ভারতের হরিয়ানা রাজ্যে পশ্চিমবঙ্গের ছয়জন বাংলাভাষী মুসলমান শ্রমিককে বাংলাদেশি সন্দেহে আটক করে শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগীদের পরিবার এবং শ্রমিক সংগঠন সূত্রে এ অভিযোগ জানানো হয়েছে। তারা সবাই মালদা জেলার বাসিন্দা এবং হরিয়ানার গুরুগ্রামে ভাসমান শ্রমিক হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছিলেন।
বুধবার (২৩ জুলাই) এ তথ্য জানিয়েছে বিবিসি বাংলা।
‘পরিযায়ী শ্রমিক ঐক্য মঞ্চ’-এর সাধারণ সম্পাদক আসিফ ফারুক জানান, তিনি বাদশাহপুরের অ্যাসিস্ট্যান্ট পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করেছিলেন। পুলিশ নিশ্চিত করেছে যে, ছয়জনকে আটক করা হয়েছে, তবে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়নি বলে দাবি করা হয়েছে।
এই ঘটনায় পশ্চিমবঙ্গের মালদা জেলার যুগ্ম শ্রম কমিশনারের কাছেও লিখিত অভিযোগ জমা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংগঠনের নেতারা।
এ ঘটনাটি সামনে আসে এমন এক সময়, যখন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী বিভিন্ন রাজ্যে বাংলাভাষীদের প্রতি নিপীড়নের অভিযোগ তোলেন।
২৩ জুলাই তৃণমূল কংগ্রেসের এক সমাবেশে তিনি বলেন, বাংলায় কথা বললেই বাংলাদেশি বলে সন্দেহ করা হচ্ছে, হেনস্থা করা হচ্ছে, এমনকি অনেকে গ্রেপ্তার হয়ে যাচ্ছেন।
তিনি আরও বলেন, বাংলা ভাষার ওপর সন্ত্রাস চলছে। এটা মেনে নেওয়া যায় না। যদি বাংলার মানুষকে বাংলা বলার জন্য গ্রেপ্তার করা হয়, তাহলে লড়াই হবে দিল্লির বুকে। দরকার হলে ভাষা আন্দোলন আবার শুরু হবে।
বিবিসির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ, গুজরাট, রাজস্থান, মহারাষ্ট্র ও ওড়িশা—এই রাজ্যগুলোতেও সাম্প্রতিক মাসগুলোতে বহু বাংলাভাষীকে ‘অবৈধ বাংলাদেশি’ হিসেবে সন্দেহ করে আটক করা হয়েছে। অথচ তাদের অধিকাংশই পশ্চিমবঙ্গের নাগরিক।
এছাড়া ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) কর্তৃক বাংলাদেশে ‘পুশ ইন’ করে পাঠানো এবং পরে তাদের পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর ভারতে ফেরত আনার ঘটনাও একাধিকবার ঘটেছে।
এই পরিস্থিতিতে উদ্বেগ বাড়ছে পশ্চিমবঙ্গের অভ্যন্তরেও, বিশেষ করে বাংলাভাষী মুসলমানদের নিরাপত্তা নিয়ে। অধিকারকর্মীরা বলছেন, ভাষা ও ধর্মের ভিত্তিতে এমন বৈষম্যমূলক আচরণ ভারতের সংবিধানবিরোধী এবং মানবাধিকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।
এমএইচ/