আওয়ার ইসলাম: রাম জন্মভূমি-বাবরি মসজিদের বিতর্কিত জমি নিয়ে মামলায় ভারতের সুপ্রিম কোর্টে সর্বশেষ শুনানি হয় গত ১১ জানুয়ারি। সেদিন বিচারপতি ইউ ইউ ললিত ওই মামলা থেকে নিজেকে সরিয়ে নেন। কারণ, অতীতে তিনি অযোধ্যা সংক্রান্ত একটি মামলায় আইনজীবী ছিলেন। তিনি সরে যাওয়ার পরে মামলায় নতুন বেঞ্চ গঠন করার প্রয়োজন হয়। শুক্রবার (২৫ জানুয়ারি) প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ সেই বেঞ্চ গঠন করেছেন। আগামী মঙ্গলবার সেই বেঞ্চ ঠিক করবে, কবে অযোধ্যা মামলার শুনানি শুরু হবে এবং কতদিন অন্তর শুনানি হবে।
এদিন প্রধান বিচারপতি দু’জন নতুন বিচারপতিকে অযোধ্যা বেঞ্চে যুক্ত করেন। তারা হলেন– বিচারপতি অশোক ভূষণ এবং বিচারপতি আবদুল নজর। এর আগে যখন সাবেক প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের নেতৃত্বে অযোধ্যা বেঞ্চ গঠিত হয়েছিল, তখনও ওই দুই বিচারপতি বেঞ্চের সদস্য ছিলেন। প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ এদিন নতুন যে বেঞ্চ গঠন করেছেন, তার আরও দুই সদস্য হলেন বিচারপতি এস এ বোবদে এবং বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়। এর আগে ১০ জানুয়ারি যে বেঞ্চের সামনে অযোধ্যা মামলার শুনানি হয়েছিল, তার সদস্য ছিলেন বিচারপতি এন আর রমানা। তিনি নতুন বেঞ্চের সদস্য হননি।
বিচারপতি ইউ ইউ ললিত অযোধ্যা সংক্রান্ত একটি মামলায় উত্তরপ্রদেশের সাবেক রাজ্যপাল কল্যাণ সিং-এর কৌঁসুলি ছিলেন। তাই নিজে এই মামলা থেকে সরে গিয়েছেন।
বাবরি মসজিদের অবস্থান উত্তরপ্রদেশের ফৈজাবাদে৷ হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের একাংশের দাবি, যেখানে মসজিদ গড়ে তোলা হয়েছে সেই জায়গাটি ছিল রামের জন্মভূমি, তা ভেঙে মসজিদ বানানো হয়৷ ১৯৯২ সালে বিজেপি সরকার ক্ষমতাসীন থাকার সময়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় বাবরি মসজিদ৷ প্রাণ হারায় ২ হাজার মানুষ৷ এ নিয়ে হিন্দু-মুসলিম বিরোধ বহুদিনের। ভারতের উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের প্রাচীন শহর অযোধ্যার ওই বিতর্কিত স্থানটি কোন সম্প্রদায়ের দখলে থাকবে, তা নিয়ে মামলা চলছে ৬০ বছর ধরে। ২০১০ সালে এলাহাবাদ হাইকোর্টের তিন বিচারপতির সমন্বয়ে গঠিত প্যানেল বাবরি মসজিদের ভূমি তিন ভাগে ভাগ করে বণ্টনের আদেশ দেয়। আদালতের নির্দেশনায় মুসলিম ওয়াকফ বোর্ড, নিরমাজি আখড়া আর রামনালা পার্টিকে সেখানকার ২.৭ একর জমি সমানভাগে ভাগ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে। হিন্দু-মুসলিম দুই পক্ষই সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে আপিল করেছিল।
কেন্দ্রে শাসক বিজেপির নেতাদের একাংশ এবং কয়েকটি হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের দাবি, স্পেশ্যাল এক্সিকিউটিভ অর্ডার অথবা অধ্যাদেশ জারি করে ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগেই বিতর্কিত জমিতে মন্দির নির্মাণ শুরু করে দেওয়া হোক। কিন্তু কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদী সরকার স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্ত অনুযায়ীই কাজ হবে।
সুপ্রিম কোর্টে অনেকে আর্জি জানিয়েছিলেন, মামলাটির শুনানি দ্রুততর হোক। কিন্তু গত বছর দেশটির সর্বোচ্চ আদালত সেই দাবি নাকচ করে দেন। পরে ফের সুপ্রিম কোর্টে ওই আর্জি জানানো হয়।
কেপি