আওয়ার ইসলাম: সাম্প্রতিক মহামারি করোনার প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়ার সময়ে দ্রুত স্বল্প সময়ে ভ্যাকসিন টিকা আমদানি করার সুযোগ গ্রহণ না করে বিলম্বে ভ্যাকসিন পাওয়ার শর্তে ভারতের সাথে সরকারের ভ্যাকসিন চুক্তি করা একটি আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত। এতে জনস্বাস্থ্য ও দেশের স্বার্থ রক্ষার চেয়ে ভারতপ্রীতিপ্রসূত নতজানুর ভারতমুখী পররাষ্ট্রনীতির প্রাধান্য প্রকাশ পেয়েছে।
দেশের জনগণ দেশের স্বার্থবিরোধী আত্মঘাতীমূলক ও ভারতপ্রীতিসুলভ এমন নতজানুর পররাষ্ট্রনীতির পরিবর্তন চায়। জমিয়তের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবের প্রেসসচিব দিদার শফিকের পাঠানো এক বিবৃতিবার্তায় জমিয়তের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব শাইখুল হাদিস মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী এ কথা বলেন।
বিবৃতিতে মাওলানা আফেন্দী বলেন, সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশ, জানুয়ারির শেষ বা ফেব্রুয়ারির প্রথমে ভ্যাকসিন চুক্তি অনুযায়ী ভারত বাংলাদেশকে প্রথম ধাপে ৫০ লাখ সার্স কোভিড ভিটু এ জেড ১২১২ নামক ভ্যাকসিন দেওয়ার কথা। কিন্তু ভারত চুক্তির পর স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, ভারতের জনগণের জন্য টিকা প্রাপ্তি সুনিশ্চিত না করে ভারতের বাহিরে তারা কয়েক মাসের জন্য ভ্যাকসিন রফতানির অনুমোদন দিবে না।
একথার মধ্যদিয়ে ভারত সরকার বাংলাদেশ সরকারকে ভ্যাকসিন দেওয়ার ক্ষেত্রে ভ্যাকসিন চুক্তির শর্তকে মুটেই আমলে নেয়নি। মুল্যায়ন করেনি বাংলাদেশকে। ভারতের এমন আচরণ এবং বাংলাদেশের এহেন চুক্তির মধ্যদিয়ে চরমভাবে অবহেলিত হয়েছে বাংলাদেশের সর্বসাধারণ ও জনস্বাস্থ্যের বিষয়টি।
আগামী ১৩ জানুয়ারি থেকে ভারতজুড়ে ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু হলেও বাংলাদেশ পাচ্ছে না আগামী কয়েক মাস। এরই মধ্যে করোনা সংক্রমণ বেড়ে জনস্বাস্থ্য হুমকির সম্মুখীন হতে পারে। তারপরেও নতজানুভাবে ভারতের সাথে বাংলাদেশের স্বার্থবিরোধী ভ্যাকসিন চুক্তি করায় ও বলবৎ রাখায় বাংলাদেশ সরকারের কী স্বার্থ রয়েছে - এ প্রশ্নের জবাব সরকারকেই দিতে হবে।
মাওলানা আফেন্দী বলেন, সরকার সরাসরি ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের সাথে চুক্তি না করে তৃতীয় পক্ষের সাথে চুক্তি করেছে। মাধ্যমের কারণে ভ্যাকসিন টিকার দাম পড়বে বেশি। এটা দেশকে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।
২০২০ সালের আগস্ট মাসে সরাসরি ভ্যাকসিন উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান চীনের সিনোভ্যাকের ভ্যাকসিন আনার জন্য চীনের সাথে বাংলাদেশের প্রাথমিক চুক্তি হলেও পরে তা বাংলাদেশ বাতিল করে দেয়। ভারতের সিরাম ইন্সটিটিউটের উৎপাদনকৃত অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন আনার জন্য বাংলাদেশ সরকার ২০২০ সালের ৫ নভেম্বর ভারতের সাথে একটি ত্রিপক্ষীয় চুক্তি করে। এ চুক্তির মধ্যদিয়ে প্রকাশ পায় সরকারের পররাষ্ট্রনীতি ভারতপ্রীতিতে আবদ্ধ হয়ে পড়েছে। সরকারকে স্বার্থবিরোধী ভারতপ্রীতির এ মোহ কাটিয়ে দেশের স্বার্থ রক্ষায় আরো দূরদর্শিতা ও দায়বদ্ধতার পরিচয় দিতে হবে।
-কেএল