আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: করোনা পরিস্থিতিতে প্রায় দেড় বছর বন্ধ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। একই সঙ্গে মহামারিকালে কাজ হারিয়েছেন কর্মক্ষম অনেক মানুষ। এই পরিস্থিতিতে শিক্ষা ও কর্মসংস্থানের ক্ষতি কাটাতে সরকারকে উদ্যোগী হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। এ জন্য নয় দফা সুপারিশ করেছে দুর্নীতি বিরোধী সংস্থাটি।
আন্তর্জাতিক যুব দিবস উপলক্ষে বুধবার এক বিবৃতিতে এ কথা জানানো হয়। ১২ আগস্ট (বৃহস্পতিবার) দিবসটি পালিত হবে।
বিবৃতিতে সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, “দেশে মহামারির কারণে সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণার ১৬ মাস পার হলেও খোলার বিষয়ে এখনো কার্যকর কর্মপরিকল্পনা নেওয়া যায়নি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অনলাইনে ক্লাসের চেষ্টা করা হলেও কারিগরি দক্ষতা, নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট সংযোগের অভাবে তা অনেকাংশেই সফল হয়নি। দীর্ঘসময় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকা এবং অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে কর্মরত পরিবারগুলোর আয় কমে যাওয়ায় শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়ার হার উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। এই ক্ষতি পোষাতে বাড়তি যে বিনিয়োগ প্রয়োজন তার জন্য সরকারের আলাদা বরাদ্দ দৃশ্যমান নয়, যা অপরিণামদর্শী।”
ইফতেখারুজ্জামান বলেন, “মহামারির প্রভাবে গত বছরই যুব-বেকারত্বের হার দ্বিগুণ হওয়ার আশঙ্কা করেছি আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও)। ইতিমধ্যে সেটি হয়ে গেছে। কিন্তু তাদের বিষয়ে সরকারের সহায়তা বা তাদের কর্মমুখী করতেও কোনো উদ্যোগ নেই।”
এসব থেকে উত্তরণে ৯ দফা সুপারিশ করেছে টিআইবি-
১. শিক্ষার্থীসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কোভিড-১৯ টিকা দিয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে অতি দ্রুত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহ খুলে দিতে হবে। ২. স্বল্প, মধ্যম ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার মাধ্যমে সকল পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন কার্যক্রম নিশ্চিত করে পরবর্তী স্তরে উত্তরণের ব্যবস্থা নিতে হবে। ৩. ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষে ফিরিয়ে আনতে বিশেষ উদ্যোগ নিতে হবে। ৪. স্বল্প, মধ্যম ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার মাধ্যমে তরুণদের যথাযথ কর্মসংস্থান তৈরি করতে হবে। ৫. তরুণ উদ্যোক্তাদের জন্য প্রণোদনার পাশাপাশি করোনায় যেসব ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প খাত থেকে তরুণেরা কর্মহীন হয়েছে বিশেষ প্রণোদনার মাধ্যমে সেগুলো চালুর উদ্যোগ নিতে হবে। ৬. কারিগরি ও বিশেষ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে বিকল্প পেশার (যেমন আউটসোর্সিং, ফ্রিল্যান্সিং) জন্য কর্মহীন তরুণ বা নতুন গ্র্যাজুয়েটদের প্রস্তুত করতে হবে। ৭. সরকারি-বেসরকারি যেসব চাকরির পরীক্ষা ও নিয়োগ বন্ধ রয়েছে অবিলম্বে সেগুলোর প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে এবং নতুন বিজ্ঞপ্তির ক্ষেত্রে কোভিড মহামারির প্রেক্ষাপট বিবেচনায় যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতার মানদণ্ড নির্ধারণ করতে হবে। ৮. সকল চাকরির নিয়োগ প্রক্রিয়া দুর্নীতিমুক্ত রেখে মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে সমান প্রতিযোগিতা নিশ্চিত করতে হবে। ৯. তরুণ সমাজসহ সকল নাগরিকের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষা ও স্বাধীন মত প্রকাশের সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে। এ জন্য আইনি ও নীতিকাঠামোর প্রয়োজনীয় আমূল সংস্কার করতে হবে।
এনটি