রাতের নির্জনতায় অনেকেই মোবাইল স্ক্রিনে আটকে থাকেন—ইউটিউব দেখা, সোশ্যাল মিডিয়া স্ক্রল বা মেসেজ চেক করা। সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, এটি নিরীহ কোনো অভ্যাস নয়। বরং ধীরে ধীরে এটি ঘুম, মন এবং শরীরের ওপর ভয়ঙ্কর প্রভাব ফেলছে।
মোবাইলের নীল আলো: ঘুমের শত্রু
রাতের আলো কমলে মস্তিষ্ক থেকে ঘুম হরমোন মেলাটোনিন নিঃসৃত হয়। কিন্তু মোবাইল, ট্যাব বা ল্যাপটপের নীল আলো হরমোনের উৎপাদন কমিয়ে দেয়, ফলে ঘুম আসে দেরিতে, ঘুমের মান নষ্ট হয়। গবেষণায় দেখা গেছে, বিছানায় যাওয়ার আগে মাত্র ৩০ মিনিট মোবাইল ব্যবহার করলেও ঘুম আসে গড়ে ৪০ মিনিট বিলম্বে।
দীর্ঘমেয়াদে মানসিক ও শারীরিক ক্ষতি
নিয়মিত রাত জেগে মোবাইল ব্যবহার মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। উদ্বেগ, বিষণ্নতা, মনোযোগের অভাব এবং হঠাৎ মেজাজ পরিবর্তনের মতো সমস্যা দেখা দেয়। কিশোর-কিশোরীদের জন্য ক্ষতি আরও বেশি, কারণ এই বয়সে মস্তিষ্ক বিকাশমান।
শরীরের হরমোন ভারসাম্য নষ্ট হয়ে ওজন বৃদ্ধি, রক্তচাপ বৃদ্ধি ও হৃদরোগের ঝুঁকি তৈরি হয়। ধীরে ধীরে মস্তিষ্কে আসক্তির মতো কার্যকলাপ তৈরি হয়, ফলে মোবাইল ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে পড়ে।
ঘুম ও স্বাস্থ্য রক্ষার সহজ উপায়
বিছানায় যাওয়ার ১ ঘণ্টা আগে স্ক্রিন বন্ধ করুন। নাইট মোড বা নীল আলো ফিল্টার ব্যবহার করুন। ফোন ঘুমের ঘরের বাইরে রাখুন। নোটিফিকেশন বন্ধ রাখুন। দিনে সূর্যের আলোয় থাকা ও নিয়মিত ব্যায়াম করুন।
বিজ্ঞান এখন নিশ্চিত করেছে—রাতের অন্ধকার ঘুমের বন্ধু, আর স্ক্রিনের আলো তার শত্রু। সুস্থ ও স্থির থাকতে আজই শুরু করুন ‘স্ক্রিন অফ’ অভ্যাস।
এনএইচ/