সোমবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ।। ৭ আশ্বিন ১৪৩২ ।। ৩০ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

শিরোনাম :
কাদিয়ানিদেরকে রাষ্ট্রীয়ভাবে অমুসলিম ঘোষণা করুন: সম্মিলিত খতমে নবুওয়াত পরিষদ গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রতিবাদে মরক্কোতে হাজারো মানুষের বিক্ষোভ দাওয়াত ও তাবলিগের নীরব বিপ্লব ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিলো যুক্তরাজ্য-কানাডা ও অস্ট্রেলিয়া গ্রেপ্তার এড়াতে বাস পাল্টায়, গন্ধে ১৪ কেজি গাঁজাসহ ধরা খেল তরুণী দুপুরের মধ্যে সাত অঞ্চলে ঝড়ের আভাস সত্তর হাজার কালেমা পড়লে কি মাগফিরাত পাওয়া যায়? ঢাবির হল রিডিংরুমে বসছে এসি, সংস্কার হবে ক্যান্টিনও: ডাকসু জিএস ধর্ষণে অন্তঃসত্ত্বা মাদরাসা ছাত্রী, অভিযুক্ত জামায়াতকর্মী গ্রেপ্তার. ইসলামকে একটি বার সুযোগ দেওয়ার অনুরোধ শায়খে চরমোনাইয়ের

কায়রোতে চলছে ৫৬তম আন্তর্জাতিক বইমেলা

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মিশরের রাজধানী কায়রোতে চলছে ৫৬তম আন্তর্জাতিক বইমেলা। গত ২৪ জানুয়ারী ২০২৫ বইমেলার উদ্বোধন হয়। মেলা চলবে ৫ ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত। মেলায় ফিলিস্তিনিদের উল্লেখযোগ্য উপস্থিতি, আল-আজহার আশ-শরীফের প্যাভিলিয়নে বিপুল জনসমাগম এবং নৈতিক ও পারিবারিক মূল্যবোধ সংরক্ষণের বিষয়গুলো গুরুত্ব পাচ্ছে।

মেলার প্রথম তিন দিনে ১,৩৪৫টি প্রকাশনা সংস্থার অংশগ্রহণ এবং দশ লক্ষ দর্শনার্থীর উপস্থিতি বইমেলার তাৎপর্যকে আরও উজ্জ্বল করেছে।

বিশ্বের ৮০টি দেশের মধ্যে কুয়েত এই প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণ করছে, যা মিশর ও কুয়েতের মধ্যে সাংস্কৃতিক সম্প্রীতিকে সুসংহত করছে। কুয়েতি প্যাভিলিয়নে আব্দুল আজিজ সৌদ আল-বাবতাইন সাংস্কৃতিক ফাউন্ডেশন এবং কুয়েতি তথ্য মন্ত্রণালয়ের কর্নারসহ বেশ কয়েকটি প্রকাশনা সংস্থা ছিল। জনসাধারণের উপস্থিতি ভালো হলেও বিক্রয় কার্যক্রম এখনো প্রত্যাশিত পর্যায়ে পৌঁছেনি।

আল-আজহার আশ-শরীফের প্যাভিলিয়নে বিশাল জনসমাগম লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বিশেষ করে সেমিনার, ফতোয়া, শিশু কার্যক্রম ও বিদেশি শিক্ষার্থীদের কোণে। এটি ফিলিস্তিনিদের জন্য সহায়তা ও ত্রাণের আউটলেট প্রদর্শন করছে। ফতোয়া কর্নারে পুরুষ ও মহিলা মুফতিদের উপস্থিতিতে দর্শনার্থীরা আইনশাস্ত্রীয় প্রশ্নের উত্তর নিচ্ছেন।

২৬ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত "ফিলিস্তিন: একটি জাতির ইতিহাস এবং একটি জনগণের সংগ্রাম" শীর্ষক সিম্পোজিয়ামে ফিলিস্তিনিদের স্বার্থ সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির আহ্বান জানানো হয়। এছাড়া, ফরাসি ইহুদি লেখক আলাইন গ্রেশের "প্যালেস্টাইন: আ পিপল দ্যাট রিফিউসেস টু ডাই" বইটির উপর আলোচনার মাধ্যমে দখলদার শক্তির অপরাধ উন্মোচিত হয়।

অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে বইয়ের মূল্য এক পাউন্ড থেকে শুরু রাখা হয়েছে, যাতে বইমেলা সর্বস্তরের মানুষের জন্য উন্মুক্ত থাকে।

মিশরীয় দার আল-ইফতার প্যাভিলিয়নে "বিবাহ: বিচ্ছেদের ধারণা এবং অধিকার ও কর্তব্য" শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে বিবাহকে সামাজিক ও ধর্মীয় চুক্তি হিসেবে ব্যাখ্যা করা হয়। এছাড়া, "নারী ও মেয়েদের জীবনে সাইবার সহিংসতার প্রভাব" এবং "সাংস্কৃতিক উন্নয়ন ও পারিবারিক সংলাপ" শীর্ষক সেমিনারে নতুন প্রজন্মকে সাংস্কৃতিক ও নৈতিক চরমপন্থা থেকে রক্ষার আহ্বান জানানো হয়।

৫৬তম কায়রো আন্তর্জাতিক বইমেলা শুধুমাত্র একটি প্রদর্শনী নয়, এটি সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক আলোচনার একটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে ফিলিস্তিন ইস্যু, পারিবারিক মূল্যবোধ সংরক্ষণ এবং নাস্তিকতার মোকাবিলা প্রদর্শনীর আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল।

মিশরে চলমান অর্থনৈতিক সংকটের পরিপ্রেক্ষিতে, আল-আজহার প্যাভিলিয়নের বইগুলো শুধুমাত্র মুদ্রণের খরচে বিক্রির ঘোষণা দেয়। এছাড়া সরকারি ও বেসরকারি প্রকাশনা সংস্থাগুলো বিশেষ ছাড়ের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। সরকারি সংস্থা 'জেনারেল ইজিপশিয়ান বুক অর্গানাইজেশন' বইয়ের উপর ৩০% পর্যন্ত ছাড় দিয়েছে, যেখানে কিছু বই মাত্র এক মিশরীয় পাউন্ডে বিক্রি হয়েছে।

মিশরীয় বিরোধী দল এবং স্বাধীন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বদের অনুপস্থিতি এবারের বইমেলায় লক্ষ্য করা গেছে। সরকারি নিয়ন্ত্রণের কারণে অনেক স্বাধীন প্রকাশনা সংস্থা নিষিদ্ধ হয়। 'দার আল মারায়া ফর কালচার অ্যান্ড আর্টস' তাদের অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ হওয়ার ঘোষণা দেয় এবং ফ্রিডম অফ থট অ্যান্ড এক্সপ্রেশন ফাউন্ডেশন মানবাধিকার লঙ্ঘনের সমালোচনা করে।

সরকারি মেলার পাশাপাশি কায়রো শহরে একটি সমান্তরাল বইমেলা অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে বইগুলোর উপর ৭০% পর্যন্ত ছাড় দেওয়া হয়। এই বিকল্প মেলাটি সরকারি নিয়ন্ত্রিত মেলার বাইরে নতুন সুযোগ তৈরি করেছে, যা অনেক দর্শনার্থীদের আকৃষ্ট করেছে।

হাআমা/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ