ভারতের হরিয়ানায় পশ্চিমবঙ্গের ছয়জন বাংলাভাষী মুসলমান পরিযায়ী শ্রমিককে বাংলাদেশি সন্দেহে আটক করে শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। আটককৃতরা সকলেই মালদা জেলার চাঁচল উপজেলার বাসিন্দা। গুরুগ্রামের সেক্টর-১০ ও বাদশাহপুর থানায় তাদের আটক রাখা হয়েছে বলে জানা গেছে।
আটকদের পরিবার ও একটি পরিযায়ী শ্রমিক সংগঠনের অভিযোগ, পুলিশ তাদের মারধর করছে এবং দিনে মাত্র একবার খাবার দিচ্ছে। এমনকি তাদের দিয়ে থানার বিভিন্ন কাজও করানো হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের শ্রম দপ্তরে অভিযোগ জানানো হয়েছে।
আটকদের একজনের আত্মীয়া মামনি খাতুন বলেন, ‘আমার দুই মামা ও দুই দাদাকে পুলিশ সাদা পোশাকে ধরে নিয়ে যায়। তারা বলে, শুধু আঙুলের ছাপ নিতে হবে, পরে ছেড়ে দেওয়া হবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়নি।’
‘পরিযায়ী শ্রমিক ঐক্য মঞ্চ’-এর সাধারণ সম্পাদক আসিফ ফারুক জানান, ‘আমি নিজে পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলেছি। তারা আটকের কথা স্বীকার করলেও গ্রেফতার দেখায়নি। তবে থানায় তাদের দিয়ে কাজ করানো হচ্ছে, যা সম্পূর্ণ বেআইনি।’
এ বিষয়ে বিবিসি বাদশাহপুর থানার ওসি ও ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও বিস্তারিত কোনো তথ্য মেলেনি।
এদিকে, একই জেলার আরও ছয়জন পরিযায়ী শ্রমিককে সম্প্রতি পাঞ্জাবে গরু জবাইয়ের অভিযোগে আটক করেছে পুলিশ। তাদের বিরুদ্ধেও মিথ্যা মামলার অভিযোগ তুলেছে ঐক্য মঞ্চ।
পশ্চিমবঙ্গ পরিযায়ী কল্যাণ পর্ষদের চেয়ারম্যান ও তৃণমূল এমপি সামিরুল ইসলাম জানান, ‘পাঞ্জাবে আটক ছয়জনকে আইনি সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।’
এ ঘটনার প্রেক্ষিতে সোমবার এক রাজনৈতিক সমাবেশে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী অভিযোগ করেন, ‘বাংলা বললেই বাংলাদেশি সন্দেহে পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দাদের বিভিন্ন রাজ্যে হেনস্তা ও গ্রেফতার করা হচ্ছে। এমনকি কিছুজনকে বাংলাদেশে পুশইনও করা হয়েছে।’
তিনি বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলো ও কেন্দ্রীয় সরকারকে এসব ঘটনার জন্য দায়ী করেন।
এনএইচ/