রবিবার, ০৪ মে ২০২৫ ।। ২১ বৈশাখ ১৪৩২ ।। ৬ জিলকদ ১৪৪৬


এক কোটি টাকা জরিমানা আদায় করলো আপিল বিভাগ

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: ‍হাইকোর্টের সঙ্গে প্রতারণার দায়ে এফএমসি০₂ নামে এক কোম্পানির কাছ থেকে এককোটি টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। জরিমানার টাকা দিতে গড়িমসি করলে দেশের সর্বোচ্চ আদালত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের হুঁশিয়ারি দিলে সংশ্লিষ্ট কোম্পানি রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জরিমানার এই কোটি টাকা জমা দেন।

আজ মঙ্গলবার (৭ জুন) প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের তিন বিচারপতির বেঞ্চে এই জরিমানার টাকা জমা দেওয়ার রশিদ দাখিল করা হয়।

এরপরই হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে কোম্পানির করা আবেদনটি নিষ্পত্তি করে দেন আপিল বিভাগ। এর আগে টাকা জমা না দিয়ে সময় চাইলে কোম্পানির আইনজীবীর উদ্দেশে আপিল বিভাগ বলেন, ‘কোর্টকে কি ছেলে খেলা পেয়েছেন? টাকা জমা দিয়ে আসুন। নইলে যেকোনো আদেশের জন্য প্রস্তুত হোন।’

বেঞ্চের অন্য সদস্যরা হলেন, বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম। আদালতে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিনউদ্দিন, খান মোহাম্মদ শামীম আজিজ ও কোম্পানির পক্ষে মো. ওজিউল্লাহ শুনানি করেন।

অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, উচ্চ আদালতের সঙ্গে প্রতারণার দায়ে কোটি টাকা জরিমানার রায় বিচার ব্যবস্থার জন্য মাইলফলক। আমি মনে করি এই রায় সবার জন্য সতর্কবার্তা।

২০১৭ সালে বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরোর (সিআইবি) তালিকায় নাম আসে এফএমসি০₂ লিমিটেড নামক কোম্পানির। ওই রিপোর্ট চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে সিভিল রিভিশন মামলা করেন সংশ্লিষ্ট কোম্পানি ও তার পরিচালকগণ। মামলায় বলা হয়েছে, ঢাকার নিম্ন-আদালত বন্ধ থাকায় সেখানে ঘোষণামূলক মোকদ্দমা করা সম্ভব হয়নি।

এ কারণে হাইকোর্টে সিভিল রিভিশন করা হয়। শুনানি শেষে হাইকোর্ট রুল জারির পাশাপাশি এফএমসি কোম্পানির নাম সিআইবি তালিকায় প্রদর্শন না করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংককে নির্দেশনা দেয়। একইসঙ্গে দুই মাসের মধ্যে ঢাকার পঞ্চম যুগ্ম জেলা জজ আদালতে সংশ্লিষ্ট কোম্পানির ঘোষণামূলক মোকদ্দমাটি দায়ের করতে বলে হাইকোর্ট। কিন্তু ওই মোকদ্দমা চার বছরেও না করে দফায় দফায় নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ হাইকোর্ট থেকে বাড়িয়ে নেয় কোম্পানিটি।

গত বছর রুল শুনানির সময় মামলাটি নন প্রসিকিউশন (মামলা না চালানো) করার জন্য হাইকোর্টে আবেদন করে কোম্পানি। দীর্ঘ চার বছর পর কেন মামলাটি নন প্রসিকিউশন করতে চায় সেই ব্যাপারে কোনো সদুত্তর দিতে পারেনি তারা। এরপরই হাইকোর্ট এ বিষয়ে রায় দিয়ে সংশ্লিষ্ট কোম্পানিকে এক কোটি টাকা জরিমানা করে হাইকোর্ট।

রায়ে বলা হয়, নিম্ন আদালতে মামলা দায়ের না করে হাইকোর্ট থেকে নিষেধাজ্ঞা নিয়ে দফায় দফায় মেয়াদ বাড়িয়ে নেওয়া হয়েছে। যা প্রকারন্তরে আদালতের সঙ্গে প্রতারণার শামিল।

হাইকোর্টের এই জরিমানার রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করা হয়। আপিল বিভাগ থেকেও এই আবেদনটি নন প্রসিকিউশন করার আবেদন জানায় সংশ্লিষ্ট কোম্পানির আইনজীবী। কিন্তু আপিল বিভাগ আবেদনটি না মঞ্জুর করে জরিমানার টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেয়। কিন্তু এই টাকা জমা না দিয়ে বার বার সময় নেওয়ার চেষ্টা করে।

কিন্তু আদালত রবিবারের মধ্যে টাকা জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন। নইলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের হুঁশিয়ারি দেয়। এরপরই এক কোটি টাকার পে-অর্ডার রাষ্ট্রীয় কোষাগারে দাখিল করে তা আদালতকে অবহিত করা হয়। এরপরই কোম্পানির আবেদনটি নিষ্পত্তি করে দেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত।

-এটি


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ