দেশ ও ইসলামের স্বার্থে কারও চেহারার দিকে কথা বলার সুযোগ নেই বলে মনে করেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব এবং বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির (ইবনে শাইখুল হাদিস) মাওলানা মামুনুল হক। জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের দপ্তর খোলার ইস্যুতে হেফাজত শক্ত অবস্থান গ্রহণ করতে কুণ্ঠিত হবে না বলে জানিয়েছেন তিনি।
সোমবার (২৮ জুলাই) ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটিতে ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের অফিসসংক্রান্ত চুক্তিকে কেন্দ্র করে করণীয় নির্ধারণ শীর্ষক হেফাজতে ইসলাম আয়োজিত গোলটেবিল আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
মাওলানা মামুনুল হক বলেন, বাংলাদেশের ধর্মীয় ইস্যু ও স্বাধীনতা ইস্যুতে পর্যবেক্ষণে রাখা হেফাজতের দায়িত্বের অন্তর্ভুক্ত। জাতির সেই আস্থার জায়গা থেকে হেফাজতে ইসলামের কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণ করতে হয়।
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ সর্বপ্রথম বাংলাদেশে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় পরিচালনার তীব্র বিরোধিতা করেছে। হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ এই বিষয়ে তার তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করার পর সরকারের বিষয়ে বেশ কয়েক দফায় আলোচনায় উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। সর্বশেষে প্রধান উপদেষ্টা হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ এবং শীর্ষ আলেমদের সাথে বৈঠক করেন। উক্ত বৈঠকে হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির হাটহাজারী মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা খলিল আহমদ কুরাইশিসহ শীর্ষ নেতৃবৃন্দ ছিলেন।
মামুনুল হক বলেন, সেখানে আমরা দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলেছি, সরকারের এই কাজের দায় কোনোভাবেই হেফাজতে ইসলাম এবং বাংলাদেশের আলেম সমাজ নেবে না বরং গণমানুষের শঙ্কার জায়গায় হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ তাদের শক্ত অবস্থান ও ভূমিকা অব্যাহত রাখবে। আমরা সেদিন সুস্পষ্টভাবে সরকারকে আমাদের পরামর্শ ও মতামত জানিয়ে দিয়েছি।
ইবনে শাইখুল হাদিস বলেন, আমরা সরকারকে বার্তা দিয়েছি যে, এই বিষয়ে দেশের সকল অংশীজন বিশেষ করে সকল রাজনৈতিক দলের কাছে আপনাদের অবস্থান ও ভূমিকা স্পষ্ট করতে হবে। এরপর সম্মিলিত সিদ্ধান্তকেই হেফাজতে ইসলাম স্বাগত জানাবে। এটাই হলো এই বিষয়ে এই পর্যন্ত হেফাজতের নীতি ও দৃষ্টিভঙ্গি।
তিনি আরও বলেন, আজকের এই গোলটেবিল বৈঠকে এই বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ মতামত এসেছে। হেফাজতে ইসলাম এই মতামতকে নেয়ামক হিসেবে মূল্যায়ন করবে।
তিনি স্পষ্ট ভাষায় বলেন, দেশ ও ইসলামের স্বার্থে আমরা কারো চেহারার দিকে তাকিয়ে কথা বলতে পারবো না। দেশ ও ইসলামের স্বার্থে শক্ত অবস্থান গ্রহণ করতে হলে ইনশাআল্লাহ সেক্ষেত্রে হেফাজতে ইসলাম বিন্দুমাত্র কুণ্ঠিত হবে না। পাশাপাশি বিগত ফ্যাসিস্ট রেজিম হাসিনার পৃষ্ঠপোষকতাকারী আমাদের পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্রের ষড়যন্ত্রের বিষয়টিও আমাদের মাথায় রাখতে হবে।
মাওলানা মামুনুল হক বলেন, ফ্যাসিস্ট হাসিনার পৃষ্ঠপোষকতাকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তথা মিডিয়ার বিরাট একটি অংশের সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অতি উৎসাহ উদ্বেগের নতুন মাত্রা সৃষ্টি করেছে। এই তিনটি বিষয়ে সামনে রেখেই আগামীতে আমরা পদক্ষেপ গ্রহণ করবো।
এমএইচ/