|| মাওলানা উবায়দুর রহমান খান নদভী ||
অন্তর্বর্তী সরকার মুক্তিযুদ্ধের সংজ্ঞা দিয়েছে। এতে কিছু রাজনৈতিক দলকেও যুক্ত করা হয়েছে।
১. পাকিস্তান আর্মির পাশাপাশি এসব রাজনৈতিক দলের সব নেতাকর্মীও কি সশস্ত্র যুদ্ধ করেছিল? এদের সংখ্যা কত হবে? যাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধই ছিল মুক্তিযুদ্ধ।
তাহলে পাক বাহিনীর ৯৩ হাজার সদস্যের বিচার না করে তাদের সবাইকে ইন্ডিয়ার মধ্য দিয়ে পাকিস্তান ফিরে যেতে দেওয়া হলো কেন? মূল যোদ্ধাদের বাদ দিয়ে তাদের সমর্থকদের বিচার করা কি যৌক্তিক ছিল?
আমার জানা মতে, রেজাকার, আলবদর নামে আর্মির সহযোগী স্বেচ্ছাসেবক কিছু সংগঠন ছিল। এটি শুধু উল্লিখিত দলগুলো দিয়ে গঠিত ছিল না। সরকারি গেজেট ও দলিল অনুযায়ী আওয়ামী লীগের বহু লোকের নাম রেজাকার হিসাবে প্রমাণিত আছে।
২. কিন্তু দীর্ঘ বছর পূর্ব বাংলায় ইন্ডিয়ার ডিজাইনে শোষণ ও চক্রান্ত বিরোধী যেসব ইসলাম ও মুসলিম শব্দযুক্ত দল রাজনৈতিকভাবে আওয়ামী লীগের সাথে ভিন্নমত পোষণ করত তাদেরকে সরাসরি পাক আর্মির সঙ্গে ট্যাগ করে দেওয়া কি ঠিক হলো?
অন্য কথায় ১৯৭০ এর নির্বাচনে যারা আওয়ামী লীগকে ভোট দেননি, তারাই তো উল্লিখিত দলের নেতাকর্মী সমর্থক ও ভোটার। তারা তো আওয়ামী লীগকে পাকিস্তানের ক্ষমতায় দেখতে চাননি বলে ভোট দেননি। এটি তো বাংলাদেশ হওয়া না হওয়ার নির্বাচন ছিল না। এদের সবাইকে কোন যুক্তিতে আর্মির সঙ্গে ট্যাগ করতে হবে?
৩. ইন্ডিয়া ও আওয়ামী লীগের সাথে ভিন্নমত পোষণ করে পাকিস্তানের সমর্থক আমেরিকা ও চীনের দ্বারা প্রভাবিত সেকুলার ও সোশালিস্ট অথচ পাকিস্তান সমর্থক রাজনৈতিক কোনো দলের নাম আর্মির সাথে না থাকার কারণ কী হতে পারে?
শুধু ঢালাওভাবে ইসলাম ও মুসলিম নামওয়ালা দলের নাম আর্মির সাথে দেওয়া হলো কেন? এটা কি ইসলাম বিদ্বেষ ও চিরাচরিত বৈষম্য থেকে উদ্ভুত?
ইতিহাসের বাস্তবতা বিস্তারিত জানার জন্য লেখা।
লেখক: সিনিয়র সাংবাদিক, কলামিস্ট ও রাষ্ট্রচিন্তক
এমএইচ/