রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫ ।। ১৪ বৈশাখ ১৪৩২ ।। ২৯ শাওয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :

দানিশ রহ.-এর টুকরো স্মৃতি

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

সাদ আবদুল্লাহ মামুন

চট্টগ্রাম পটিয়া মাদরাসার দুজন প্রবীণ উস্তাদের একই সময়ে ইন্তেকাল– মাওলানা আবদুল মান্নান দানিশ ও মাওলানা আমিনুল হক রহ.! দুজনই পটিয়ার দীর্ঘকালের উস্তয। বছর দুয়েক আগে পটিয়ায় বড় ধরনের বিশৃঙ্খলা হয় এবং অনেকটা অন্যায়ভাবে মাওলানা ওবায়দুল্লাহ হামযাকে মুহতামিমের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। এর প্রতিবাদে মুরব্বি এ দুই উস্তাদ এবং মাওলানা তহা দানিশ-সহ অনেক উস্তায-ছাত্র মাযলুম মাওলানা ওবায়দুল্লাহ হামযার পক্ষ অবলম্বন করে পটিয়া ত্যাগ করেন।

মাওলানা আবদুল মান্নান দানিশ পরে ঢাকার মিরপুর জামিয়া আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা.-এ এবং তাঁর ছেলে মাওলানা তহা দানিশ ঢাকার মিরপুর মারকাযুল ফাতওয়ায় যোগদান করেন।মাওলানা আমিনুল হক যোগদান করেন মাওলানা ওবায়দুল্লাহ হামযা প্রতিষ্ঠিত জামিয়াতুন নুর চট্টগ্রামে।

সপ্তাহ দুয়েক আগে আমাদের শায়েখ আরেফ বিল্লাহ হযরত মাওলানা শাহ আবদুল মতীন বিন হুসাইন দামাত বারাকাতুহুম (পীর সাহেব, ঢালকানগর ঢাকা) জামিয়া আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. ও মারকাযুল ফাতওয়ায় আগমন করেন। প্রতিষ্ঠান দুটির পরিচালক মুফতি ইয়াহইয়ার দাওয়াতে। সেদিন হযরতজি মূল মজলিসের পর মাওলানা আবদুল মান্নান দানিশ রহ.-সহ উপস্থিত ওলামায়ে কেরামের সঙ্গে প্রসঙ্গক্রমে পটিয়ার মুফতি আজিজুল হক রহ.-এর তাকওয়া-পরহেযগারি ও দীনি খেদমত বিষয়ে আলোচনা করেন। মাওলানা দানিশ রহ. বিশেষভাবে মনোযোগ দিয়ে শোনেন এবং মস্ত খুশি হন। তাঁর চেহারায় তখন মুফতি সাহেব রহ.-কে পাওয়া ও না-পাওয়ার আনন্দ-বেদনার আভা ঢেউ খেলে। আবেগ ও মহব্বতে চোখে জ্বলে ওঠে অন্যরকম দ্যুতি। আমি তাঁর পাশেই দাঁড়ানো। তাঁর খুশির ঝিলিক আমাকেও কিছুটা ছুঁয়ে যায়।

মাওলানা দানিশ রহ.-এর ছেলে মাওলানা তহা দানিশ মারকাযুল ফাতওয়ার হাদিস বিভাগের প্রধান। মেধাবী ও বুদ্ধিদীপ্ত এই আলেমের সঙ্গে কথালাপে সেই রাতে অনেক সময় কাটে; হযরতজির ছোটভাই, ঢাকার জামিয়া সাহবানিয়ার মুহাদ্দিস মাওলানা আবদুর রহিম ও আমার।

মাওলানা আবদুল মান্নান দানিশ রহ. মজলিসের কারণে সেদিন এশার জামাত ধরতে পারেননি। জামাত ছুটে যাওয়ায় তিনি বেশ উদগ্রীব। মজলিসে আগত কয়েকজন বিষয়টি জানতে পেরে বলেন, আমরাও জামাত পাইনি। তিনি তাদের নিয়ে জামাতে নামায পড়ে স্বস্তি লাভ করেন।

মাওলানা দানিশ রহ.-এর সঙ্গে সেদিন সালাম-মুসাফা হয়। হয় খানিকটা সান্নিধ্য লাভও। আমি তাঁকে আগে থেকে চিনতাম। জানতাম তাঁর স্বাধীনচেতা মনোভাব ও আত্মমর্যাদা সম্পর্কেও। তিনি উর্দু ভাষার একজন মশহুর কবি। আল্লাহ তায়ালা তাদের দুজনের কবরকে নূর দ্বারা ভরপুর করে দিন আর আসলাফ-আকাবিরের মতো আমাদের কবুল ও মাকবুল করুন। আমিন।

লেখক: মুদারসি, জামিয়া ইমদাদিয়া মুসলিম বাজার, ঢাকা

এনএইচ/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ