আফগানিস্তানের কৃষি, সেচ ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় (MAIL) জানিয়েছে, গত অর্থবছরে কৃষি, প্রাণিসম্পদ, প্রাকৃতিক সম্পদ এবং ভূমি ব্যবস্থাপনার উন্নয়নে ব্যাপক উদ্যোগ গ্রহণের ফলে ১.৩২২ বিলিয়ন আফগানির বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে।
রোববার আয়োজিত বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে মন্ত্রণালয়ের অর্থ ও প্রশাসন উপমন্ত্রী মোল্লা আগা জান জানান, ১৪০৩ অর্থবছরে ১১টি প্রদেশের কৃষকদের কাছ থেকে মোট ৩৮,৩০০ মেট্রিক টন উদ্বৃত্ত গম সংগ্রহ করা হয়েছে, যার মূল্য প্রায় ১ বিলিয়ন আফগানি। এই উদ্যোগের লক্ষ্য ছিল খরা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা, বাজার মূল্য স্থিতিশীল রাখা এবং কৃষকদের আর্থিক সহায়তা নিশ্চিত করা।
মন্ত্রণালয় আরও জানায়, কৃষকদের মাঝে ৪৩,০০০ মেট্রিক টন উন্নত জাতের গমের বীজ ও রাসায়নিক সার বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ নীতিমালার আওতায় পপি চাষ নিষিদ্ধ করার পর বিকল্প ফসল হিসেবে ৬০০ জেরিব জমিতে জাফরান ও জিরার চাষ শুরু হয়েছে, যার সহায়তায় গ্রিনহাউসও নির্মাণ করা হয়েছে।
MAIL-এর উপমন্ত্রী সদর আজম ওসমানী জানান, পপি চাষ পরিত্যাগকারী কৃষকদের সবজি ও জাফরান চাষে সহায়তা দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, কৃষক ও খামারিদের জন্য ইসলামিক আর্থিক চুক্তি যেমন—মুরাবাহা, মুশারাকা ও মুদারাবার আওতায় প্রায় ১.৫ বিলিয়ন আফগানি বরাদ্দ করা হয়েছে।
খরা ও জলবায়ু পরিবর্তনকে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে চিহ্নিত করে মন্ত্রণালয় জানায়, এর সমাধানে ড্রিপ, স্প্রিংকলার ও বৃষ্টিনির্ভর সেচ ব্যবস্থা পরীক্ষামূলকভাবে বিভিন্ন অঞ্চলে চালু করা হয়েছে। উপমন্ত্রী বাজ মোহাম্মদ ফয়জান জানান, এ পর্যন্ত ১৩৭টি চেক ড্যাম নির্মাণ ও পুনর্বাসন করা হয়েছে। যদিও কান্দাহারের খাকরেজ জেলার একটি ড্যাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তবে অন্যান্যগুলো কার্যকর রয়েছে।
ভূমি অধিগ্রহণ ও পুনর্বাসন বিভাগের পরিচালক আব্দুল আলী ওমারি জানান, সর্বোচ্চ নেতার নির্দেশে ১২টি প্রদেশে ৩০টি নতুন জেলা গঠন করা হয়েছে এবং ইতোমধ্যে তাদের মূল্যায়ন সম্পন্ন হয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও জানানো হয়, চলতি বছরে কৃষি, প্রাণিসম্পদ ও প্রাকৃতিক সম্পদ খাতে বহু নতুন প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে, যার লক্ষ্য হলো—স্বনির্ভরতা অর্জন, জাতীয় অর্থনীতির উন্নয়ন, এবং কৃষক ও দেশীয় উৎপাদন ব্যবস্থাকে সমর্থন দেওয়া।
এনএইচ/