সোমবার, ০৪ আগস্ট ২০২৫ ।। ২০ শ্রাবণ ১৪৩২ ।। ১০ সফর ১৪৪৭

শিরোনাম :
ইসলামি দলগুলোর ঐক্য-সমঝোতা কতদূর? গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে খেলাফত মজলিস ঢাকা মহানগরী উত্তর-এর সমাবেশ  আদর্শিক বিরোধে গণ-অভ্যুত্থানে কারো অবদান অস্বীকার করা উচিত নয় : মাহফুজ আলম ইসলামি চার রাজনৈতিক দলের লিয়াঁজো কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত ‘স্বৈরতন্ত্র ও স্বৈরতান্ত্রিক বন্দোবস্তের স্থায়ী বিলোপের জন্য ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে’ মোবাইলে লাউডস্পিকারে কথা বলা; ইসলাম কি বলে: শায়খ আহমদুল্লাহ জুলাই গণঅভ্যুত্থান ছিল দুঃশাসনের বিরুদ্ধে জনতার বিস্ফোরণ: রাষ্ট্রপতি মাহাথির মোহাম্মদের সঙ্গে ড. শোয়াইব আহমদের সৌজন্য সাক্ষাৎ ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ পাঠ করবেন প্রধান উপদেষ্টা সব ধরনের দূষণ রোধে আলেম-ওলামার সহযোগিতা চায় সরকার

কূটনীতিতে একের পর এক সাফল্য তালেবান সরকারের!

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

বিশেষ প্রতিনিধি

২০২১ সালের আগস্ট মাসে আফগানিস্তানে তালেবান যখন পুনরায় ক্ষমতায় আসে তখন আন্তর্জাতিক মহলে তাদের তেমন কোনো গ্রহণযোগ্যতা ছিল না। তবে গত কয়েক বছরে বিশেষ করে ২০২৫ সালে, তালেবান তাদের কূটনৈতিক প্রচেষ্টায় উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করেছে।

যেমন এই অঞ্চলের শক্তিশালী রাষ্ট্র চীন আফগানিস্তানের নিয়োগকৃত রাষ্ট্রদূতকে গ্রহণ করেছে, যা আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি না দিলেও কার্যত একটি কূটনৈতিক সম্পর্কের সূচনা। ২০২৩ সালে চীনা রাষ্ট্রদূত তালেবান রাষ্ট্রদূতের পরিচয়পত্র গ্রহণ করেন। চীন আফগানিস্তানে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছে, বিশেষ করে খনিজ সম্পদ ও অবকাঠামো উন্নয়নে।

আরেক ক্ষমতাশালী রাষ্ট্র রাশিয়া তালেবানকে তাদের সন্ত্রাসী সংগঠনের তালিকা থেকে বাদ দিয়েছে এবং আফগানিস্তানে ইসলামিক স্টেটের (আইসিস-কে) বিরুদ্ধে যৌথ লড়াইয়ের আগ্রহ প্রকাশ করেছে। রাশিয়া তালেবানের সঙ্গে বাণিজ্য ও অবকাঠামো উন্নয়ন নিয়ে আলোচনা করছে, বিশেষ করে গ্যাস ও খনিজ সম্পদ নিয়ে।

ভারত ও তালেবানের মধ্যে সম্পর্ক উন্নতির লক্ষ্যে আলোচনা চলছে। ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে ভারতের বিশেষ দূত আফগানিস্তানে তালেবান নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। এই বৈঠকে বাণিজ্য, মানবিক সহায়তা ও অবকাঠামো উন্নয়ন নিয়ে আলোচনা হয়। ভারত আফগানিস্তানে স্বাস্থ্য ও শরণার্থী পুনর্বাসন খাতে সহায়তা প্রদান করবে।

পাকিস্তান তালিবানের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে সতর্ক অবস্থান নিয়েছে। তালেবান পাকিস্তানের তেহরিক-ই-তালিবান (টিটিপি) সদস্যদের আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে, যা সীমান্তে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে। পাকিস্তান আফগানিস্তানে তালেবান সরকারের বিরুদ্ধে সমালোচনা করেছে, তবে সীমান্ত নিরাপত্তা ও সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলায় সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছে।

এদিকে তালেবান সরকার আফগানিস্তানের অর্থনীতি পুনর্গঠনে কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। যেমন:  অবকাঠামো উন্নয়ন, বিদ্যুৎ উৎপাদন, সড়ক ও সেতু নির্মাণে বিনিয়োগ বৃদ্ধি পেয়েছে।

হেরাত উপত্যকায় সেচ প্রকল্প ও নতুন খাল খননের মাধ্যমে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি করা হয়েছে।

স্বাস্থ্যসেবা সম্প্রসারণ ও টিকা কর্মসূচি চালু করা হয়েছে।

বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে খনিজসম্পদ ও গ্যাস খাতে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।

তবে, বিশ্বব্যাংকের রিপোর্ট অনুযায়ী, আফগানিস্তানের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার এখনো ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে, যেখানে দারিদ্র্য, বেকারত্ব ও সীমিত সম্পদ প্রধান চ্যালেঞ্জ।

তালেবান সরকারের অধীনে নারীদের শিক্ষা ও কর্মক্ষেত্রে প্রবেশে কঠোর বিধিনিষেধ রয়েছে। নারী অধিকার নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগ বৃদ্ধি পাচ্ছে, তবে কিছু দেশ অর্থনৈতিক উন্নয়নকে নারীর স্বাধীনতার পথ হিসেবে দেখছে।

তালেবান সরকার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জনের জন্য রাজনৈতিক সংস্কার, নিরাপত্তা পরিস্থিতি উন্নয়ন ও প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের দিকে মনোনিবেশ করছে। তবে মানবাধিকার পরিস্থিতি ও অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির প্রধান বাধা হিসেবে রয়ে গেছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

সূত্র: মুসলিম মিরর


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ