রবিবার, ২৫ মে ২০২৫ ।। ১১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ ।। ২৭ জিলকদ ১৪৪৬

শিরোনাম :
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির আন্দোলনের সঙ্গে শায়খে চরমোনাইয়ের একাত্মতা নির্বাচন কমিশনের প্রতি আস্থা রয়েছে: খেলাফত আন্দোলন জিম্মি স্বজনদের প্রশ্ন ‘রাতের ঘুম হয় কীভাবে, মিস্টার নেতানিয়াহু?’ মুজাহিদ কমিটির ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি হলেন গিয়াস উদ্দিন খান ‘শিক্ষার্থীদের আকাশছোঁয়ার স্বপ্ন নিয়ে বড় হতে হবে’  ঝিনাইদহে মাদ্রাসা শিক্ষকদের প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান শিক্ষাখাতে বাজেট বাড়ানোসহ ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের ২০ দফা দাবি ইত্তেফাকুল উলামা বৃহত্তর মোমেনশাহীর নিজস্ব জমি ক্রয় এবার এমন নির্বাচন হবে যেখানে একটি ইতিহাস তৈরি হবে : জামায়াত আমির ‘গোষ্ঠী স্বার্থে বিরোধে জড়ালে সবার ধ্বংস অনিবার্য’ 

গাজায় চিকিৎসক মায়ের ৯ শিশু সন্তান নিহত

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

গাজায় একটি বাড়িতে ইসরায়েলের বিমান হামলায় একজন নারী চিকিৎসকের ১০ শিশু সন্তানের মধ্যে ৯ জনই মারা গেছে। ওই চিকিৎসক খান ইউনিসের নাসের হাসপাতালে কাজ করতেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ডা. আলা আল-নাজ্জারের স্বামী ও তাদের এক সন্তান আহত অবস্থায় বেঁচে গেছে। হাসপাতালের চিকিৎসক ব্রিটিশ সার্জন গ্রায়েমে গ্রুম বলেছেন, এটি অসহনীয় নিষ্ঠুরতা। বহু বছর ধরে শিশুদের জন্য কাজ করা একজন চিকিৎসক তার প্রায় সব সন্তান হারিয়েছেন। খবর-বিবিসি

এদিকে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী বলেছে, তারা শুক্রবার খান ইউনিসে সন্দেহভাজন কিছু জায়গায় বিমান হামলা চালিয়েছে। একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, ধ্বংসস্তূপ থেকে পোড়া দেহ উদ্ধার করা হচ্ছে। বিবিসি ছবিটির সত্যতা যাচাই করেছে।


আইডিএফ বলছে, খান ইউনিস একটি বিপজ্জনক যুদ্ধ এলাকা। অভিযান শুরুর আগে ওই এলাকা থেকে বেসামরিক নাগরিকদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছে তারা।

শনিবার এক বিবৃতিতে আইডিএফ বলেছে, গাজায় একশরও বেশি টার্গেটে তারা হামলা করেছে। এতে ৭৪ জন নিহত হয়েছে বলে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় দাবি করেছে।

মন্ত্রণালয়ের ডিরেক্টর ডা. মুনির আলবোরশ সামাজিক মাধ্যম এক্স এ জানিয়েছেন, আল-নাজ্জারের স্বামী তাকে কর্মস্থলে নামিয়ে বাসায় ফেরার পরপরই হামলাটি হয়। তাদের সবচেয়ে বড় সন্তানের বয়স ছিল ১২ বছর। শিশুদের বাবা নিজেও একজন চিকিৎসক, যিনি মারাত্মক আহত হয়েছেন। তিনি বলেন, শিশুদের বাবার কোন রাজনৈতিক বা সামরিক যোগসূত্র তো নয়ই, এমনকি তিনি সামাজিক মাধ্যমেও খুব একটা পরিচিত নন।

গ্রায়েমে গ্রুম বিবিসিকে বলেন, ওই দম্পতির যে সন্তানটি বেঁচে আছে তার বয়স ১১। তার বাঁ হাত প্রায় ঝুলে ছিল। ছোট ছেলেটি হয়তো বাঁচবে কিন্তু তার বাবার অবস্থা আমরা জানি না। গাজার সিভিল ডিফেন্সের মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল শুক্রবার টেলিগ্রামে জানিয়েছেন, হামলার পর আল-নাজ্জারের বাসা থেকে তারা আটটি মৃতদেহ ও আহত কয়েকজনকে উদ্ধার করেছেন।

প্রাথমিকভাবে হাসপাতাল থেকে আট শিশুর মৃত্যুর খবর দেওয়া হয়েছিল। দুই ঘণ্টা পর জানানো হয় যে, মোট নয়টি শিশু মারা গেছে সেখানে। আরেকজন চিকিৎসক ইউসেফ আবু আল-রিশ জানিয়েছেন, আল-নাজ্জারের পরিবারের পাশে দাঁড়াতে তিনিও অপারেশন রুমে এসেছিলেন। তাদের মধ্যে আত্মীয়তার সম্পর্ক রয়েছে।

বার্তা সংস্থা এএফপিকে তিনি বলেছেন: যথেষ্ট হয়েছে। আমাদের দয়া করুন। আমরা সব দেশ, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, জনগণ, হামাস এবং অন্য সবাইকে অনুরোধ করছি আমাদের ক্ষমা করুন। ঘরবাড়ি হারিয়ে, ক্ষুধায় আমরা বিপর্যস্ত।

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস শুক্রবার বলেছেন, গাজা যুদ্ধ 'সবচেয়ে নিষ্ঠুর অধ্যায়ে' আছে এখন। ত্রাণ কার্যক্রমের ওপর ইসরায়েলের অবরোধের নিন্দা করেছেন তিনি। ইসরায়েল চলতি সপ্তাহে অবরোধ কিছুটা তুলে নিয়েছে। দেশটির একটি সামরিক সংস্থা বলছে শুক্রবার ৮৩টি ট্রাকে করে খাবার ও ঔষধসহ জরুরি পণ্য গাজায় গেছে। জাতিসংঘ বারবার বলছে, যে পরিমাণ ত্রাণ যাচ্ছে তা ওই ভূখণ্ডের ২১ লাখ মানুষের প্রয়োজনের তুলনায় কিছুই নয়। তাদের মধ্যে প্রতিদিন ৫-৬শ ট্রাকের ত্রাণ নিয়ে যাওয়া দরকার।

অল্প পরিমাণ খাদ্যের কারণে গাজায় নৈরাজ্যময় পরিস্থিতি দেখা যাচ্ছে। ত্রাণবহরে সশস্ত্র হামলা হচ্ছে এবং রুটির জন্য দোকানে হামলে পড়ছে মানুষ। জাতিসংঘ চলতি মাসেই একটি দুর্ভিক্ষের ঝুঁকির কথা জানিয়েছে। সেখানকার অনেক মানুষ বিবিসিকে বলেছে, তাদের খাবার নেই এবং ক্ষুধাক্রান্ত অপুষ্ট মায়েরা তাদের শিশু সন্তানদের মাতৃদুগ্ধ পান করাতে পারছেন না। পানির সংকট তীব্রতর হয়েছে। আবার অভিযান অব্যাহত খাকায় বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যাও বাড়ছে। ইসরায়েলের দাবি হলো, হামাসের ওপর চাপ বাড়াতে তারা এ হামলা করছে। এছাড়া হামাস মানবিক সহায়তা চুরি করছে এমন অভিযোগও করেছে ইসরায়েল।

এনএইচ/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ