সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫ ।। ৮ বৈশাখ ১৪৩২ ।। ২৩ শাওয়াল ১৪৪৬


রাম মন্দির উদ্বোধনের পর মুসলিমদের ওপর হামলা বেড়েছে

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার
ফাইল ছবি

মুম্বাইয়ের অলি-গলিতে গাড়ি চালাতেন ২১ বছর বয়সী তরুণ মোহাম্মাদ তারিক। সঙ্গে সে তার বাবার একটি প্রতিষ্ঠানেও কাজ করতেন। কিন্তু মঙ্গলবার দৃশ্যপট পাল্টে যায়।

হিন্দু জাতীয়তাবাদী দলের একটি র‌্যালির কারণে তার গাড়ি রাস্তার মাঝেই থামিয়ে দেয়া হয়। একদল তরুণ এসে তাকে টেনে নিয়ে যায়। ঘুষি, লাথি, থাপ্পড় এবং পতাকার লাঠি ও লোহার চেইন দিয়ে তারিককে পেটায় তারা। আল জাজিরাকে তিনি বলেন, তার ৫৪ বছর বয়সী বাবার নাম আব্দুল হক। এ ঘটনার পর থেকেই তারিকসহ তার পরিবার আতঙ্কে আছে। 

ওই র‌্যালি কয়েকটি ভাগে অনুষ্ঠিত হয়। মূলত তাদের উদ্দেশ্য ছিল মুসলিমদের শায়েস্তা করা। র‌্যালি নিয়ে যাওয়ার সময় তারা ‘ জয় শ্রী রাম’ বলে শ্লোগান দিতে দিতে মুসলিমদের দোকানপাট ও গাড়িতে হামলা চালায়। অন্য একটি দল উচ্চ শব্দে গান বাজাতে বাজাতে এলাকার মসজিদ এবং মুসল্লিদের সামনে দিয়ে যেতে থাকে। ভারতের অধিকাংশ রাজ্যেই ছিল এমন ঘটনা। 

গত সোমবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি উত্তরপ্রদেশের অযোধ্যায় রাম মন্দির উদ্বোধনের পর এ ঘটনা সামনে এলো। মন্দিরটি যে স্থানে নির্মাণ করা হয়েছে সেখানে ১৯৯২ সালের আগে ১৬ শতকের ওপর ছিল বাবরি মসজিদ। ১৯৯২ সালে উগ্র হিন্দুরা মসজিদটি রামের জন্মস্থানে নির্মাণ করা হয়েছে- এমন অভিযোগ তুলে ভেঙে ফেলে। এ ঘটনার পর ভারতজুড়ে হিন্দু-মুসলিমদের মধ্যে দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়ে। এতে ২ হাজার মানুষ প্রাণ হারায়। যার অধিকাংশই মুসলমান।

২০১৪ সালে মোদির দল বিজেপি ক্ষমতায় আসায় পর হিন্দুত্ববাদীর উত্থান নিয়ে যে সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে, অযোধ্যার রাম মন্দির উদ্বোধনের দিনে দেয়া বক্তৃতায় মোদি সে অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেন।

তিনি বলেন, রাম মন্দির কোনো সমস্যা নয়, বরং এটি একটি সমাধান। আমরা আগামী ১ হাজার বছরের জন্য ভারতের ভিত স্থাপন করেছি।

রাম মন্দির উদ্বোধনের পরই ভারতের উত্তর রাজ্য বিহারে একটি কবরস্থানে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়েছে, একজন মুসলিম ব্যক্তিকে নগ্ন করে রাস্তায় হাঁটানো হয়েছে এবং একটি গির্জার ওপর গেরুয়া পতাকা উত্তোলন করা হয়।

৫৪ বছর বয়সী আব্দুল হক বলেন, ছেলেকে নির্যাতন করার পর তাকে নিয়ে যখন পুলিশের কাছে যাচ্ছিলাম, তখন এই শহর আমার কাছে অচেনা মনে হয়েছে। কেউ আমার ছেলেকে উদ্ধার করার জন্য এগিয়ে আসেনি। এটা আমাদের সমাজের জন্য লজ্জার। এটা একটা অন্ধকার শহরে পরিণত হয়েছে।

এনএ/


সম্পর্কিত খবর



সর্বশেষ সংবাদ