সৌদি আরবের নির্ধারিত কোটা পদ্ধতির কারণে এবারও হজে অংশ নিতে পারছেন না ব্রিটেনের হাজারো মুসলিম। প্রায় ৫০ হাজার আবেদনকারীর মধ্যে হজপালনের সুযোগ পাচ্ছেন মাত্র ৬ হাজার জন। কোটার এই সীমাবদ্ধতার পাশাপাশি নতুন বুকিং অ্যাপ ‘নুসুক’-এর কারণে চরম ভোগান্তির শিকার হজে যেতে আগ্রহী ব্রিটিশ মুসলিমরা। এ কারণে হুমকিতে পড়েছে যুক্তরাজ্যের সাড়ে ১৭ কোটি ডলারের হজ ট্রাভেল ইন্ডাস্ট্রি।
বিশ্বজুড়ে প্রতিবছর হজপালন করেন প্রায় ২০ লাখ ধর্মপ্রাণ মানুষ। তবে সৌদি আরবের নির্ধারিত কোটা পদ্ধতির কারণে চরম উদ্বেগ আর অনিশ্চয়তায় রয়েছেন যুক্তরাজ্যের মুসলিমরা।
যুক্তরাজ্যের আগ্রহী মুসলমানদের হজপালন করতে ১০ বছরের বেশি সময় অপেক্ষা করতে হয়। বর্তমানে হজে যাওয়ার জন্য সৌদি আরবের হজ ও উমরা মন্ত্রণালয় যে পদ্ধতি নির্ধারণ করেছে, সেখানে যুক্তরাজ্যের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে মাত্র ৬ হাজার ৬০০টি কোটা। করোনার আগে দেশটির জন্য কোটা ছিল ২৫ হাজার। কোটা কমিয়ে দেওয়ার কারণে এসব দেশে বসবাসকারী প্রবাসীরা নিজ নিজ দেশ থেকে হজপালন করেন।
চলতি বছর থেকে সৌদি আরব হজ ও উমরা মন্ত্রণালয়ের নুসুক অ্যাপের মাধ্যমে সরাসরি হজ বুকিং প্রক্রিয়া শুরু করেছে। যুক্তরাজ্য থেকে অ্যাপটিতে আবেদন করেছেন প্রায় ৫০ হাজার মুসুল্লি। যদিও কোটা পদ্ধতির কারণে এ বছর মাত্র ৬ হাজার ব্রিটিশ নাগরিক হজ পালনের সুযোগ পাবেন।
২০২১ সালে আদমশুমারির তথ্য বলছে, ব্রিটেনে মুসলিমের সংখ্যা সাড়ে ৬ শতাংশ। ১০ বছরে এই সংখ্যা বেড়েছে ৩৯ লাখ। সে হিসেবে হজে কোটা বাড়ার কথা থাকলেও উল্টো কমেছে। নতুন এই সিদ্ধান্তের কারণে দেশটির ১৭ কোটি ডলারের হজ ট্রাভেল ইন্ডাস্ট্রি হুমকির মুখে।
ইতোমধ্যে অনেকেই গুটিয়ে নিয়েছেন প্রতিষ্ঠান। এ খাতের হাজারো মানুষের কর্মসংস্থান বাঁচাতে সৌদি সরকারের কাছে কোটা বাড়ানোর আহ্বান ব্যবসায়ীদের।
ইস্ট লন্ডনের আল কিবলা ট্রাভেলের এমডি মাহবুবুর রহমান চৌধুরী বলেন, ‘কোটা যেটা আছে সেটা পর্যাপ্ত না। যেকোনো উপায়ে এই কোটা বাড়ানোর দরকার।’
কোটার কারণে বঞ্চিত হওয়া অসংখ্য ব্যক্তি হজে যেতে বেছে নিচ্ছেন ভিন্ন পথ। বাংলাদেশের মতো কোটায় আধিক্য থাকা বিভিন্ন দেশ থেকে নিবন্ধন করে হজে যাচ্ছেন তারা।
হজযাত্রী শাহ আলম বলেন, ‘কোটার মাধ্যমে যেতে হলে আমার দুই তিন বছর লাগবে। তাই এখান থেকে না গিয়ে আমি বাংলাদেশের মাধ্যমে যাওয়ার চেষ্টা করছি।’
এনএইচ/