রবিবার, ০৮ জুন ২০২৫ ।। ২৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ ।। ১২ জিলহজ ১৪৪৬


মাওলানা আব্দুল হক জালালাবাদীর হজ ও কুরবানির স্মৃতি! 


নিউজ ডেস্ক

নিউজ ডেস্ক
শেয়ার
ছবি: সংগৃহীত

|| এহসান সিরাজ ||

১৯৮৬ সালে ছিল মাওলানা আব্দুল হক জালালাবাদী রহ.-এর প্রথম হজ। তিনি তখন কিশোরগঞ্জে জামিয়া ইমদাদিয়ার শিক্ষক। ওই হজের ব্যবস্থাপক ছিলেন খতিব মাওলানা উবায়দুল হক রহ.। সঙ্গে ছিলেন জামিয়া ইমদাদিয়ার প্রিন্সিপাল মাওলানা আযহার আলী আনোয়ার শাহ রহ., লালবাগ শাহী মসজিদের খতিব মাওলানা আমিনুল ইসলাম রহ., দৈনিক ইনকিলাবের প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা আবদুল মান্নান রহ. এবং তাঁর দুই ছেলে।

মাওলানা আব্দুল হক জালালাবাদী হজের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বলেন-
'মক্কায় পৌঁছার পর খতিব সাহেব রহ. আমাকে ও মাওলানা আনোয়ার শাহ সাহেবকে ডেকে বললেন, 'আমি তো তাদের গ্রুপে আটকা পড়ে গেছি। তারা এখানে আগেই বাসা নির্ধারণ করে রেখেছে। তোমাদের বাবে আবদুল আজিজের সম্মুখে আরও সহনীয় ভাড়ায় বাড়ি মিলবে। তোমরা কম খরচে ভালো ব্যবস্থাপনায় সেখানে থাকতে পারবে।

আমরা তাঁর দোয়ার বরকতে আবদুল আজিজ গেইট এলাকায় যেতেই সউদি মুআল্লিম খলিল আল্লাকের পাঁচ তলায় ভালো বাসা মিলে গেল। খতিব রহ. যদিও তাদের সঙ্গে চলে গেলেন, কিন্তু আমাদের সন্তুষ্টির জন্য প্রতিদিনই আমাদের পাঁচ তলার কামরায় চলে আসতেন এবং দুই তিন ঘণ্টা আরাম করে গোসল করে তাঁর কামরায় যেতেন। 

হজের সময় যখন আমরা মিনায় গেলাম খতিব সাহেব আমাদের গ্রুপে চলে এলেন। ১০ তারিখে কুরবানির জায়গায় উপস্থিত হয়ে ১৮০০ রিয়াল দিয়ে এক বিশাল গরু কিনে ফেললেন। কসাইকে বলে জবাইয়ের পর একটা পা আলাদা করালেন। বললেন, চল, মিনায় গিয়ে রান্না করবো এবং এ তিনদিন মজা করে এ বরকতের গোশত খাব। পা আলাদা হওয়ার পর খতিব সাহেব আনোয়ার শাহ সাহেবকে বললেন, আপনি হলেন শাহেন শাহ সাহেব আর আবদুল হক হলো দুর্বল, তাই পা'টি আমিই নিচ্ছি। এই বলে তিনি রক্তমাখা একটি পূর্ণ রান তাঁর কাঁধে তুলে নিলেন। বললেন, শহীদের রক্ত না হোক, কুরবানির রক্ত তো মাখাতে পারলাম। এতেই বা বরকত কম কোথায়? 

গরুর পা কাঁধে করে হাসতে হাসতে মিনায় চলে এলেন। রাতভর একাই কাটলেন ও রান্না করলেন। আমরা সবাই মিলে খেলাম। এটা হলো খতিব সাহেবের সফরে সাথীদের সঙ্গে আচরণ এবং সৌজন্যের এক ক্ষুদ্র উদাহরণ। 

তিনি ছিলেন নবীয়ে পাকের হাদিস سيد القوم خادمهم কওমের সর্দার হলেন সকলের খাদেম-এর বাস্তব উদাহরণ। হজের যাবতীয় কাজ শেষ হওয়ার পর খতিব সাহেব তাঁর সফরের কয়েকজন সঙ্গীসহ মিসরের আল আজহার ইউনিভার্সিটি, ইরাক, কুফা ও বসরা ইত্যাদি স্থানে ভ্রমণের জন্য তৈরি হয়ে আমাদের থেকে বিদায় নিয়ে গেলেন।'

এসএকে/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ