সোমবার, ০৪ আগস্ট ২০২৫ ।। ২০ শ্রাবণ ১৪৩২ ।। ১০ সফর ১৪৪৭

শিরোনাম :
ইসলামি দলগুলোর ঐক্য-সমঝোতা কতদূর? গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে খেলাফত মজলিস ঢাকা মহানগরী উত্তর-এর সমাবেশ  আদর্শিক বিরোধে গণ-অভ্যুত্থানে কারো অবদান অস্বীকার করা উচিত নয় : মাহফুজ আলম ইসলামি চার রাজনৈতিক দলের লিয়াঁজো কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত ‘স্বৈরতন্ত্র ও স্বৈরতান্ত্রিক বন্দোবস্তের স্থায়ী বিলোপের জন্য ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে’ মোবাইলে লাউডস্পিকারে কথা বলা; ইসলাম কি বলে: শায়খ আহমদুল্লাহ জুলাই গণঅভ্যুত্থান ছিল দুঃশাসনের বিরুদ্ধে জনতার বিস্ফোরণ: রাষ্ট্রপতি মাহাথির মোহাম্মদের সঙ্গে ড. শোয়াইব আহমদের সৌজন্য সাক্ষাৎ ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ পাঠ করবেন প্রধান উপদেষ্টা সব ধরনের দূষণ রোধে আলেম-ওলামার সহযোগিতা চায় সরকার

খাবারের আশায় ক্যামেরা বিক্রি করছেন গাজার সাংবাদিক!

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

গাজা উপত্যকায় চলমান ইসরায়েলি আগ্রাসনে মানবিক সংকট চরমে পৌঁছেছে। খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি ও ওষুধের মারাত্মক ঘাটতিতে কাতর এ অঞ্চলের সাধারণ মানুষের মতো বিপাকে পড়েছেন সংবাদকর্মীরাও। কেউ কেউ নিজের পেশার উপকরণ বিক্রি করেও সংগ্রাম করছেন বেঁচে থাকার জন্য।

সম্প্রতি গাজাভিত্তিক ফটোসাংবাদিক মোহাম্মদ আবু আউন লিংকডইনে দেওয়া এক হৃদয়বিদারক পোস্টে জানান, তিনি পরিবারকে খাওয়ানোর জন্য নিজের ক্যামেরা ও প্রেস শিল্ড বিক্রি করে দিতে বাধ্য হচ্ছেন।

তিনি লেখেন, "আমি গাজার ফটোজার্নালিস্ট মোহাম্মদ আবু আউন। আমি আমার ক্যামেরা ও প্রেস শিল্ড বিক্রি করতে চাই, যাতে পরিবারকে খাওয়াতে পারি।"

আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন এই সাংবাদিক নিউ ইয়র্ক টাইমস, স্কাই নিউজ ও এবিসি নিউজের মতো প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন। কিন্তু যুদ্ধের ভয়াবহতায় এখন তার হাতে নেই কাজ, পেটে নেই খাবার।

জাতিসংঘ ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক মানবিক সংস্থা গাজায় দুর্ভিক্ষের সরাসরি আশঙ্কা প্রকাশ করেছে। বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (WFP) জানিয়েছে, গাজার অন্তত এক-তৃতীয়াংশ মানুষ টানা কয়েকদিন ধরে খাবার পাচ্ছেন না। প্রায় ৪ লাখ ৭০ হাজার মানুষ চরম খাদ্য সংকটে আছেন।

ইসরায়েল দাবি করছে, সীমান্তে শত শত সাহায্যবাহী ট্রাক প্রস্তুত থাকলেও নিরাপত্তাজনিত কারণে তা বিতরণে দেরি হচ্ছে। কিছু আন্তর্জাতিক সাংবাদিককে কেরেম শালোম সীমান্তে নিয়ে গিয়ে তারা এসব সাহায্যের গুদামও দেখিয়েছে। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন।

জাতিসংঘ জানায়, এপ্রিলে গাজায় দাতব্য রান্নাঘরগুলো যেখানে প্রতিদিন ১০ লাখের বেশি খাবার বিতরণ করত, এখন তা কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ১ লাখ ৬০ হাজারে।

এমন পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক মহল যুদ্ধবিরতির দাবি আরও জোরালো করেছে। জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মের্জ ‘এক্স’-এ লেখেন, “গাজায় যুদ্ধ থামানোর সময় এসেছে।” তিনি ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য ও জার্মানির পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানান।

মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লাউডিয়া শেইনবাম বলেন, “মেক্সিকো এখন শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য কথা ও কাজে একসঙ্গে কাজ করছে।”

অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হামাসকে যুদ্ধবিরতি ভঙ্গের জন্য দায়ী করে ইসরায়েলের চলমান হামলার পক্ষে অবস্থান নেন। তিনি বলেন, “আমার মনে হয়, তারা মরতে চায়। আপনাকে কাজটা শেষ করতেই হবে।”

ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ঘোষণা দেন, ফ্রান্স আনুষ্ঠানিকভাবে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেবে এবং অবিলম্বে যুদ্ধ বন্ধ করে বেসামরিক নাগরিকদের রক্ষা করার আহ্বান জানান।

ইতোমধ্যে জর্ডান গাজায় প্যারাড্রপের মাধ্যমে খাদ্য ও শিশুদের খাবার পাঠানোর জন্য ইসরায়েলের কাছে অনুমতি চেয়েছে, যা বর্তমানে সমন্বয়ের পর্যায়ে রয়েছে।

অবরোধ, যুদ্ধ ও কড়াকড়ি নিরাপত্তা ব্যবস্থায় ঘরবন্দি গাজার মানুষ। বহু সাংবাদিক, মানবিক কর্মী ও সাধারণ মানুষ এখন জীবন বাঁচাতে পেশা ছেড়ে খাবারের খোঁজে পথে নেমেছেন—যেমনটা করেছেন মোহাম্মদ আবু আউন।

এনএইচ/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ