বুধবার, ০৭ মে ২০২৫ ।। ২৪ বৈশাখ ১৪৩২ ।। ৯ জিলকদ ১৪৪৬

শিরোনাম :
সামরিক হামলার নিন্দা জানিয়ে শান্তিপূর্ণ সমাধানের আহ্বান তারেক রহমানের ভারতকে যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা বন্ধ করতে হবে: ইসলামী মুক্তিযোদ্ধা পরিষদ হজযাত্রীদের সবধরনের সুবিধা দেওয়ার নির্দেশ সৌদি যুবরাজের নারী কমিশন ইসলামিক চিন্তাবিদদের সমন্বয়ে পুনর্গঠন করতে হবে ইসলামী ঐক্যজোটের সঙ্গে সংলাপে বসছে ইসলামী আন্দোলন আইসক্রিম খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য কতটা ভালো? অধিকাংশ সংস্কার প্রস্তাবে ইসলামী আন্দোলনের ঐকমত্য, কয়েকটিতে দ্বিমত কোনো সন্ত্রাসী যেন দেশে প্রবেশ করতে না পারে: আইজিপি পল্টনে কুরআন শিক্ষা বোর্ডের কার্যকরী সদর দফতর উদ্বোধন পরিবারের ১০ সদস্য হারিয়ে বললেন- ‘আমিও যদি সুখী কাফেলায় শরিক হতাম!’

বিএনপি ছেড়ে কেন ইসলামী আন্দোলনে সাবেক এমপি মোস্তাফিজ?

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

বিশেষ প্রতিনিধি

বিএনপি থেকে নির্বাচিত সাবেক সংসদ সদস্য এবং পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি অধ্যাপক মো. মোস্তাফিজুর রহমানের শতাধিক নেতাকর্মী নিয়ে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশে যোগ দেওয়ার ঘটনায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার (৬ মে) ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাইয়ের হাতে আনুষ্ঠানিকভাবে দল বদলের ঘোষণা দেওয়ার পর থেকে এটি দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে টক অব দ্য কান্ট্রিতে পরিণত হয়েছে। বিএনপির মতো একটি বড় দল, যাদের আগামীতে ক্ষমতায় যাওয়ার সম্ভাবনা উজ্জ্বল সেখানে তার দল ছেড়ে আসা নিয়ে অনেকের মনে কৌতূহল দেখা দিয়েছে। 

দল ছাড়ার কারণ ব্যাখ্যা করে  মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আমি বিএনপিতে নিষ্ক্রিয় ছিলাম। বর্তমান প্রেক্ষাপটে আমি মনে করি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সঠিক রাজনীতি করছে। জীবনের শেষ বয়সে এসে মানুষের জন্য কিছু করে যেতে পারি এজন্যই আমি ইসলামী আন্দোলনে যোগ দিয়েছি।

আগামী নির্বাচন করবেন কি না এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, প্রার্থী হিসেবে ইসলামী আন্দোলনের কাছে আমি মনোনয়ন চাইব। দল যদি আমাকে যোগ্য মনে করে তাহলে পটুয়াখালী-৪ আসন থেকে নির্বাচন করব।

তবে তার দল বদলের বিষয়টিকে স্বাভাবিকভাবে নিতে পারছেন না স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা। তারা তাকে স্বার্থান্ধ বলে আখ্যায়িত করছেন। 

কলাপাড়া পৌর বিএনপির সভাপতি গাজী মো. ফারুক বলেন, তার (অধ্যাপক মো. মোস্তাফিজুর রহমান) বরাবরই স্বার্থের প্রতি দুর্বলতা ছিল। শুরু থেকেই তার কথা ছিল, দলে পোস্ট পজিশন পেলে থাকবেন, না পেলে চলে যাবেন। উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি বলেছিলেন আমি সবার ভোটে নির্বাচিত হয়েছি, দল আমার কাছে কিছু না। সব সময় স্বার্থই তার কাছে বড় ছিল।

কলাপাড়া উপজেলা যুবদলের যুগ্ম-আহ্বায়ক জুয়েল সিকদার বলেন, অধ্যাপক মো. মোস্তাফিজুর রহমান যখন সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন তখনই শুধু ধানের শীষে ভোট দিয়েছেন। এছাড়া তিনি কখনো ধীনের শীষ প্রতীকে ভোট দেননি। বিএনপির জন্য তিনি অনেক কিছুই পেয়েছেন, কিন্তু তিনি সব সময় নিজের স্বার্থই দেখেছেন। তার চলে যাওয়ায় দলের কোনো সমস্য হবে না ইনশাআল্লাহ।

কলাপাড়া উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক গাজী রুহুল আমিন বলেন, মোস্তাফিজুর রহমান যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এটা একেবারেই আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত। তিনি কোনো সময়ই দলের নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন করেননি। তার কাছে তার স্বার্থই ছিল সবচেয়ে বড়। তিনি চলে যাওয়ায় আমাদের দলের মধ্যে কোনো প্রভাব পড়বে না।

তবে তাকে বরণ করে নিয়েছেন ইসলামী আন্দোলনের স্থানীয় নেতারা। ইসলামী আন্দোলন কলাপাড়া উপজেলা শাখার সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট জেড এম কাওসার বলেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সদস্য ফরম পূরণ করে এবং দলের আমির মুফতি সৈয়দ ফজলুল করিমের হাতে হাত রেখে তিনি  যোগদান করেছেন। ইসলামের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে এবং ইসলামের পক্ষে কাজ করার লক্ষ্যে তার এ সিদ্ধান্ত।

অধ্যাপক মো. মোস্তাফিজুর রহমান ১৯৮১ সালে বিএনপিতে যোগ দেন। ১৯৮৮ সালে বিএনপির সমর্থন নিয়ে তিনি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নেন। নির্বাচনে জাতীয় পার্টি এবং আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে পরাজিত করে জয়লাভ করেন। ১৯৯০ সালে অধ্যাপক মো. মোস্তাফিজুর রহমান কলাপাড়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত সংসদ নির্বাচনে বিএনপির হয়ে অংশগ্রহণ করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। ২০০১ সালে সংসদ নির্বাচনে বিএনপির টিকিট না পেয়ে ঘড়ি প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহন করে পরাজিত হন। এসময় বিএনপির হাই কমান্ড তাকে দল থেকে বহিষ্কার করে।

২০০৮ সালে ফখরুদ্দীন-মঈনুদ্দীনের আমলে তিনি ফের বিএনপিতে ফিরে আসেন। তবে দলে তার পূর্বের অবস্থান আর ফিরে পাননি। ২০০৮ সালে বিএনপির সমর্থন নিয়ে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন অধ্যাপক মো. মোস্তাফিজুর রহমান। নির্বাচনে জিতে তিনি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। পরে দীর্ঘদিন তিনি বিএনপিতে নিষ্ক্রিয় ছিলেন। সবশেষ কমিটিতে ঠাঁই পেলেও অনেকটা অবহেলিত ছিলেন। মূলত সেই অবহেলা থেকেই তিনি দল পাল্টানোর সিদ্ধান্ত নেন।

এনএইচ/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ