ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাসকে গাজার শাসন ছেড়ে দেওয়া এবং অস্ত্র পরিত্যাগের আহ্বান জানিয়েছে সৌদি আরব, কাতার ও মিশরসহ আরব বিশ্বের ১৭টি দেশ। জাতিসংঘের উদ্যোগে নিউইয়র্কে ফিলিস্তিন বিষয়ক এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে গৃহীত যৌথ ঘোষণাপত্রে এ আহ্বান জানানো হয়। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আরব লীগও এ বিবৃতিকে সমর্থন জানিয়েছে।
দ্বিরাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের লক্ষ্যে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে আয়োজিত তিনদিনব্যাপী এই সম্মেলনে ফ্রান্স ও সৌদি আরব নেতৃত্ব দেয়। দ্বিতীয় দিনে (২৯ জুলাই) সম্মেলন থেকে এক যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করা হয়। এতে কাতার, সৌদি আরব, মিশর, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও কানাডাসহ মোট ১৭টি দেশ স্বাক্ষর করে।
ঘোষণাপত্রে হামাসকে গাজার শাসন থেকে সরে দাঁড়ানো এবং অস্ত্র পরিত্যাগ করার আহ্বান জানানো হয়, যাতে গাজা ও পশ্চিম তীরকে একীভূত করে ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষের (পিএ) অধীনে আনা যায়।
এর পরপরই ফ্রান্সের নেতৃত্বে আরেকটি বিবৃতি প্রকাশিত হয়, যেখানে ১৫টি দেশ ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার ব্যাপারে ইতিবাচক অবস্থান জানায়।
তবে পশ্চিমা বিশ্বের এই উদ্যোগ প্রত্যাখ্যান করেছে ইসরাইল। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ একে ‘হামাসকে উৎসাহ দেওয়া’ উল্লেখ করে বলেন, এ ধরনের স্বীকৃতি হামাসকে আরও কঠোর করে তুলবে এবং জিম্মি মুক্তিতে বিলম্ব ঘটাবে।
এদিকে, গাজার পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। ইসরাইলি বাহিনীর হামলায় গত একদিনেই প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৮০ জন ফিলিস্তিনি, যাদের মধ্যে ৭১ জন ত্রাণ সংগ্রহে গিয়েছিলেন।
হামাস এক বিবৃতিতে এই অবস্থাকে ‘ধীরগতির গণহত্যা’ হিসেবে অভিহিত করে বলেছে, “ইসরাইল খাদ্যকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে এবং ত্রাণকে পরিণত করেছে লুটপাট ও বিশৃঙ্খলার হাতিয়ারে।”
চাপের মুখে ইসরাইল গাজার কিছু অঞ্চলে দিনে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য সামরিক অভিযান বন্ধ রাখার ঘোষণা দেয় এবং ত্রাণবাহী ট্রাক প্রবেশের অনুমতি দেয়। তবে বাস্তবে ত্রাণ সরবরাহ অপ্রতুল এবং অধিকাংশ বাসিন্দা এখনো খাবার থেকে বঞ্চিত।
জাতিসংঘ বলেছে, ইতোমধ্যে ভয়াবহ পুষ্টিহীনতা ও খাদ্য ঘাটতির প্রমাণ মিলেছে। তারা জানিয়েছে, যদি অপুষ্টিজনিত মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে যায়, তবে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘দুর্ভিক্ষ’ ঘোষণা করা হবে।
এনএইচ/