পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) এর প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খানের সম্ভাব্য মুক্তি নিয়ে ছড়ানো গুজবের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে জাতীয় দায়িত্ববোধ ব্যুরো (নেব) এবং সরকারি সূত্রগুলো। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বর্তমানে কোনো আদালতে এমন কোনো মামলা নেই যা ইমরান খানের মুক্তির সম্ভাবনা সৃষ্টি করতে পারে। তারা নিশ্চিত করেছেন যে, এখন পর্যন্ত এমন কোনো নোটিশ পায়নি যা ঈদের আগে তার জামিন বা মুক্তির কারণ হতে পারে।
সরকারি সূত্রগুলোও গুজবগুলোকে সম্পূর্ণ অস্বীকার করে স্পষ্ট করেছে যে, ইমরান খানকে কোনো ধরনের সমঝোতার প্রস্তাব দেওয়া হয়নি এবং তার মুক্তির জন্য কোনো গোপন ব্যবস্থা বা সমঝোতা বিবেচনাধীন নেই।
ইমরান খানের আইনজীবী নাঈম হায়দার পাঞ্জোথা শনিবার (৩১ মে) রাওয়ালপিন্ডিতে সন্ত্রাসবিরোধী আদালতের বাইরে সাংবাদিকদের জানান, ইমরান খানের তাৎক্ষণিক মুক্তির গুজব ভিত্তিহীন। তিনি বলেন, কোনো সমঝোতা হচ্ছে না এবং কোনো ধরনের নমনীয়তা প্রদর্শন করা হচ্ছে না; এই সব গুজব ভিত্তিহীন।
এই ব্যাখ্যাগুলোর পরেও কিছু পিটিআই নেতা এবং মিডিয়া বিশ্লেষক এখনো আশা রাখছেন যে, ইমরান খান ঈদের আগে জামিন পেতে পারেন। তাদের আশা ৫ জুন ইসলামাবাদ হাইকোর্টে অনুষ্ঠিতব্য শুনানির ওপর নির্ভর করছে, যেখানে ইমরান খান এবং তার স্ত্রী বুশরা বিবি তোশাখানা মামলায় তাদের সাজা স্থগিত করার জন্য আবেদন করেছেন।
তবে সূত্র জানিয়েছে, এখনো এই মামলায় কোনো নোটিশ জারি করা হয়নি। আইনি বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন যে, এই ধরনের আবেদনে সাধারণত প্রক্রিয়াগত কারণে বিলম্ব হয় এবং চূড়ান্ত স্বস্তি দেওয়ার আগে একাধিক শুনানি প্রয়োজন হয়।
অন্যদিকে, বর্তমান আইনি পরিস্থিতিও প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর জন্য তাৎক্ষণিক স্বস্তির ইঙ্গিত দেয় না। ইসলামাবাদ হাইকোর্ট সম্প্রতি স্পষ্ট করেছে যে, ইমরান খানের ১৯০ মিলিয়ন ডলার আল-কাদির ট্রাস্ট মামলায় ১৪ বছরের সাজা বিরুদ্ধে আপিল ২০২৫ সালে শোনা সম্ভব নয়।
হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার অফিস একটি ডিভিশন বেঞ্চে জমা দেওয়া প্রতিবেদনে জানিয়েছে যে, এই আপিল জানুয়ারি ২০২৫ সালে দায়ের করা হয়েছিল এবং এটি এখনো মোশন স্টেজে রয়েছে, যেখানে মামলাগুলোর শুনানির জন্য একটি নীতি রয়েছে, যা পুরানো মামলাগুলিকে অগ্রাধিকার দেয়।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, বর্তমানে ইসলামাবাদ হাইকোর্টে দণ্ডপ্রাপ্ত বন্দীদের ২৭৯টি আপিল মুলতবি রয়েছে, যার মধ্যে ৬৩টি মৃত্যুদণ্ড এবং ৭৩টি যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আপিল অন্তর্ভুক্ত। জাতীয় বিচারিক (নীতিনির্ধারক) কমিটির নির্দেশনায় পুরানো মামলাগুলোকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে, তাই ইমরান খানের আপিল বর্তমান ক্যালেন্ডার বছরে নিয়মিত শুনানির জন্য নির্ধারিত হয়নি।
সূত্র: রোজনামায়ে জং
এনএইচ/