ফোনে কথা বলার সময় অনুমতি ছাড়া লাউডস্পিকার ব্যবহার ও কল রেকর্ডিং প্রসঙ্গে প্রখ্যাত ইসলামিক আলোচক শায়খ আহমদুল্লাহ বলেন, বর্তমানে মোবাইল ফোন আমাদের জীবনের অপরিহার্য অংশ হয়ে উঠেছে। কিন্তু এর ব্যবহারেও ইসলামী আদব ও নৈতিকতা রয়েছে, যা অনেকেই অবহেলা করে থাকি।
শায়খ আহমদুল্লাহ মোবাইলে কথা বলার আদব গুরুত্বের সাথে তুলে ধরে বলেন, “কথা বলার সময় অনুমতি না নিয়ে ফোন লাউডস্পিকারে রাখা এবং বিনা অনুমতিতে কল রেকর্ড করা” উচিত নয়। ইসলাম একজন ব্যক্তির গোপনীয়তা রক্ষা করার ওপর গুরুত্ব দেয়।
আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন: "হে মুমিনগণ, তোমরা অধিক অনুমান থেকে দূরে থাক। নিশ্চয় কোন কোন অনুমান তো পাপ। আর তোমরা গোপন বিষয় অনুসন্ধান করো না এবং একে অপরের গীবত করো না। তোমাদের মধ্যে কি কেউ তার মৃত ভাইয়ের গোশ্ত খেতে পছন্দ করবে? তোমরা তো তা অপছন্দই করে থাক। আর তোমরা আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ অধিক তাওবা কবূলকারী, অসীম দয়ালু।"। (সূরা হুজুরাত, আয়াত ১২)
কারও অনুমতি ছাড়া ফোন কল রেকর্ড করা, কিংবা লাউডস্পিকারে কথা শোনানো দ্বারা তার ব্যক্তিগত তথ্য অন্যের কাছে ফাঁস হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে, যা স্পষ্টভাবে গোনাহের শামিল। কলের মাধ্যমে কেউ কোনো ব্যক্তিগত বা গোপনীয় বিষয় বললে তা "আমানত" হিসেবে গণ্য হয়। এটি অনুমতি ছাড়া অন্য কারও সামনে প্রকাশ করা খেয়ানত বলে বিবেচিত হবে।
রাসূলুল্লাহ সা. বলেন: “যখন কেউ তোমার সঙ্গে কিছু বলে এবং সে চারপাশ দেখে নেয় (অর্থাৎ গোপন রাখতে চায়), তখন তা একটি আমানত।” (আবু দাউদ: ৪৮৬৮)
ফোন দিয়ে লাউডস্পিকারে কথা বললে আশেপাশে থাকা মানুষদের বিরক্তি বা অস্বস্তি হতে পারে, যা "ইযা" বা কষ্ট দেওয়া হিসেবে বিবেচিত।
রাসূল সা. বলেন: “মুসলমান সেই ব্যক্তি যার হাত ও মুখ থেকে অন্য মুসলমান নিরাপদ থাকে।” (বুখারি ও মুসলিম)
ফোন রেকর্ডিং বা লাউডস্পিকার ব্যবহার তখনই বৈধ যখন অন্য পক্ষের সম্মতি থাকে। অনুমতি ছাড়া রেকর্ডিং বা অন্যকে শুনানো তাজাসসুস (গোপনে অনুসন্ধান), গিবত বা নামিমা (চোগলখোরি)-তে পরিণত হতে পারে।
সামাজিকভাবেও এটি সমস্যা তৈরি করে। যেমন: পারিবারিক কলহ সৃষ্টি হতে পারে। ব্যক্তির ব্যক্তিত্ব ক্ষুণ্ণ হয় এবং বিশ্বাস ভঙ্গ হয়- যা সমাজে অনাস্থা ও দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করে।
আইএইচ/