সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫ ।। ৮ বৈশাখ ১৪৩২ ।। ২৩ শাওয়াল ১৪৪৬


‘ইজতিমা ময়দানে নিষ্ঠুর হত্যাযজ্ঞে জড়িত সকল আসামীকে অবিলম্বে গ্রেফতার করুন’

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

দেশের বৃহৎ ও প্রাচীন দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান উম্মুল মাদারিস দারুল উলূম হাটহাজারী মাদ্রাসার সদরুল মুদাররেসীন ও শায়খুল হাদীস, প্রবীণ আলেম আল্লামা শেখ আহমদ সাদপন্থী কর্তৃক টঙ্গির ইজতিমা ময়দানে ঘুমন্ত ও ইবাদতরত তাবলীগের মুসল্লীদেরকে হত্যাকাণ্ড ও হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বে ইজতিমা মাঠে নিষ্ঠুর হত্যাযেজ্ঞে জড়িত সকল আসামীকে গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন।

শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) বিকেলে প্রদত্ত বিবৃতিতে তিনি বলেন, খবরে দেখেছি রাতের আঁধারে টঙ্গির ইজতিমা ময়দানে হত্যাকাণ্ডের অন্যতম আসামী ও পরিকল্পনকারী মোয়াজ বিন নুরকে গ্রেফতার করে ৭ দিনের রিমাণ্ড চাওয়া হয়েছে। কিন্তু আর কোন আসামীকে গ্রেফতারের খবর পাওয়া যায়নি। হত্যাকাণ্ডের দুই দিন পার হয়ে গেছে, অথচ আসামীদের গ্রেফতারে উল্লেখযোগ্য তৎপরতা ও অগ্রগতি নেই। প্রশাসনের নাকের ডগায় আসামীদের অনেকেই প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন ও আস্ফালন দেখিয়ে যাচ্ছেন। এটা খুবই হতাশাজনক।

বর্ষীয়ান আলেম আল্লামা শেখ আহমদ সরকার ও প্রশাসনের প্রতি টঙ্গি হত্যাকাণ্ডের আসামিদের দ্রুত গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে বলেন, টঙ্গির নিষ্ঠুর ঘটনায় পুরো দেশবাসী স্তম্ভিত ও বিক্ষুব্ধ। দেশবাসী এই ঘটনায় অপরাধীদের গ্রেফতারে সরকারের কার্যকর তড়িৎ আইনি পদক্ষেপ দেখতে চায়। অন্যথায় আলেম সমাজ, তাওহীদি জনতাসহ দেশবাসীর কাছে সরকার সম্পর্কে ভুল বার্তা যাবে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে তাবলীগ জামাতে কোন পক্ষ নেই। উলামায়ে কেরামের নেতৃত্বাধীন শূরায়ে নেজামের মাধ্যমে পরিচালিত জামাতের মাধ্যমেই বাংলাদেশে তাবলীগের সকল কর্মকাণ্ড পরিচালিত হবে। কাকরাইলে কেন্দ্রীয়ভাবে তাবলীগের কার্যক্রম একমাত্র তারাই পরিচালনা করবেন। টঙ্গির বিশ্ব ইজতিমা ময়দানে শূরায়ে নেজামের তত্ত্বাবধানেই ইজতিমা অনুষ্ঠিত হবে। এই শূরায়ে নেজামের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত জামাতের সাথেই দেশের আলেম সমাজ, মাদ্রাসা ছাত্র ও দ্বীনদার মুসলমানরা আছেন। এছাড়া তাবলীগে কোন পক্ষ নেই। কোন সন্ত্রাসী, আধিপত্যবাদি অপশক্তির দালাল ও ফ্যাসিবাদের এজেন্টের স্থান তাবলীগ জামাতে নেই।

শায়খুল হাদীস আল্লামা শেখ আহমদ বলেন, ভারতের আগ্রাসী হিন্দুত্ববাদি শক্তি ভারতীয় উপমহাদেশব্যাপী বৃহত্তর হিন্দু রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দিবাস্বপ্ন থেকে অত্র অঞ্চলে ইসলাম ও মুসলমানদেরকে দাবিয়ে রাখতে একের পর এক নানান ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে নিরবে ও সুশৃঙ্খলভাবে ইসলামের প্রচার-প্রসার ও দাওয়াহ কাজ চালিয়ে যাওয়া প্রভাবশালী ও বৃহৎ ঐক্যবদ্ধ সংগঠন তাবলীগ জামাতে বিভেদ, সন্দেহ ও বিবাদ ঘটিয়ে দুর্বল করার মিশনও তারা হাতে নেয়। ভারতের প্রেসক্রিপশনের পাশাপাশি ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উৎখাত হওয়া ফ্যাসিবাদি সরকারও ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ বিরোধী ইসলামপন্থীদের মাঝে বিভেদ, বিবাদ ও বিশৃঙ্খলা তৈরি করে নিজেদের ক্ষমতাকে হুমকিমুক্ত রাখতে বাংলাদেশেও তাবলীগের সংকট সৃষ্টি এবং এই সংকটকে জিইয়ে রাখার কৌশল গ্রহণ করে। অথচ ইতিহাস পর্যালোচনায় দেখা যায়, তাবলীগ জামাতের কার্যক্রম প্রচলনের শুরু থেকে ২০১৬ সালের আগ পর্যন্ত তাবলীগ জামাতে মতাদর্শগত কোনরূপ বিভেদ ছিল না।

তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদি সরকারের পতনের পর বিচারক লীগ, আনসার লীগ, গার্মেন্টস লীগ, রিক্সা লীগ, ছাত্রলীগ, ইসকন লীগের মাধ্যমে বিপ্লব ও জন অভ্যুত্থানকে নস্যাত করা এবং অন্তবর্তী সরকারকে ব্যর্থ করার দেশবিরোধী নানা চক্রান্তের মতোই ভারতের মদদপুষ্ট ফ্যাসিবাদিরা তাবলীগের কথিত সাদপন্থী বা এতাতি গোষ্ঠিকে দিয়েও একটা বড় গোলযোগের ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। এই এতাতীদের সম্মুখসারির প্রায় সকলেই ফ্যাসিবাদের ঘোর সমর্থক ও ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত। সাধারণ ছাত্র-জনতা ও প্রশাসনকে দেশবিরোধী এই এতাতি গোষ্ঠির বিরুদ্ধে সোচ্চার ও সতর্ক থাকতে হবে।

হাআমা/


সম্পর্কিত খবর



সর্বশেষ সংবাদ