মুহাম্মদ মিজানুর রহমান ।। বাজারে অনেক ধরনের এবং স্বাদের বাদাম পাওয়া যায়। তবে স্বাস্থ্য সচেতন মানুষদের খাদ্য তালিকায় যেসব খাবার স্থায়ী জায়গা করে নিয়েছে, তার মধ্যে কাঠবাদাম (Almond) অন্যতম। বেশ দামি হলেও ছোট এই বাদামটি শুধু স্বাদের দিক থেকেই নয়, পুষ্টিগুণেও অসাধারণ। বিশেষজ্ঞরা কাঠবাদামকে বলেন “সুপারফুড”—যার উপকারিতা হৃদয় থেকে শুরু করে মস্তিষ্ক পর্যন্ত বিস্তৃত।
পুষ্টিগুণে ভরপুর
মানুষের শরীরের জন্য দরকারি বেশ কিছু পুষ্টি উপাদান কাঠ বাদাম থেকেই পাওয়া যায়। কাঠবাদামে রয়েছে একাধারে প্রোটিন, স্বাস্থ্যকর ফ্যাট (মনো-স্যাচুরেটেড), ফাইবার, ভিটামিন E, B2, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ফসফরাস ও আয়রন।
ওষুধিগুণ
কাঠবাদাম রক্তে খারাপ কোলেস্টেরল কমাতে, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে এবং ডায়াবেটিস মোকাবিলায় কার্যকর ভূমিকা রাখে। প্রাচীনকাল থেকেই কাঠবাদামকে বুদ্ধি বাড়ানোর খাবার হিসেবে দেখা হয়। এতে থাকা রিবোফ্ল্যাভিন ও এল-কার্নিটিন ব্রেইন সেলের ক্ষয় প্রতিরোধ করে, স্মৃতিশক্তি ভালো রাখে। সঠিক মাত্রায় কাঠবাদাম খেলে পেট ভরা থাকে দীর্ঘক্ষণ, ক্ষুধা কম লাগে এবং এটি ওজন কমাতে সহায়ক হতে পারে। ভিটামিন ই-এর কারণে এটি ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়, চুল মজবুত করে, এমনকি বিভিন্ন অ্যান্টি-এজিং ক্রিম ও তেলেও কাঠবাদামের নির্যাস ব্যবহৃত হয়।
সতর্কতা
কাঠবাদাম শরীরের জন্য উপকারী বলেই যে যত বেশি খাওয়া যাবে এমন নয়। পুষ্টিবিদরা বলছেন, প্রতিদিন ৫–৭টি কাঠবাদাম খাওয়া নিরাপদ। শুকনা কাঠবাদাম থেকে ভেজানো কাঠবাদম খাওয়া ভালো। বেশ কয়েকটি কাঠবাদাম রাতে ভিজিযে রেখে সকালে সেগুলো খেলে হজমে বেশ সহায়ক হয়। আর অতিরিক্ত খেলে ওজন বেড়ে যেতে পারে বা অ্যালার্জি হতে পারে।
কাঠবাদাম যেমন সুস্বাদু, তেমনি শরীর ও মনের জন্য উপকারী। পুষ্টিবিদদের মতে, ছোটদের বুদ্ধি বাড়াতে, বড়দের হৃদযন্ত্র সচল রাখতে এবং বয়সীদের হাড় শক্ত রাখতে কাঠবাদাম এক অনন্য উপাদান। স্বাস্থ্য সচেতন সমাজে কাঠবাদাম এক নীরব বিপ্লব এনেছে, যা আরও ছড়িয়ে পড়া উচিত।
এনএইচ/