সোমবার, ০৪ আগস্ট ২০২৫ ।। ২০ শ্রাবণ ১৪৩২ ।। ১০ সফর ১৪৪৭

শিরোনাম :
ইসলামি দলগুলোর ঐক্য-সমঝোতা কতদূর? গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে খেলাফত মজলিস ঢাকা মহানগরী উত্তর-এর সমাবেশ  আদর্শিক বিরোধে গণ-অভ্যুত্থানে কারো অবদান অস্বীকার করা উচিত নয় : মাহফুজ আলম ইসলামি চার রাজনৈতিক দলের লিয়াঁজো কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত ‘স্বৈরতন্ত্র ও স্বৈরতান্ত্রিক বন্দোবস্তের স্থায়ী বিলোপের জন্য ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে’ মোবাইলে লাউডস্পিকারে কথা বলা; ইসলাম কি বলে: শায়খ আহমদুল্লাহ জুলাই গণঅভ্যুত্থান ছিল দুঃশাসনের বিরুদ্ধে জনতার বিস্ফোরণ: রাষ্ট্রপতি মাহাথির মোহাম্মদের সঙ্গে ড. শোয়াইব আহমদের সৌজন্য সাক্ষাৎ ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ পাঠ করবেন প্রধান উপদেষ্টা সব ধরনের দূষণ রোধে আলেম-ওলামার সহযোগিতা চায় সরকার

তোমাদের জন্য শুভ কামনা!


নিউজ ডেস্ক

নিউজ ডেস্ক
শেয়ার
ছবি : সংগৃহীত

সৌদি আরবের মক্কায় অনুষ্ঠিত হয়ে গেল বিশ্বের সবচেয়ে বড় আন্তর্জাতিক কুরআন প্রতিযোগিতা।দেশটিতে ৪৩ বছর ধরে চলমান এই প্রতিযোগিতাকে কুরআনের সবচেয়ে বড় আসর জ্ঞান করা হয়।এবারের প্রতিযোগিতায় বিশ্বের ১১৭টি দেশ থেকে ১৬৬ প্রতিযোগী এতে অংশ নেন।

শুধু প্রতিযোগিতা বলে নয়, পবিত্র মক্কা-মদিনার মাটির সঙ্গে রয়েছে বিশ্ব মুসলিমের আত্মিক সম্পর্ক। সেই দেশে আবারো কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখেছে বাংলাদেশের দুই হাফেজ।

স্থানীয় সময় বুধবার (৬ সেপ্টেম্বর) এশার নামাজের পর বর্ণাঢ্য আয়োজনের মাধ্যমে সৌদি আরবের বাদশাহ সালমানের পক্ষ থেকে এই প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার দিয়েছেন মক্কার ডেপুটি গভর্নর প্রিন্স বদর বিন সুলতান।

প্রতিযোগিতার পূর্ণ কুরআন হিফজ বিভাগে তৃতীয় স্থান অধিকার করেছে ফয়সাল আহমেদ। পুরস্কার হিসেবে সে পেয়েছে এক লাখ ৮০ হাজার সৌদি রিয়াল (প্রায় ৫২ লাখ ৬২ হাজার ৫৭৯ টাকা) ও সম্মাননা পদক। প্রতিযোগিতার চতুর্থ বিভাগে চতুর্থ স্থান অর্জন করেছে মো. মুশফিকুর রহমান। পুরস্কার হিসেবে সে পেয়েছে এক লাখ ২০ হাজার সৌদি রিয়াল (প্রায় ৩৫ লাখ ৮ হাজার ৩৮৬ টাকা) ও সম্মাননা পদক।

হাফেজ ফয়সাল আহমেদ রাজধানীর মারকাজুত তাহফিজ ইন্টারন্যাশনাল মাদরাসায় পড়াশোনা করেছে। তার বাড়ি ব্রাক্ষণবাড়িয়ায়। হাফেজ ফয়সাল চলতি বছরের মার্চ মাসে লিবিয়ায় অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় স্থান লাভ করেন তিনি। সে পূর্ণ কুরআন হিফজ বিভাগে অংশ নিয়েছে।

অপর প্রতিযোগী মো. মুশফিকুর রহমান পবিত্র কোরআনের ১৫ পারা হিফজ বিভাগে অংশ নিয়েছে। সে কক্সবাজারের মা’হাদ আন-নিবরাসে কুরআন হিফজ সম্পন্ন করেছে। সে দেশের জনপ্রিয় স্যাটেলাইট চ্যানেল চ্যানেল টোয়েন্টিফোর ও নিউজ টোয়েন্টিফোর কর্তৃক আয়োজিত জাতীয় হিফজুল কুরআন প্রতিযোগিতায় যথাক্রমে চ্যাম্পিয়ন ও রানারআপ হয়।

এছাড়াও কক্সবাজার জেলা হুফফাজুল কুরআন সংস্থা কর্তৃক আয়োজিত জেলাভিত্তিক হিফজুল কুরআন প্রতিযোগিতায় একাধিকবার ১ম স্থান অর্জন ও বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ তথা বাংলাদেশ কওমী মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক আয়োজিত কেন্দ্রীয় পরীক্ষায় (২০২২) সারাদেশে ২য় স্থান(ঘ)অর্জন করে।

এ মহতি আসরে আলো ছড়িয়েছেন আরও একজন বাংলাদেশি আলেম। এই আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার বিচারক প্যানেলে প্রথম বারের মতো একজন বাংলাদেশি আলেম দায়িত্ব পালন করেছেন। ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের মুহাদ্দিস হাফেজ মাওলানা ড. ওয়ালীয়ুর রহমান খান এ দায়িত্ব পালন করেন। প্রতিযোগিতার বিচারকার্য যথাযথ পালন করায় অনুষ্ঠানে তাঁকেও বিশেষ সম্মাননা প্রদান করা হয়। তিনি ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের মুহাদ্দিস হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

তাদের জানাই, প্রাণঢালা অভিনন্দন, লাল গোলাপ শুভেচ্ছা, হৃদয় নিংড়ানো ভালবাসা। সবুজে-শ্যামলে ঘেরা বাংলাদেশের লাল-সবুজ পতাকাকে বিশ্বের বুকে তারা তুলে ধরেছে অত্যন্ত সার্থকতার সঙ্গে। তারা স্বপ্ন দেখেছিল, পবিত্র কুরআনের সুমধুর সুর ছড়িয়ে দেবে বিশ্বময়। সে স্বপ্নের সর্বাঙ্গীন সুন্দর কাঠামো তারা নির্মাণ করতে পেরেছে। কুরআনের পাখিদের এই কৃতিত্বকে আমরা স্বীকার করে নিই। আপনাদের সাফল্যকে আমরা গৌরবের স্মারক বলে মনে করি।তাদের জন্য আরো একবার শুভকামনা!

বিশ্বজয়ীদের প্রতি শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বাংলাদেশ কওমি মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের মহাপরিচালক মাওলানা উবায়দুর রহমান খান নদভী।

তিনি মুঠোফোনে আওয়ার ইসলামকে জানান, সারাবিশ্বের মুসলিমদের ভালোবাসার জায়গা মক্কা-মদিনা। সেই দেশের প্রতিযোগিতায় প্রতিবারের মতো এবারও বাংলাদেশী প্রতিযোগিদের সাফল্য আমাদের জন্য গৌরবের। তাদের প্রতি ভালোবাসা এবং অভিনন্দন।এটা যেমন আমাদের জন্য গৌরবের, তেমনি দেশের সব মানুষের জন্য আনন্দের বিষয়। সবাই তাদের জন্য দোয়া করবেন, হাফেজ ফয়সাল ও মুশফিককে আল্লাহ তায়ালার দীনের দাঈ হিসেবে কবুল করুন।

মাওলানা উবায়দুর রহমান খান নদভীর সহোদর হাফেজ মাওলানা ড. ওয়ালীয়ুর রহমান খান আন্তর্জাতিক এ প্রতিযোগিতায় বিচারকের দায়িত্ব পালন করায় তার প্রতিও অভিনন্দন জানান বেফাক মহাপরিচালক।

তিনি বলেন, দেশের একজন আলেম, কুরআনের এতো বড় আসরে বিচারকের দায়িত্ব পালন করেছেন। এটা দেশের জন্য সম্মানের বিষয়। আমি ড. ওয়ালীয়ুর রহমান খানকে অভিনন্দন জানাই। দেশে হিফজ শিক্ষার উৎকর্ষতায় তার অবদান আমরা আজীবন মনে রাখব।

এদিকে বাংলাদেশি এই হাফেজদের বিশ্বজয়ের আনন্দে ভাসছে পুরো সোশ্যাল মিডিয়া। বিভিন্ন পোস্টে হাফেজদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন দেশের খ্যাতিমান আলেম, হাফেজ, লেখক, সাংবাদিক ও সাধারণ মানুষ। এক ফেসবুক পোস্টে হাফেজদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন লেখক ও অনলাইন এক্টিভিস্ট সাইমুম সাদী।

তিনি লিখেন, হাফেজ ফয়সাল আহমদ এবং মুশফিকুর রহমানকে অভিনন্দন, বিশ্ব হিফজুল কুরআন প্রতিযোগিতায় কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখার জন্য। আল্লাহ তোমাদেরকে হিফজুল কুরআনের পাশাপাশি কুরআনি ইলম ও কুরআনি চরিত্রে উন্নীত করুন।

বিশিষ্ট মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ও ইসলামি আলোচক মাওলানা গাজী সানাউল্লাহ রাহমানী লিখেছেন, “আবারো বাংলাদেশেব বিশ্বজয়, আবারো লাল সবুজ পতাকার কোরআনময় বিজয়, আলহামদুলিল্লাহ। সৌদি আরবে অনুষ্ঠিত কিং আবদুল আজিজ আন্তর্জাতিক হিফজুল কুরআন প্রতিযোগিতার ৪৩তম আসরে বাংলাদেশ থেকে অংশগ্রহণকারী দু'জনই কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখেছেন আলহামদুলিল্লাহ।

৩০ পারা গ্রুপে ফয়সাল ৩য় স্থান অধিকার করে জিতেছেন একলক্ষ আশি হাজার সৌদি রিয়াল পুরষ্কার। আর ১৫ পারা গ্রুপে চতুর্থ স্থান অধিকার করে মুশফিক জিতেছেন একলক্ষ বিশ হাজার সৌদি রিয়াল পুরষ্কার। সাথে রয়েছে বিশেষ সম্মাননা। উভয়ের প্রতি অনেক অনেক দোয়া ও প্রাণঢালা অভিনন্দন “

এমআর/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ