বুধবার, ১৩ আগস্ট ২০২৫ ।। ২৯ শ্রাবণ ১৪৩২ ।। ১৯ সফর ১৪৪৭


গাজা সিটি দখল পরিকল্পনায় জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের তীব্র নিন্দা


নিউজ ডেস্ক

নিউজ ডেস্ক
শেয়ার
ছবি: সংগৃহীত

ইসরায়েলের নিরাপত্তা মন্ত্রিসভার গাজা সিটি দখলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের এক জরুরি বৈঠকে কঠোর প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতরা এই পরিকল্পনাকে ‘বিপজ্জনক’ ও আন্তর্জাতিক আইনের বড় লঙ্ঘন বলে উল্লেখ করে অবিলম্বে তা বাতিলের আহ্বান জানান।

রাশিয়ার জাতিসংঘস্থ স্থায়ী প্রতিনিধি দিমিত্রি পলিয়ানস্কি বলেন, ইসরায়েল এক বেপরোয়া পরিকল্পনার মাধ্যমে সংঘাত আরও তীব্র করতে চাইছে। সাম্প্রতিক কূটনৈতিক প্রচেষ্টায় হামাসের কাছ থেকে ১৪০ জনের বেশি জিম্মি মুক্ত হলেও, এখন ইসরায়েল সহিংসতার পথ বেছে নিয়েছে—যা মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ। তিনি প্রশ্ন তোলেন, এই হত্যাযজ্ঞ বন্ধের আগে আরও কত ফিলিস্তিনিকে প্রাণ দিতে হবে এবং যুক্তরাষ্ট্রকে অভিযুক্ত করেন যে, তারা ইসরায়েলকে গাজায় ‘পূর্ণ স্বাধীনতা’ দিচ্ছে।

চীনের রাষ্ট্রদূত ফু জানান, গাজার পরিস্থিতি এখন চরম সংকটাপন্ন। তিনি নিরাপত্তা পরিষদকে গাজা দখলের যেকোনো প্রচেষ্টা রুখে দিতে ও নতুন ইসরায়েলি অভিযান নিন্দা জানাতে আহ্বান জানান। সামরিক সমাধানকে তিনি অগ্রাহ্য করে গাজায় ত্রাণ প্রবেশের সব পথ খুলে দেওয়ার ওপর জোর দেন।

ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য, ডেনমার্ক, গ্রিস ও স্লোভেনিয়া যৌথ বিবৃতিতে এবং স্পেন, আইসল্যান্ড, আয়ারল্যান্ড, লুক্সেমবার্গ, মাল্টা, নরওয়ে, পর্তুগাল ও স্লোভেনিয়া পৃথক বিবৃতিতে এই পরিকল্পনার তীব্র নিন্দা জানায়। তারা সতর্ক করে যে, গাজা সিটি দখলের পদক্ষেপ মধ্যপ্রাচ্যের শান্তি প্রক্রিয়ায় বড় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবে।

মার্কিন রাষ্ট্রদূত জানান, যুক্তরাষ্ট্র জিম্মিদের মুক্তি ও গাজায় শান্তি প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, তবে এই জরুরি বৈঠক সেই প্রচেষ্টাকে বাধাগ্রস্ত করছে। তার দাবি, ইসরায়েল তিনবার যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিলেও হামাস তা প্রত্যাখ্যান করেছে এবং জিম্মি মুক্তি দিলে যুদ্ধ থামানো সম্ভব ছিল। তিনি কিছু সদস্য দেশের ‘গণহত্যার’ অভিযোগকে যুক্তরাষ্ট্রের দৃষ্টিতে অনুচিত বলে উল্লেখ করেন।

ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত রিয়াদ মনসুর বলেন, “ইসরায়েলের লক্ষ্য ফিলিস্তিনের জনগণকে ধ্বংস করে আমাদের ভূমি দখল করা।” তিনি নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যদের বক্তব্যকে স্বাগত জানালেও জোর দিয়ে বলেন, “এটি যথেষ্ট নয়, আপনাদের কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে এবং এই পরিকল্পনা বন্ধ করতে হবে।”

অন্যদিকে, ইসরায়েলের জাতিসংঘ প্রতিনিধি জোনাথন মিলার দাবি করেন, গাজা স্থায়ীভাবে দখলে রাখার কোনো পরিকল্পনা তাদের নেই। তিনি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর ঘোষিত পাঁচ দফা নীতি তুলে ধরেন—হামাসের নিরস্ত্রীকরণ, জিম্মিদের ফিরিয়ে আনা, গাজার বেসামরিকীকরণ, বাড়তি নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা, এবং হামাসকে বাদ দিয়ে বিকল্প বেসামরিক প্রশাসন গঠন।

এসএকে/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ