নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের সুপারিশ ও প্রতিবেদন প্রত্যাহার করাসহ চার দফা দাবি জানিয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ইসলামী ছাত্রীসংস্থা। বুধবার (২১ মে) দুপুর ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে আয়োজিত এক প্রতিবাদ কর্মসূচি থেকে এ দাবি জানানো হয়। এ সময় তারা ‘নারীর ডাকে মৈত্রী যাত্রা’-এর বিরুদ্ধেও প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
তাদের বাকি তিন দফা দাবি হলো, ধর্ম, সংস্কৃতি ও জনমতকে অবজ্ঞা করে গঠিত বর্তমান নারীবিষয়ক কমিশন বাতিল করে ধর্মীয় ও সামাজিক বাস্তবতায় বিশ্বাসী প্রতিনিধিদের নিয়ে কমিশন পুনর্গঠন, পতিতাবৃত্তি নির্মুলের কার্যকর ব্যবস্থা নিয়ে সংশ্লিষ্ট নারীদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা এবং ধর্মীয় বিধানসমূহকে সংবিধানের আলোকে রক্ষা করে নারী উন্নয়নের একটি ভারসাম্যমূলক রূপরেখা প্রণয়ন করতে হবে।
কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীরা ‘নারী-পুরুষ একে অন্যের প্রতিদ্বন্দ্বী নয়, সহযোগী’, ‘সে নো টু এলজিবিটিকিউ এজেন্ডা’, ‘পতিতাবৃত্তিকে না বলুন’, ‘নারী পুরুষ বাইনারি এ শর্তে দেশ গড়ি’, ‘যৌন কর্মীদের স্বীকৃতি দান মায়ের জাতির অপমান’, ‘সমতার নামে নারীত্বের বিকৃতি চলবে না’ প্রভৃতি লেখা সম্বলিত প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন।
প্রতিবাদ কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন, সম্প্রতি নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের পক্ষ থেকে সরকারের কাছে একটি প্রতিবেদন ও সুপারিশমালা জমা দেওয়া হয়েছে। এটি দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের ধর্মীয় বিশ্বাস, পারিবারিক মূল্যবোধ এবং ঐতিহ্যের ওপর সরাসরি আঘাত হানে।
এটি নারী উন্নয়নের নামে একটি মতাদর্শিক ও পশ্চিম অনুকরণভিত্তিক আগ্রাসন ছাড়া কিছুই নয়। এ ছাড়া নারী সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন নিয়ে বিভিন্ন মহলে সমালোচনার পর ‘নারীর ডাকে মৈত্রী যাত্রার’ নামে নতুন নাটক শুরু করে তারা। আমরা এ যাত্রা ঘৃণ্যভরে প্রত্যাখ্যান করছি।
সংগঠনটির প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক দাবি করে এক শিক্ষার্থী বলেন, নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবনাগুলো আমাদের ধর্ম, ইসলাম, জাতিসত্ত্বা তথা নারীদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হয়ে উঠেছে। সেখানে নারীদের মর্যাদা খর্ব করা হয়েছে। এখানে স্বাধীনতার নামে এমন কিছু প্রস্তাবনা উল্লেখ করেছে, যা আমাদের পারিবারিক কলহ বা দ্বন্দ্বকে আরও বাড়িয়ে তুলবে।
কিছু প্রস্তাবনায় তারা সমকামীতা এবং পতিতাবৃত্তিকে প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করছেন। তবে ‘এলজিবিটিকিউ’ বা ‘ট্রান্সজেন্ডার’ মতবাদ আমাদের মানব সভ্যতার জন্য বিধ্বংসী একটা মতবাদ। এটি আমাদের সমাজ ও পরিবারকে ধ্বংস করে দেবে।
নাম প্রকাশ না করে দপ্তর ও পাঠাগারবিষয়ক সম্পাদক পরিচয় দিয়ে আরেক শিক্ষার্থী বলেন, নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের সুপারিশ ও প্রতিবেদন অবিলম্বে বাতিল করতে হবে। কারণ এ কমিশনের প্রস্তাবনাগুলো আমাদের সংখ্যাগরিষ্ঠ নারীদের প্রতিনিধিত্ব করে না। এখানে বেশকিছু বিতর্কিত প্রস্তাবনা এসেছে যেগুলো পুরোপুরি ইসলামের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এগুলো যদি একজন মুসলিম বিশ্বাস করে তাহলে সে আর মুসলিম থাকবে না।
এসএকে/