরকেও এপথে অনুপ্রাণিত করতে তারিখে দারুল দেওবন্দের আলোকে তাহরিকে দারুল উলুম দেওবন্দ (দেওবন্দ আন্দোলন) সম্পর্কে পড়ানো, জানানো অনিবার্য প্রয়োজন। কওমি সিলেবাসে ওলামায়ে দেওবন্দের স্বর্ণখচিত সংগ্রামী অধ্যায়গুলো জাতির সামনে তুলে ধরতে হবে।

উল্লেখ্য, দারুল উলুম দেওবন্দের নীতি -আদর্শ ও স্বকীয় বৈশিষ্ট্য অক্ষুণ্ন রেখেই কওমি মাদরাসার শিক্ষা সনদের সরকারি স্বীকৃতি দাবি ও বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এর যথার্থ কার্যকারিতাও আমাদের প্রাণের দাবি। আর স্বীকৃতির সুবাদে কোনোভাবেই যেন আমাদের মূল চেতনা ও অস্তিত্বে কোনো মহলই  আঘাত হানতে না পারে সে ব্যাপারেও সর্বোচ্চ সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। মনে রাখতে হবে, ইতিহাস আপন স্রোতে প্রবহমান, চেতনা আপন আলোয় দীপ্তিমান। কোনোক্রমেই ইতিহাসকে চেপে রাখা যায় না এবং চেতনাকে দমিয়ে রাখা যায় না।

লেখক: যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক, কক্সবাজার ইসলামী সাহিত্য ও গবেষণা পরিষদ

আরএইচ/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ