বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫ ।। ৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ ।। ২৪ জিলকদ ১৪৪৬


রাজনৈতিক সরকারের হাতে দ্রুত ক্ষমতা হস্তান্তরের আহ্বান সেনাপ্রধানের

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

দেশে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা, প্রশাসনিক অকার্যকারিতা ও জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে সরকারের সীমিত সক্ষমতা নিয়ে স্পষ্ট অবস্থান জানিয়েছেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। তিনি বলেছেন, দেশের বর্তমান সংকট নিরসনে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে রাজনৈতিক সরকারের কাছে দ্রুত ক্ষমতা হস্তান্তর প্রয়োজন।

গতকাল ঢাকা সেনানিবাসে সেনা কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, বক্তব্যের শুরুতে সেনাপ্রধান দেশের প্রতি দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের জন্য সেনাবাহিনীর সব সদস্যকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, দেশে বর্তমানে একটি অরাজক পরিস্থিতি বিরাজ করছে, যা সময়ের সঙ্গে আরও অবনতির দিকে যাচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও বেসামরিক প্রশাসন কার্যত ভেঙে পড়েছে এবং পুনর্গঠনের সক্ষমতা হারিয়েছে।

সেনাপ্রধান উল্লেখ করেন, দেশের স্থিতিশীলতা রক্ষায় শুধু সেনাবাহিনী এখন পর্যন্ত সংগঠিতভাবে কাজ করে যাচ্ছে। তিনি দাবি করেন, ৫ আগস্টের পর থেকে সেনাবাহিনী যেভাবে নিরলসভাবে কাজ করছে, তা সত্ত্বেও দেশি-বিদেশি কিছু মহল সেনাবাহিনী ও তাকে টার্গেট করছে, যা হতাশাজনক। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন, এসব মহল ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের সুযোগ খুঁজছে।

জাতিসংঘের প্রতিবেদন প্রসঙ্গে সেনাপ্রধান বলেন, জুলাই-আগস্টের প্রতিবেদনে সেনাবাহিনীর বক্তব্য অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। কারণ, জাতিসংঘ সেনাবাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ করতে চাইলেও সরকার সে সুযোগ দেয়নি। তিনি আরও বলেন, সরকার সংস্কারের বিষয়ে কোনো কার্যকর উদ্যোগ নিচ্ছে না এবং সেনাবাহিনীকেও অবহিত করছে না।

মানবিক করিডর ও চট্টগ্রাম বন্দর বিষয়ে সেনাপ্রধান বলেন, এই ধরনের স্পর্শকাতর সিদ্ধান্ত গ্রহণের এখতিয়ার বর্তমান সরকারের নেই। এ বিষয়ে তার বক্তব্য ছিল স্পষ্ট—"দেয়ার উইল বি নো করিডর"।

তিনি আরও বলেন, অর্থনীতি ও শিল্পকারখানা ধ্বংসের পথে; একের পর এক গার্মেন্ট ফ্যাক্টরি বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, অথচ সরকারের কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেই।

সেনাবাহিনী প্রধান বলেন, নয় মাস ধরে তিনি সেনাপ্রধান হিসেবে কার্যত অভিভাবকহীন অবস্থায় রয়েছেন এবং একটি নির্বাচিত সরকারের জন্য রাজনৈতিক নেতৃত্বের দিকে তাকিয়ে আছেন। ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন হওয়া উচিত বলে তিনি মত দেন এবং সেনাবাহিনীকে ব্যারাকে ফিরিয়ে নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন।

বক্তব্যের শেষাংশে তিনি সেনাসদস্যদের দেশপ্রেম, কর্তব্যপরায়ণতা ও ঐক্যের সঙ্গে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, সেনাবাহিনী কখনো দেশের বা জনগণের ক্ষতির কারণ হবে না, এবং কাউকে তেমন কিছু করতেও দেবে না।

এনএইচ/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ