দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী ফিলিস্তিনের গাজায় যে বর্বর গণহত্যা চালাচ্ছে এর পরিপ্রেক্ষিতে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ‘সামর্থ্যবান মুসলমানদের ওপর জিহাদ ফরজ’ বলে সম্প্রতি ফতোয়া দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুসলিম স্কলার্স ইউনিয়ন (IUMS)। এবার একই ধরনের ফতোয়া দিলেন ইরানের শীর্ষ আলেমরা।
ইরানি গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, দেশটির বেশ কিছু শীর্ষ আলেম সম্প্রতি যৌথভাবে এক ফতোয়া জারি করেছেন, যেখানে তারা বিশ্বের সব মুসলমান ও মুসলিম-অধুষিত দেশগুলোকে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে জিহাদে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। এই আহ্বান এসেছে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ১৮ মাস ধরে চলা ভয়াবহ যুদ্ধ ও ধ্বংসযজ্ঞের পর।
ইরানের বিভিন্ন মসজিদের ইমামদের নীতিনির্ধারণী পরিষদের প্রধান হুজ্জাতুল ইসলাম হাজ আলী-আকবারি এক চিঠিতে লিখেছেন, ইসলামি বিশ্বের ইতিহাসে এমন অনেক জিহাদের ফতোয়া রয়েছে, যা মুসলিম ভূমিকে দখল ও উপনিবেশের হাত থেকে রক্ষা করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
হুজ্জাতুল ইসলাম বলেন, মুসলিম জাতিগুলোর সংগ্রামের ইতিহাসে উপনিবেশ ও দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে জারি হওয়া এক ঐতিহাসিক ফতোয়ার কথা স্মরণীয়। গত দুই শতাব্দীজুড়ে, বিশেষ করে যখন মুসলিম ভূমি দখলের মুখে পড়েছে, তখন সুন্নি ও শিয়া—উভয় ধারার শীর্ষ আলেমরা বহুবার জিহাদ ও উপনিবেশবিরোধী ফতোয়া জারি করেছেন, যা ইতিহাসে স্পষ্টভাবে প্রতিফলিত হয়েছে।
চিঠির শেষে তিনি আশা প্রকাশ করেন, এই গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগটি ইসলামি বিশ্বের আলেম, মুসলিম দেশগুলোর সরকার এবং বিশেষ করে মুসলিম উম্মাহ ও প্রতিরোধ আন্দোলনের সমর্থকদের কাছ থেকে ব্যাপক সমর্থন পাবে।
এদিকে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে জিহাদের ফতোয়ার কড়া সমালোচনা করেছেন মিসরের গ্র্যান্ড মুফতি ড. নাজির মুহাম্মদ আয়াদ। সোমবার (৭ এপ্রিল) মিসরের গ্র্যান্ড মুফতি বলেন, এমন একটি ফতোয়া শুধু মুসলিম বিশ্বের মধ্যে বিভেদ এবং উগ্রপন্থার উত্থান ঘটাতে পারে, যা বৈশ্বিক শান্তির জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। তিনি দাবি করেন, ফতোয়া ইস্যু করার সময় যাদের পক্ষে এই ধরনের সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা আছে, তাদের উচিত আরও চিন্তা-ভাবনা করা এবং ইসলামের প্রকৃত শিক্ষা অনুযায়ী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা, যাতে শান্তি এবং ঐক্য বজায় থাকে।
এসএকে/