মাদ্রাসা রেজিস্ট্যান্স ডে উপলক্ষে উত্তরবঙ্গ কওমী ছাত্র সংসদের উদ্যোগে রাজশাহীর দারুল উলুম মালোপাড়া মাদ্রাসায় “জুলাই গণঅভ্যুত্থানে কওমী মাদ্রাসার ভূমিকা ও অবদান” শীর্ষক এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার (২১ জুলাই) বিকেল ৩টায় এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন হেফাজতে ইসলাম রাজশাহী মহানগরের সভাপতি মুফতি আজমল হোসেন, জেলার সহ-সভাপতি মাওলানা হুসাইন আহমেদ আজমি, বিশিষ্ট লেখক ও ইসলামী চিন্তাবিদ ডা. ইমতিয়াজ আহমেদ ও হেফাজতে ইসলাম রাজশাহীর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুফতি আলী আকবর ফারুকী।
সভায় বক্তারা জুলাই গণঅভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে বলেন, এ আন্দোলন কেবল একটি রাজনৈতিক ঘটনাই ছিল না, বরং এটি ছিল বৈষম্যের বিরুদ্ধে সংগ্রামী চেতনার প্রকাশ। এ চেতনায় কওমী মাদ্রাসার ছাত্র-শিক্ষকদের সক্রিয় অংশগ্রহণ ছিল সাহস, আত্মত্যাগ ও ন্যায়ের পক্ষে অবস্থান নেওয়ার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
বক্তাগণ কওমী অঙ্গনের ভূমিকাকে গণআন্দোলনের অনিবার্য অংশ হিসেবে মূল্যায়ন করেন। তাঁরা বলেন, দেশের ইতিহাসে যেসব আন্দোলন গণমানুষের হৃদয় ছুঁয়ে গেছে, তার প্রতিটিতে আলেম সমাজ ও মাদ্রাসা-সম্পৃক্ত শিক্ষার্থীদের স্পষ্ট অবদান রয়েছে। এসব অবদান যথাযথভাবে জাতীয় ইতিহাসে জায়গা পায়নি—যা দেশ দশ ও সমাজের জন্য ক্ষতির।
আলোচনার ধারাবাহিকতায় বক্তারা বর্তমান সময়ে কওমি শিক্ষাব্যবস্থার মুখোমুখি চ্যালেঞ্জগুলোর দিকেও আলোকপাত করেন। স্বীকৃতির পরেও নানামুখী অবহেলা, বাজেটহীনতা ও পরিকল্পনার অভাব—সবই কওমী শিক্ষাকে এগিয়ে যেতে বাধা দিচ্ছে। তবে একইসঙ্গে বক্তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, যুগোপযোগী প্রস্তুতি, শিক্ষার গুণগত উন্নয়ন এবং নৈতিক নেতৃত্ব বিকাশের মাধ্যমে কওমী শিক্ষাব্যবস্থা জাতির ভবিষ্যৎ গঠনে বড় ভূমিকা রাখতে পারে।
সভায় ভবিষ্যৎ করণীয় নিয়েও গুরুত্বপূর্ণ মত উঠে আসে। বক্তারা বলেন, কওমী ছাত্রসমাজকে শুধু ধর্মীয় জ্ঞানেই নয়, বরং সামাজিক নেতৃত্ব, চিন্তার সাহস এবং দায়িত্বশীল নাগরিকত্বেও প্রস্তুত হতে হবে। জাতীয় সংকটে তারা যেন মাথা তুলে দাঁড়াতে পারে, সেই মানসিকতা গড়তে হবে।
উত্তরবঙ্গ কওমি ছাত্র সংসদের সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আশফাক ত্বহা বলেন,“জুলাই গণঅভ্যুত্থানে কওমি মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অবদান ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। এই আয়োজনের মাধ্যমে আমরা সেই ত্যাগকে জাতীয় পর্যায়ে তুলে ধরতে চাই।”
আলোচকরা আরো বলেন, আজকের এই সভা শুধু অতীত স্মরণে নয়, বরং আত্মপর্যালোচনা ও আগামীর প্রস্তুতির একটি অনুপ্রেরণামূলক মঞ্চ হিসেবে ভূমিকা রাখবে । তরুণ প্রজন্মকে ইতিহাস জানানো, দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করা এবং কওমি সমাজের অবদানকে মর্যাদার সঙ্গে তুলে ধরার এই প্রয়াস উপস্থিত সবার মধ্যেই আশার সঞ্চার করেছে।ৎ
এমএইচ/