রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কোনো আলোচনা ছাড়াই বাংলাদেশে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের অফিস স্থাপনের বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের অনুমতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত ন্যায়ানুগ হয়নি বলে মনে করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ। এই অফিস স্থাপনে বিএনপিও উদ্বিগ্ন বলে জানিয়েছেন তিনি।
সোমবার (২৮ জুলাই) দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির শফিকুল কবির মিলনায়তনে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের উদ্যোগে ‘ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের অফিসসংক্রান্ত চুক্তিকে কেন্দ্র করে করণীয় নির্ধারণ’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
সালাহউদ্দিন বলেন, বাংলাদেশের সংস্কৃতি, ধর্মীয় সংস্কৃতি কী অ্যালাউ করে আর কী করে না, সে বিষয়গুলো বিবেচনায় রাখা উচিত। এদেশের মানুষ এলজিবিটিকিউ মেনে নেবে না। এটা রাষ্ট্রের অখণ্ডতার জন্য হুমকি হবে। দেশের পারিবারিক বন্ধন, হাজার বছরের সংস্কৃতি ধরে রাখতে হবে।
বিএনপি নেতা বলেন, জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের অফিস স্থাপনের বিষয়ে আমরাও উদ্বিগ্ন। বাংলাদেশের চেয়ে ফিলিস্তিনসহ অনেক দেশে বেশি মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে, সেসব দেশে এই অফিস স্থাপন হয়নি।
সালাহউদ্দিন বলেন, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার সময়ে দেশে ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেছে। একটি পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, গুম, খুন, বিচারবহির্ভূত হত্যাসহ নানাভাবে ৭ হাজার ৮৬১ জন নির্যাতিত হয়েছেন। এটা প্রকৃত সংখ্যা নয়। শাপলা চত্বরের হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। সেখানে কতজন হত্যাকাণ্ড হয়েছে তার সঠিক পরিসংখ্যান পাওয়া যায়নি। চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের সময় ব্যাপক হত্যাকাণ্ড ও মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে। এসব কারণে জাতিসংঘ মনে করেছে, এখানে একটি অফিস স্থাপন করা উচিত।
এসময় বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির ও হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা করে সরকার যদি তাদের দৃষ্টিভঙ্গি খোলাসা করে তাহলে হেফাজত তাতে স্বাগত জানাবে। তবে দেশ ও ইসলামের স্বার্থে আমরা কারও দিকে তাকিয়ে কথা বলতে পারব না। এ বিষয়ে শক্ত অবস্থান নিতে হেফাজত কুণ্ঠিত হবে না।
হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব আল্লামা সাজিদুর রহমানের সভাপতিত্বে ও যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদীর পরিচালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন সংগঠনটির নায়েবে আমির মাওলানা আব্দুর রব ইউসূফী, মাওলানা সালাহউদ্দিন নানুপুরী, মাওলানা মাহফুজুল হক, এবি পার্টির সভাপতি মজিবুর রহমান মঞ্জু, গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নূর, হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দিন আহমদ প্রমুখ।
এমএইচ/